বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে চলমান নদী রক্ষা অভিযানের ষষ্ঠ দিন গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ বক্স ছাড়া সামনে-পেছনের সব স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)।
গতকাল স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ ছোট-বড় ২৯০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বিআইডাব্লিউটিএ। অভিযান চলে লালবাগ, চকবাজার ও কামরাঙ্গীর চর থানার কিল্লার মোড়, শ্মশানঘাট, কয়লাঘাট ও ছাতা মসজিদ এলাকায়। এ নিয়ে গত ২৯ জানুয়ারি থেকে এক হাজার ১৯৮টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার তথ্য দিয়ে বিআইডাব্লিউটিএ
সূত্র জানায়, স্থাপনার সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। ৯০৬টি অবৈধ স্থাপনা তালিকাভুক্ত করে অভিযান শুরু করেছিল সংস্থাটি।
বিআইডাব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিনের নেতৃত্বে এ উচ্ছেদ অভিযান চলছে।
গতকাল নেতৃত্ব দেন বিআইডাব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী অখিল কুমার বিশ্বাস, উপপরিচালক মিজানুর রহমান এবং সহকারী পরিচালক নুর হোসেনসহ পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।
সরেজমিনে জানা যায়, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অভিযান চলে। শুরু হয়েছিল লালবাগ কেল্লার মোড় শ্মশানঘাট এলাকায় রহিমউদ্দিন মিয়ার মালিকানায় থাকা প্লাস্টিকের গুদামঘর উচ্ছেদের মাধ্যমে। এরপর হাজি সেলিমের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ ৫৬/৮ রাজ নারায়ণ ধর রোডের রশিদ মাইজভাণ্ডারীর মালিকানাধীন আশেকান মাইজভাণ্ডারী অ্যাসোসিয়েশনের চারটি পাকা স্থাপনার চারটি ঘর ও রহিম চিশতীর মালিকানাধীন খানকা শরিফের চারটি টিনশেডের টংঘর ভাঙা হয়।
বিআইডাব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ বলছে, ঢাল থেকে ১৫০ ফিট পর্যন্ত জায়গা নদীর। কোনো ব্যক্তিমালিকানা জমি থেকে তাঁরা উচ্ছেদ করছেন না। আগামী মঙ্গলবার থেকে ফের অভিযান চালানো হবে। নদী দখলমুক্ত করার পর অভিযান শেষ হবে।
বিআইডাব্লিউটিএ সূত্র জানিয়েছে, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও ধলেশ্বরী নদ ও নদীতীরের উদ্ধার করা জমিতে ৫০ কিলোমিটার হাঁটার পথ ও সবুজ চত্বর তৈরি করা হবে। বুড়িগঙ্গার পর পর্যায়ক্রমে অন্য নদীগুলোতেও অভিযান চালানো হবে। ধারাবাহিকভাবে এ অভিযান চলবে। নদীর সীমানা পিলারের পরেও ৫০ থেকে ১৫০ ফিট পর্যন্ত উচ্ছেদ করা হবে।
বিআইডাব্লিউটিএ সূত্র মতে, কামরাঙ্গীর চর থেকে পানগাঁও পর্যন্ত বুড়িগঙ্গ নদীর দুই তীরের প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার অংশ অবৈধ দখলে রয়েছে। এর মধ্যে দখলদার রয়েছেন ১৭৫ জন। তাঁরা নদী ও নদী তীরবর্তী প্রায় ৫০ একর জমি দখল করে বহুতল বভনসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। এর মধ্যে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও দখলে জাড়িয়েছেন। সূত্র: কালের কন্ঠ।