নদী ও খাঁড়িকে ঘিরে নতুন স্বপ্ন দেখছে জলের ধারের মানুষ

নদী ও খাঁড়িকে ঘিরে নতুন স্বপ্ন দেখছে জলের ধারের মানুষ

দক্ষিণ দিনাজপুর [ কলকাতা, ভারত ] থেকে>>>

ডাঙ্গা খাঁড়ি একটা সম্ভাবনা। এক অনন্ত সম্ভাবনা। যা পরিপার্শ্বকে বদলে দিতে পারে। কিন্ত সম্ভাবনার উল্টো পিঠে থাকে সমস্যা। যা এতদিন ছিল ডাঙ্গা খাঁড়ি। মূর্তিমান এক সমস্যা। কিন্ত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের ভাবনা ও উদ্যোগে তা বর্তমানে নতুন এক সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছে। বুধবার তা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক নিখিল নির্মল, অতিরিক্ত জেলাশাসক কৃত্তিবাস নায়েক প্রমুখ। প্রথমেই বলে রাখা যাক যে ডাঙ্গা খাঁড়ির যোগ আছে জেলার প্রধান নদী আত্রেয়ীর সাথে। সংযোগ এতটাই যে ডাঙ্গা খাঁড়ি আত্রেয়ী খাঁড়ি নামেও পরিচিত। বালুরঘাটের মানুষ স্বপ্ন দেখেছে ও দেখছে এই খাঁড়িকে নিয়ে। যদি একটা সমীক্ষা করা যায় তাহলে দেখা যাবে প্রতি দশজনে আট জন বলবে যে এই খাঁড়িটাকে কত সুন্দর কাজে লাগানো যেত!

আত্রেয়ী নদী ও আত্রেয়ী খাঁড়ি তাদের বুকের অতিরিক্ত জল একে অপরকে দেয়। ফলে বন্যার সময়েও অতিরিক্ত জল ব্যবস্থাপনায় এদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আবার যেহেতু সরাসরি যোগাযোগ তাই মাছেদের অবারিত চলাচল নদী ও খাঁড়িতে। যা দিয়ে মৎস্যজীবীদের উপার্জন সুনিশ্চিত হতো। নৌকা ভাসিয়ে একে অপরের কাছে পৌঁছে যাওয়া যেত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সহজেই। কিন্ত বেশ কিছুদিন থেকে যেন জবরদখল, দূষণের আরেক নাম ছিল ডাঙ্গা বা আত্রেয়ী। কচুরিপানার ইউট্রোফিকেশনে ভর্তি এই খাঁড়ির জলে মাঝে মাঝেই ভেসে উঠত মরা মাছ। মাছের বৈচিত্র্যও কমেছে অনেক। শহরের একটা ডাস্টবিন হয়ে উঠছিল এটা। তাই শহরের মানুষের ও পরিবেশ প্রেমীদের দাবী ছিল সংস্কারের। অবশেষে সেই দাবীপূরণের সম্ভাবনা যার হাত ধরে কিছুদিন আগে শুরু হয়েছে তিনি অতিরিক্ত জেলাশাসক কৃত্তিবাস নায়েক। শহরের উদ্যোগীদের ও রিসোর্স পার্সন দের দিয়ে প্রাথমিক সার্ভে করানোর উদ্যোক্তাও তিনি।

অতিরিক্ত জেলাশাসক কৃত্তিবাস নায়েক জানান” ডাঙ্গা খাঁড়ি রেজুভিনেশনে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। সৌন্দর্যায়নে ও কর্মসংস্থানে একটা নতুন দিক খুলে যাবে । আমরা আশাবাদী।

ভারতবর্ষের লোকসভা ভোটের কারণে কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকলেও আবার জোরকদমে শুরু হয়েছে। বুধবার সেটাই দেখতে গিয়েছিলেন জেলায় সদ্য আগত জেলাশাসক নিখিল নির্মল ও অতিরিক্ত জেলাশাসক কৃত্তিবাস নায়েক। বালুরঘাটের জলের ধারের মানুষ তাই স্বপ্ন দেখছেন আরো একবার এই জলে সুদৃশ্য নৌকা ভাসবে। নৌকাবিহারের বিনোদন যেমন থাকবে তেমনই মাছেদের বৈচিত্র্যে ভরে যাবে জলাশয়। মৎস্যজীবীদের জীবনে নতুন আশার সঞ্চার হবে। নদী ও খাঁড়ি পাড় সেজে উঠবে আলোয়। কর্মব্যস্ততা শেষে মানুষ নিরিবিলিতে একটু পাড় ধরে হাঁটবে। শহর নতুন পরিচয়ের আলোয় উদ্ভাসিত হবে, যার প্রতিফলন হবে জলের গায়ে।

প্রিয় পাঠক আরো পড়তে পারেন…

নদীকে রক্ষা করা বর্তমান সরকারের চ্যালেঞ্জ: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

জল নেই কোথাও, শুকনো নদীখাতের হাহাকার পৌঁছেছে মাটির নীচেও

হায় ইছামতি!

সংশ্লিষ্ট বিষয়