এই সময়।এই সময়টাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়? বিশেষ সময়? জরুরী সময়? ভয়ংকর সময়? মহামারি পেরিয়ে অতিমারির সময়? কিভাবে? সব ভাবেই বলা যেতে পারে।আর একভাবে বলা যেতে পারে যে এটা মানব সভ্যতার বড় সঙ্কটের সময়। কিন্ত প্রকৃতির কাছে? আমার নদীর কাছে? এ বড় সুখের সময়, আনন্দের সময়।
এই সময়ে কেমন আছে আমার নদী? আমার মনে হয় ভাল আছে এবং খুব ভাল আছে। এবং যতটুকু অনুভব করেছি এ নদীকে সে এমন ভালই সবসময় থাকতে চায়। করোনা ভাইরাসের ভয়ংকর এই সময়ে মানুষের পদচারণা কম। যান্ত্রিক সভ্যতা আর উন্নয়নের ভুল ব্যাখ্যায় মেতে থাকা মানুষ স্বভাবতই ঘরে আটকে রয়েছে। নদীকে ব্যবহার করে যে সমস্ত কাজ মানুষ করে থাকে তা হচ্ছে কম। নদীতে আবর্জনাও তো মিশছে কম।কারণে অকারণে নদীর বুকে ছুঁড়ে ফেলা নোংরা- আবর্জনার পরিমান প্রায় নেই। নদীতে গাড়ি নামিয়ে যানবাহন ধোওয়ার প্রশ্ন নেই এখন। ফলে সমস্ত ভাবেই নদী দূষিত বা কলুষিত হচ্ছে একদমই কম।
নদীর কাছে গিয়ে দাঁড়ালে মনে হবে যেন ঘন নীল জল।খেলা করছে মাছেরা।ওরা কি লকডাউনকে ধন্যবাদ দিচ্ছে? নিশ্চিত ভাবেই দিচ্ছে।জলের ভিতরে রোদের সাথে লুকোচুরি খেলতে খেলতে অবশ্যই ধন্যবাদ দিচ্ছে করোনা ভাইরাসকে।তারা একটু শ্বাস নিতে পারছে।যেন বলছে ভাল আছি আমরা। আমি নিশ্চিত যে এই সময়ে যদি জলের দূষণমাত্রা পরিমাপ করা হয় তাহলে তা একদম কমের দিকেই পাওয়া যাবে।এই সময়ে কেমন আছে আমার নদী?
আন্তর্জাতিক নদী কৃত্য দিবসে তুহিন শুভ্র মন্ডল এর কবিতা- আত্রেয়ী, ও আমার আত্রেয়ী
চিন্তায় ছিল প্রকৃতিবাদী সংগঠন দিশারী সংকল্প।তাই গতকাল অর্থাৎ তাদের নির্দ্ধারিত নদীর কাছে এসো অনলাইনেই পালন করলো দিশারী সংকল্পের সদস্য, সদস্যারা।খোঁজ নিল একে অপরের কাছে প্রিয় নদীর।তারপর নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিল আগের কিছু আবর্জনা হয়তো জমেছে নদীর কিনারে।তাই লকডাউন পর্ব মিটলে সেখান থেকেই শুরু হবে কাজ।
গতকাল রাতে বৃষ্টি হয়েছে।নদীর পিপাসার্ত বুকে নেমেছে জলের ধারা।স্বাভাবিকভাবেই নদী আছে খুশি।যেন বলছে আমি কিছু কিছু ভাসিয়ে নিয়ে চলে যাবো।বাকিটা তোরা না হয় করিস। দেখতে পাচ্ছি বিকেলের আলো গায়ে মেখে নদীর বুক দিয়ে উড়ে গেল সাদা বুক মাছরাঙা।মাছেরা একটু একটু করে ফিরছে বাড়ির দিকে।কাল সকালে আবার স্বচ্ছ জলে হুটোপুটি করতে হবে যে! শুনতে পাচ্ছি যেন প্রিয় নদী বলছে বেঁচে থাকো লকডাউন।বেঁচে থাকো….
শিলিগুড়ির দুঃখ ফুলেশ্বরী-জোড়াপানি নদী : তুহিন শুভ্র মন্ডল