শরত এলো
সোনা মেঘে সোনালী সরগম
অন্য রকম সুরে এখন
অন্য উচ্চারণ-
কবি রামচন্দ্র পালের এই অনুভব আমাদেরও। প্রকৃতির রং- রুপই তখন অন্য হয়।বাঙালির বারো মাসে তের পার্বণের হাত ধরে দুর্গা পুজা আসে।যদিও সে শরৎ এখন অতিক্রান্ত ।এখন হেমন্ত ।কালী পুজাও পেরিয়ে এলাম আমরা।
কিন্ত লক্ষ্য করা যায় যে পুজোর মরশুমেই নদীতে ও জলে দূষণের পরিমাণ প্রচুর পরিমাণে বেড়ে যায়। কারণ প্রতিমার গায়ে যে রং থাকে তাতে মিশে থাকে সীসা, ক্রোমিয়াম, হেক্সভ্যালেন্ট ক্রোমিয়াম, lacquer (বার্ণিশ) ইত্যাদি। তা জলে মিশলে জল দূষণ হয়।
বিসর্জনের পরে দীর্ঘক্ষণ বা দীর্ঘদিন প্রতিমা জলে থাকলে জল দূষণের পরিমাণ বেড়ে যায়। প্রতিমার গায়ে থাকা ক্ষতিকর রাসায়নিকে বায়োলজিকাল অক্সিজেন ডিমান্ড বেড়ে যায়।ফলে নষ্ট হয় জল-পরিবেশ।মাছেদের বেঁচে থাকার সংকট তৈরি হয়।মাছেদের হারিয়ে যাওয়ার এই প্রকার দূষণও একটা কারণ বলে আমি মনে করি।
প্রায়শই দেখা যায় নদীতে থাকা প্রতিমা তোলা নিয়ে এখন ও সচেতনতার অভাব দেখা যায়।প্রশাসন, পৌরসভার উদ্যোগে অনেক সময়ই ঢিলেমি দেখা যায়। নদী বান্ধব সংস্থাগুলির সাধ অনেক কিন্ত সাধ্য সীমিত।মিডিয়া এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।নিয়মিত সে ছবি প্রকাশিত হয়।তাতে কাজও হয়। আসলে উৎসব মরসুমে নদী দূষণ মোকাবিলায় আগাম পরিকল্পনা গ্রহণে জোর দিতে হবে।pro-Active হতে হবে।
বিভিন্ন মিউনিসিপাল করপোরেশন কিংবা পৌরসভা পুজা সামগ্রী আগেই পৃথকীকরণের ব্যবস্থা এখন করে।কেউ কেউ প্রতিমা জলে ফেলেই তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন।কেউ নদীতে প্রতিমা ফেলার আগেই জল দিয়ে প্রতিমার রং ধুয়ে দিচ্ছেন।দাবী উঠছে নদীতে না করে পৃথক কোন জলাশয়ে তা করা হোক এবং দ্রুত প্রতিমা তুলে নেওয়া হোক ।দাবী উঠছে বিকল্প বিসর্জনের। উৎসব তো আমাদের প্রাণ।আমাদের উজ্জীবন।কিন্ত তাই বলে তার জন্য দূষণ তৈরির অধিকার আমাদের জন্মায় না।
নদীর কথা ভেবে সীসা মুক্ত রংয়ের সচেতনতা ও উদ্যোগ শুরু হয়েছে।সেখানে সমবেত উদ্যোগ দরকার।নদী বাঁচলে আমরা বাঁচবো।এটা যত দ্রুত বুঝবো ততই আমাদের মঙ্গল ।