তাড়াইলে নদী ভাঙ্গন, দেখার কেউ নেই!

নদী ভাঙ্গন

নরসুন্দা, সূতী আর ফুলেশ্বরী এই প্রাচীন তিনটি নদ-  নদী বিধৌত জনপদের নাম তাড়াইল। পূর্বদিকে ফুলেশ্বরী, দক্ষিনে নরসুন্দা আর পশ্চিমে সূতী। তালজাংগার জমিদারের স্ত্রী তারামন সুন্দরির নামানুসারে তাড়াইল উপজেলা নদী বেষ্টিত একটি প্রাচীন জনপদের নাম। তিনটি নদীর সঙ্গমস্থল তাড়াইলের পূর্ব দক্ষিনের মাখনাপাড়া নামক গ্রামের সন্মুখে।

মাখনাপাড়া প্রাচীন জেলেপল্লী নামে খ্যাত।এখানে প্রাচীন একটি মন্দির ও একটি শ্মশানও রয়েছে। তিনটি নদীর মিলনস্থলে বর্ষাকালে প্রবল স্রোত বহমান থাকে।ফলে সঙ্গমস্থলের মোহনা থেকে মাটি ও পলল সরে গিয়ে গভীরতা বৃদ্ধি পায়। যার কারনে শুকনো মৌসুমে পানি নিচে নেমে গেলে মাখনাপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় ভূমিধস শুরু হয়।

বিগত দিনে তা স্বাভাবিক থাকলেও এইবার ভূমিধস ও নদীভাঙ্গন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।গত তিন-চার দিন যাবৎ প্রবল ধসে পাঁচটি জেলে পরিবারের বসত ভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। আরো ৫০/৬০ টি পরিবার বিপজ্জনক ভাঙ্গনের কবলে রয়েছে ।

এছাড়াও একটি মন্দির ও একটি শ্মশান হুুমকির মুখে আছে ।প্রশাসনিক ও স্থানীয়ভাবে কোনরকম দুর্যোগ মোকাবেলা বা ত্রাণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।বিষয়টি মিডিয়ার নজরেও আসেনি।

তাড়াইলে নদী ভাঙ্গন, দেখার কেউ নেই!
তাড়াইলে নদী ভাঙ্গন, দেখার কেউ নেই! । ছবি: লেখক ।

যদিও নদীগুলো মৃতপ্রায় ও খরস্রোতাহীন।পাশে ফসলী জমির ক্ষতিতো আছেই।স্থানীয়দের ভাষ্যমতে মৃতপ্রায় নদীর এ ভাংগন এক দৈব্যচক্রও বটে।মুখরোচক গল্পের জন্ম দিচ্ছে। অথচঃ এই বর্মন পাড়া হাজার বছরের বসতি ভিটার সাক্ষ্য দেয়।এই নদীর পাড়েই বাংলায় মংঙ্গলকাব্য অনুবাদ করেছিলেন কবি নারায়নদেব।আত্মীয়সূত্রেপ্রাপ্ত কবি চন্দ্রাবতী তা পরে প্রকাশ করেন।দ্বীজ বংশীয় রাজা বংশীদাস দস্যু কেনারামের খপ্পড়ে পড়েছিল এখানেই।যা নিয়ে পরে রচিত হয় ঐতিহাসিক কেনারামের পালা।তাহলে কি প্রকৃতির বৈরিতা, নাকি মানবসৃষ্ট দৃর্যোগ বালি দস্যুদের কবলে পড়েছে সূতী, নরসুন্দা, ফুলেশ্বরীর তট? নাকি উজানে শহরায়ন নগরায়নের প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে দুইবোন একভাই। বাঁচুক নদীতীরের জনপদ, বাঁচুক প্রকৃতিকণ্যা ফুলেশ্বরী, সূতী নদী ও প্রকৃতিপুত্র নরসুন্দা নদ।তবেই বাঁচবে মানব সভ্যতা।

আরো পড়ুন…

দুই বাংলার যৌথ নদী ব্যবস্থাপনাই নদী সুরক্ষার একমাত্র পথ

নদী বাঁচাও জীবন বাঁচাও – বালুরঘাট কনভেনশন রিপোর্ট

সংশ্লিষ্ট বিষয়