নদীমাতৃক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পরিচিত হলেও সেই নদীসমূহ-ই সবচেয়ে বেশি দূষিত হয়ে পড়ছে। সারা দেশের ন্যায় হাওড় অধ্যুষিত কিশোরগঞ্জের নদ- নদীগুলোর এখন আর সেই জৌলুস নেই। কলকারখানার বর্জ্য আর গৃহস্থালি ও পয়োবর্জ্যরে শেষ ঠিকানা যেন এই নদীগুলো।
শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত এককালের নরসুন্দা নদসহ জেলার অন্যান্য সব নদ- নদীগুলো এখন পরিণত হয়েছে আবর্জনা ফেলার খাল হিসেবে। অথচ এসব নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে এ অঞ্চলের শহর ও গঞ্জ। এখন মানুষের ব্যক্তিগত উন্নয়নের স্বার্থে নদ- নদীগুলোকে মেরে ফেলা হচ্ছে। দেখার যেন কেউ নেই। অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদী বাঁচাতে না পারলে পরিবেশে ভয়ানক বিপর্যয় হবে। এই অবস্থায় এখন সময় এসেছে নদীগুলো রক্ষা করতে সচেতন নাগরিক সমাজের এগিয়ে আসা।
সম্প্রতি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন সারা দেশের নদ- নদী দখলদারদের তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকা অনুযায়ী জেলার ছোট-বড় বিস্তৃর্ণ নদীগুলোর অধিকাংশ যারা অবৈধভাবে দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছেন স্থানীয় প্রশাসন সেইসব ১১২ জন ব্যক্তিদের নামীয় তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছেন। এরপর নদী রক্ষা কমিশন ওইসব ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করেছে।
তালিকার তথ্যমতে, জেলার নদীগুলোর অধিকাংশ যারা অবৈধভাবে দখল করেছেন তাদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদরে নরসুন্দা নদী-২১ জন। তাড়াইলে চরতালজাঙ্গা ও সূতী নদী দুইজন, হোসেনপুরে ব্রক্ষপুত্র শাখা নদ ও বগরার খাল ২৭ জন, ভৈরবের রসুলপুর খাল ১৫ জন, করিমগঞ্জে নরসুন্দা নদী, সাকুয়া খাল ও গাবতলী বাজার সংলগ্ন খাল ২০ জন, বাজিতপুরে তেজখালী খাল ১২ জন, ছিলুমখালী খাল-৯ জন, পুরাতন ব্রক্ষপুত্র নদ, মরিষাখালি খাল, মিয়াবাড়ি খাল ও জফরপুর পশ্চিমপাড়া খাল ৮ জন।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী বলেন, জেলার নদীগুলোকে সার্ভে করে অবৈধ দখলদারদের নামীয় তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাজিতপুরে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অচিরেই অন্যান্য স্থানে একইভাবে অবৈধ দখলদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
আরো পড়তে পারেন…
জলপুরুষ রাজেন্দ্র সিং জি কে যেভাবে আমি চিনি
সাংবাদিক, কবি ও আয়কর আইনজীবী, কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ।