আত্রেয়ী দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ লঞ্চ চলবে, এমন স্বপ্ন তো দেখাই যায় 

আত্রেয়ী দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ লঞ্চ চলবে, এমন স্বপ্ন তো দেখাই যায় 

হ্যাঁ।ঠিক তাই। এমন স্বপ্ন তো দেখাই যায়। নদীপথে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে একদিন লঞ্চ চলবে। যাত্রীবাহী এবং পন্যবাহী-এমন আশা তো করতেই পারি আমরা। যেখানে এই ব্যবস্থা একসময় ছিল এবং তার মাধ্যমে ব্যবসা বানিজ্য হতো পুরোদস্তুর। যদিও সেটা লঞ্চের মাধ্যমে হতো না।হতো বজরার মাধ্যমে।সেই পন্যবাহী ব্যবস্থাপনা যদি ফিরে আসে তাহলে তার থেকে ভালো কিছুই তো হতে পারে না। তার সঙ্গেই যাত্রীবাহী লঞ্চ যদি চলাচল করে ভারত-বাংলাদেশ আত্রেয়ী নদী পথে তাহলে সেটা কম রোমাঞ্চকর হবে না।

সম্প্রতি লঞ্চের মাধ্যমে ঢাকা সদরঘাট থেকে পটুয়াখালি জলপথে যাওয়াতে সেই সম্ভাবনার কথাই মনে এলো। আমাদেরও তো আছে ঐতিহ্যবাহী আত্রেয়ী নদী পথ। সেই পথে দিনাজপুর এবং নওগাঁ তো বেশী দূরে নয়।পুনর্ভবা পথেও দিনাজপুর তো অল্পই।তাহলে কেন আমদানী ও রপ্তানীর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হবে না? ভারত ও বাংলাদেশের উত্তর অংশে উভয়েরই প্রচুর আত্মীয় স্বজন আছে।বাংলাদেশের দিনাজপুর, খয়েরবাড়ি, পঞ্চগড়, হিলি,পাঁচবিবি, জয়পুরহাট, বগুড়া, নওগাঁতে যেমন বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর, বুনিয়াদপুর ইত্যাদি জায়গার অসংখ্য আত্মীয় স্বজন রয়ে গিয়েছে। তেমনি এপারেও প্রচুর রয়েছে। তাদের সাথে সম্পর্ক পুনরায় নিবিড় হতে পারে। আর কে জানে না যে, নদীপথে ভ্রমনের একটা আলাদা সৌন্দর্য আছে।

এবার একনজরে দেখে নেওয়া যাক ভারত-বাংলাদেশ নদী পথে লঞ্চ চললে কোন কোন সম্ভাবনা সামনে আসতে পারে একবার তাতে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। বানিজ্যের নতুন পথ- যদি জলপথে যাতায়াত শুরু হয় তাহলে দুই দেশেরই যা কিছু উদ্বৃত্ত হবে তা দিয়ে আমদানি-রপ্তানী করা যাবে।উদাহরণ হিসাবে পূর্বের নারকেলের কথা বলা যায়। যাত্রী পরিবহণে ও যোগাযোগ ব্যবস্থায়- যদি নদীপথে লঞ্চে যাতায়াত চালু হয় তাহলে একটা নতুন দিকের সূচনা হবে।যোগাযোগ ব্যবস্থার এক নতুন দিকের সূচনা হবে। কর্মসংস্থান হবে- যদি ব্যবসা-বানিজ্য ও যোগাযোগের নতুন পথ খুলে যায় তাহলে কত কর্মসংস্থান হবে ভাবা যাচ্ছে!! অর্থনৈতিক অগ্রগতি হবে- দুই দেশের মধ্যে যদি যাত্রীবাহী ও পন্যবাহী ব্যবস্থাপনা চালু হয় তাহলে বলাইবাহুল্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি হবে। হিংসা ও সামাজিক অপরাধ কমবে- যদি কর্মসংস্থান বাড়ে, তরুণ প্রজন্ম যদি কাজে নিযুক্ত হয় তাহলে সামাজিক অপরাধ কমবে।হিংসা দূর হবে।মৈত্রীর সম্পর্ক স্থাপিত হবে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি – দুই দেশের মধ্যে এই সম্পর্কের মাধ্যমে যদি নতুন দিগন্তের সূচনা হয় তাহলে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি হবে।দুই দেশই নিজেদের আরও উন্নতি ও অগ্রসরতার ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করতে পারবে। আর সর্বোপরি নদীকে ভালো রাখার প্রয়োজনীয়তা ও প্রচেষ্টা- উপরোক্ত সবই যদি করতে হয় তাহলে নদীকে ভালো রাখতে হবে, সুস্থ রাখতে হবে।নাব্যতা বাড়াতে হবে। যেটা আমাদের মূল লক্ষ্য ।

কেমন হবে যদি বালুরঘাট কিংবা গঙ্গারামপুর বা বুনিয়াদপুর একটা নদীবন্দর হয়! দিনাজপুর কিংবা নওগাঁও তাই।কাঁটাতারও পেরোতে হলোনা।আরও বেশী নিজের বলে অনুভূত হবে।সবার আগে দুই দেশকে এটা বুঝতে হবে।তবে একদিন এসব হবেই।এমন স্বপ্ন দেখতে বাধা কোথায়?

নোট: মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

তুহিন শুভ্র মন্ডল এর আরো লেখা 

কাশিয়া খাঁড়ি খনন-একটা উদাহরণ : এবার প্রশাসনিক উদ্যোগ প্রয়োজন

“নদী দিয়ে আগামীদিনে সমস্ত স্তরের মানুষকে জাগাতে চাই”

নদী চেতনা বাড়াতে নদীপাড়ের মেলা আয়োজক কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া উচিত

সংশ্লিষ্ট বিষয়