জলঢাকা নদীর গল্পে মিশে আছে গাঠিয়া নদীও

একটা নদী, যে নদী আকাশকে দু’হাত বাড়িয়ে নিজের দিকে আমন্ত্রণ জানায়। একটা নদী, যে নদী জলের সঙ্গেই তার বুকে স্থান দেয় নুড়ি আর ছোট-বড় পাথরকে। একটা নদী, যে নদী অনন্ত শব্দের সঙ্গে বেঁধেছে ঘর একটা নদী, হয়ে নদী নবে রাখে না কে আপন আর কেই বা পর হ্যাঁ, সবাইকেই তার বুকে স্থান দেয় জলঢাকা। যারাই তার বুকে অনন্ত শব্দ ব্রহ্মের সঙ্গে স্থান পেতে চায়। জলঢাকা নদীকে প্রথম দেখি বড় বেলায় কোচবিহারে যাওয়ার পথে ময়নাগুড়ি আর ধুপগুড়ির মাঝে। তারও আগে ছোটবেলায় ভূগোল বইতে জলঢাকায় গড়ে ওঠা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমে জলঢাকার নাম…

সবার বুকের ভিতর একটা নদী থাকুক

স্বপ্ন দেখি দুই দেশে একসাথে নদী- পরিবেশের পাঠশালা গড়ছি

নদীকে কী করে ভালবেসে ফেললাম আমি? কবে থেকে? নিজেকে প্রশ্ন করেছি অনেকবার। নদীর কাছে গিয়েও নিজেকে প্রশ্ন করেছি। আবার কখনও একলা আছি। টুপ করে একটা নদীর ছবি ভেসে উঠলো। কেন? হয়তো একটা শেকড় খুঁজতে চেয়েছি। জানি না। এখন প্রায়শই একটা ছবি দেখতে পাই। আমার বাবা রাজশাহীর (অধুনা নওগাঁ জেলা) আত্রাইয়ের পারে দাঁড়িয়ে আছে নৌকায় পার হয়ে বাড়িতে আসবে বলে। আমি সত্যিই দেখতে পাই। বাবা শুধু বলেছিল খুব ছোট্টবেলায় এক আনা দিয়ে বাবা আত্রাই নদী পার হতো। সাহেবগঞ্জ। ছোটবেলায় সব কিছু হঠাৎ ছেড়ে চলে আসা। এটুকুই বাবা বলতে পেরেছিল। বুকের ভিতর…

‘পদ্মা নদীর মাঝি’ আমাকে পদ্মায় নিয়ে ফেলে

পদ্মা

‘নদীর বই: জলের লেখাজোকা’-রিভার বাংলা’র এই আয়োজনের জন‍্যই পুনরায় পড়লাম কালজয়ী উপন্যাস ‘পদ্মা নদীর মাঝি’। যদি বলি এই প্রথম বার তাও বলা যায়। কেননা এতটা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আগে এই বহুপঠিত উপন‍্যাসটি পড়িনি। পাঠ‍্যপুস্তকে এই উপন‍্যাসের অংশবিশেষ ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ শিরোনামে পড়লেও তা তো সমগ্র ছিল না। ছিল অংশ বিশেষ। তাই তার দু-একটি সংলাপ মনের মধ‍্যে থাকলেও এবার যেন পুরো উপন‍্যাসটিই বুকের ভেতর ঢুকে এল। যদিও এই উপন‍্যাস আশ্রিত চলচ্চিত্র (নির্দেশনা: গৌতম ঘোষ) বেশ কিছু বছর আগে দেখেছি। কিন্তু পাঠ‍্যপুস্তকের পদ্মা নদীর মাঝি, চলচ্চিত্র পদ্মা নদীর মাঝি আর ক’দিন আগের পড়া পদ্মা…

উত্তরের নদী সম্পদ বাঁচাবো, নদীকৃত্য দিবসে এটাই অঙ্গীকার

আগামী ১৭ মার্চ কলকাতার রামলীলা ময়দানে হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে এই প্রথমবার নদী নিয়ে গণ সমাবেশ। সেখানে উত্তরবঙ্গের একজন প্রতিনিধি হিসাবে যে যে বিষয়গুলো তুলে ধরবো তা লেখার আকারে প্রকাশ করছি। উত্তরবঙ্গের দাবী সমূহ যা গণ সমাবেশে তোলা হবে: এক)  আত্রেয়ী নদীর জলবন্টনের প্রশ্নে ভারত-বাংলাদেশ আলোচনার মীমাংসা কবে হবে? এবং আত্রেয়ী নদী দিয়ে ভারত -বাংলাদেশ নৌ-পরিবহন চালানোর পরিকল্পনা বর্তমানে কোথায় দাঁড়িয়ে? দুই) শিলিগুড়িতে মহানন্দা নদীকে বাঁচাতে মহানন্দা অ‍্যাকশন প্ল‍্যান নেওয়া হয়েছিল একসময়। এখন তার কোন খবর নেই। প্রশ্ন হচ্ছে শিলিগুড়ির মহানন্দার দূষণ মোকাবেলায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কবে হবে? পরিকল্পনা কি আছে?…

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নদী ভালবাসা ও নদী নির্ভরতার সামান্য প্রমাণ

আপামর বাঙালির সামনে এক প্রজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে বরাবর শ্রদ্ধার আসনে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই বঙ্গবন্ধুর নদী নিয়েও যে বিশেষ ভাবনা ছিল, তার কথা অনেকেই জানে না। শেখ মুজিবুর রহমান আসলে নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদী ও জলাশয়কে বুকে ধারণ করে চলতেন। তাইতো তিনি অনায়াসে বলতে পারেন নিজেকে ‘পানির দেশের মানুষ’। এভাবে তিনিই বলতে পারেন যার জলের প্রতি ভালবাসা আছে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, সত্যিকারের নদীমাতৃক দেশ বলতে যা বোঝায় তা হল বাংলাদেশ। একেবারে জলের দেশ বলতে যা বোঝায় তাই। ট্রেনে যেতে যেতে দেখেছি দূরে নদী অথবা জলাশয় থাকলেও জমির গোড়ায়…

পুনর্ভবা : আমরা তোমার কথা ভাবি

পুনর্ভবা দক্ষিণ দিনাজপুরের একটা গুরুত্বপূর্ণ নদী। অভিবক্ত দিনাজপুরের অন্যতম প্রধান নদী। নিজেদের নদীকে যেন জানতে পারে, চিনতে পারে পুনর্ভবা নদীকে স্থানীয় বাসিন্দারা সে জন্য একটি পরিকল্পনার সূচনা করলো বালুরঘাটের ইনোভেটিভ গ্রীণ আইডিয়াজ অ্যান্ড লাইনস এবং গঙ্গারামপুরের পুনর্ভবা পরিবেশপ্রেমী সংগঠন। সহযোগিতায় আছে পরিবেশপ্রেমী সংস্থা দিশারী সংকল্প। পুনর্ভবা স্থিত ঐতিহাসিক বাণগড় থেকে এই প্রকল্পের সূচনা কর্মসূচিতে আমার সাথে উপস্থিত ছিলেন গঙ্গারামপুরের পুনর্ভবা পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সম্পাদক সনাতন তামলি, অধ্যাপক ও পুনর্ভবা নদী পাড়ের সন্তান অরূপ সাহা এবং পরিবেশ বন্ধু অধ্যাপক দেবাশিস চাকি। হামজাপুর সীমান্ত দিয়ে যেখানে গঙ্গারামপুর ব্লকে প্রবেশ করেছে পুনর্ভবা নদী সেখান…

বিশ্ব নদী দিবস উদযাপন দিশারী সংকল্পের

দিশারী

বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর>>   বিশ্ব নদী দিবসে আত্রেয়ী সদরঘাটে দিশারী সংকল্প পালন করলো গান, কবিতা ও লোগো প্রকাশে। দিবসটির গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতার কথা বলেন সম্পাদক তুহিন শুভ্র মন্ডল। এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন অমল বসু, সঙ্গীত কুমার দেব, বিজন কৃষ্ণ সরকার, অঞ্জন কুমার দাস, মাম্পি রায়, সনাতন প্রামাণিক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে শপথ নেওয়া হয় নদী রক্ষার। আমরা করবো জয় গান গাওয়া হয়। ইছামতি বাঁচাও আন্দোলন এর লোগো প্রকাশ হয়। ছিলেন ইছামতি পাড়ের বাসিন্দা জুলিয়াস চৌধুরী। আজ ছাত্ররাও ছিল বিশ্ব নদী বাঁচাও দিবস উদযাপনে। নদীকে বাঁচানোর শপথ নেয় তারা- আমরা নদীকে ভালবাসবো আমরা নদীকে…

মেঘালয়ের উমংগট ভারতের সবচেয়ে পরিষ্কার নদী? 

উমংগট

ভারতের সবচেয়ে পরিষ্কার নদী কোনটি? এই প্রশ্নে অনেকেই সরাসরি উত্তর দিতে পারবেন। তারা ভারতীয় হোন বা অন্য দেশের। আবার অনেকের হাত চলে যাবে গুগলের সার্চ ইঞ্জিনে। আমি একটু সাহায্য করি। মনে আছে সোস্যাল মিডিয়াতে একটি স্বচ্ছ কাঁচের উপর নৌকার দৃশ্য? যেটা ভাইরাল হয়েছিল। কি বলছেন? ওটা কাঁচ নয়, জল…। ঠিক বলেছেন ওটাই আসলে মেঘালয়ের উমংগট নদী। মেঘালয়ের সৌন্দর্য এমনিতেই অনির্বচনীয়। তাতে যেন একটা অনিন্দ্যসুন্দর পালক যুক্ত করেছে মেঘালয়ের সীমান্ত গ্রাম ডাউকির এই অপরূপ নদী- উমংগট। উমংগট নদী আসলে খাসিয়া আর জয়ন্তিয়া পাহাড়ের একটা ন্যাচারাল ডিভাইড। যে নদী সীমান্তের ওপারেই থাকা…

রাইন আমার প্রিয় নদী : যেমন আত্রেয়ী আর আন্ধারমানিক ।। তুহিন শুভ্র মন্ডল

রাইন

যে নদীর পারে আমার জন্ম, সেই আত্রেয়ী তো আমার প্রিয় হবেই। আমার মন-প্রাণ তাতে জুড়ে থাকবেই নদীর জলে সাথে মাছের মতো। কিন্ত যে নদী আমি দেখিনি কোনও দিন সে নদী? সে নদীও তো প্রিয় হতে পারে। যেমন রাইন। তাকে যে মনশ্চক্ষে দেখেছি অনেকবার। শিরা উপশিরায় প্রবাহিত তার জলের ছন্দ। আর আন্ধারমানিক? তাকে দেখেছি একটা বৃষ্টি ঝিরঝির মায়াবী সকালে। সূর্যের আলো যার জলে হয়তো আমারই পূর্বপুরুষের ছবি এঁকে রেখেছিল। তাই তার কথা এত মনে হয়। ঢাকার সদরঘাটে বুড়িগঙ্গা থেকে এম ভি, সুন্দরবন লঞ্চে নদী সমূহের জলে ভাসতে ভাসতে,  জলের হাওয়ায় মন…

“নদী সেতু হয়ে আছে আমাদের বন্ধুত্বে” 

বন্ধুত্বে

তাঁদের বন্ধুতা অনেকদিনের। নদীই বেঁধে দিয়েছে বন্ধুতার এই পথ। নদীই দুই বন্ধুর সেতু। ভারতের সাংবাদিকও পরিবেশকর্মী তুহিন শুভ্র মন্ডল এবং নদী বিশেষজ্ঞ সুপ্রতিম কর্মকার। নদীকে কেন্দ্রে রেখে তাদের এই আড্ডায় প্রথম থেকে শেষপর্যন্ত জুড়ে থাকলো নদীই। উঠে এল স্থানীয় ও দেশীয় নদী, নদীর সমস্যা, সমাধানের পথ। কলকাতায় অনুষ্ঠিত এই আড্ডার সবটুকু রিভার বাংলার পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হলো।- সম্পাদক, রিভার বাংলা। তুহিন শুভ্র মন্ডল: সুপ্রতীম, তোমাকে নদীমাতৃক সবুজ শুভেচ্ছা।নদীই আমাদের বন্ধুত্বের সেতু। কি বলো? সুপ্রতিম কর্মকার: তুহিন দা, তুমি আমার একজন নদী বন্ধু। তাই তোমাকেও জানাই একনদী শুভেচ্ছা। তুমি দেখো,…

যে নদীর কাছে মনখারাপ জমা আছে- তুহিন শুভ্র মন্ডল

হলং

নদী ও পরিবেশ বন্ধু লেখকে তুহিন শুভ্র মন্ডলের জন্মদিনে রিভার বাংলার নদীমাতৃক শুভেচ্ছা সেদিনটা মনে পড়ছে প্রিয় হলং নদী যেদিন তোমাকে ছেড়ে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম আর যদি না আসা হয় কোনওদিনও। আর যদি না হয় দেখা! আর একটু ভাল করে দেখে নিই তোমাকে। প্রতিদিনের তোমাকে। মন খারাপের সব গল্প জমা রেখে এসেছিলাম তোমার কাছে। কেন রাখবোনা বলো? ছোটবেলা থেকে না দেখলেও, তোমার সাথে না মিশলেও অনুভবে মিশে গিয়েছিলে তুমি। পাঁচবছরেই হলং তুমি যেন পঞ্চাশের দীর্ঘ চিঠি দিয়েছিলে মনের ঠিকানায়। তাইতো তোমার গায়ে খেলা করা রোদের সংসার এই দেখো আজ পনের বছর…

শেষ পর্যন্ত আত্রেয়ী আর তিস্তার দেখা হয় নি, কথাও না

আত্রেয়ী

এই লেখা আসলে শ্রদ্ধেয় কথাশিল্পী দেবেশ রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন।তাঁর সাথে আমার কোনদিন দেখাও হই নি, কথাও না। তবু আনত শ্রদ্ধা জানাই তাঁকে, নদীকে যিনি বুকে ধারণ করেছিলেন। ছোটবেলা থেকে সম্ভবত ১৯৬৮ সালে তিস্তা নদীর ভয়ংকর বন্যার কথা জেনে আসলেও তার সাথে আমার প্রথম দেখা হয় অনেক পরে।। নব্বই- এর দশকের শেষের দিকে। নদী যে তীব্র অভিঘাত তৈরি করে মনের ভিতর তখন সেটা করেনি। সেটা ছিল শুধু তাকানো। এখন বুঝি সেটা দেখা ছিল না। দেখার দৃষ্টি তো নয়ই। আর তিনি অর্থাৎ দেবেশ রায় তিস্তাকে গভীর ভাবে দেখেছেন না, তিনি শুধু…