ভারতীয় উপমহাদেশে নদীকে বলা হয় মা। আমরা নদীর সন্তান। ছোটবেলা থেকে জেনে আসছি নদীমাতৃক সভ্যতার কথা। এটা তো ঠিকই যে, নদীকে কেন্দ্র করেই সভ্যতা- সংস্কৃতির বিকাশ হয়েছিল।
নীল নদ হোক, হোয়াংহো হোক , সিন্ধূ বা গঙ্গা- ভূগোল বইতে তো আমরা কবে থেকেই পড়ছি কেন নদীর পাড়েই, নদীর বুকেই সভ্যতার জন্ম হয়েছিল, শহরের বিকাশ(?) হয়েছিল।
অর্থনীতির একটা বড় অংশ নদীর সাথে যুক্ত। সেদিক থেকে দেখলে নদীর কাছে আমাদের অশেষ ঋণ। কিন্ত আমরা কি সেই ঋণ স্বীকার করি? করি না। তাই যদি করতাম তাহলে নদীকে ঘিরেই পরিকল্পনা নিত সরকার। নদীকে ভাল রাখতো মানুষ। কিন্ত তা তো হয় না। কোনও নদীতে ভাগ নিয়েছে ‘দূষণ’, কোন নদীতে ‘দখল’.. কোন নদীতে জল নেই, কোন নদীতে মাছ। কোন নদী ধুঁকছে, কোন নদী মরছে। কোন নদী হারিয়ে গিয়েছে চিরতরে।
সেদিকে ভাবছি না, সেই নদীগুলিকে খুঁজছিনা। আসলে খুঁজছি না আমাদের পরিচয় কে। আত্মপরিচয়হীন হয়ে বসবাস করছি আমরা। নদী কথা বলতে পারেনা। তাই নদী যে ভৃগোল থেকে ইতিহাস হয়ে যাবে তাতে আর আশ্চর্যের কি! যে কথা বলতে পারে না তার জন্য কেউ ভাবে না। তার জন্য কোন কাজ হয়না। তার কোন ভোটাধিকার নেই। যার ভোটাধিকার নেই। তার কোনই মর্যাদা নেই। তাই নদীর ভোটার কার্ড টাইছি। নদীর পরিচয় চাইছি। চাইছি নদীর অস্তিত্বের স্বীকার করুক সরকার, রাষ্ট্র। দায়িত্ব নিক। যে নদী আমাদের সভ্যতা- সংস্কৃতিকে পুষ্ট করলো তাকে কি করে ভুলে যেতে পারি আমরা?
আরও পড়তে পারেন….
ইছামতী নদী দখলকারীদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
আলী আকবরের নস্টালজিয়া : সৈয়দ কামরুল হাসান