শনিবার ২৪ ডিসেম্বর দুপুরে কাউন্দিয়া বাগেরআক্রা শ্মশান ঘাটে তুরাগ পাড়ের জেলে ও বেদে জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আরডিআরসি’র মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার-আরডিআরসি’র চেয়ারম্যান ও নদী গবেষক মোহাম্মদ এজাজ, রিভার বাংলা’র সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ, আরডিআরসি’র জি আই এস এক্সপার্ট মো. সাইফুল ইসলাম রাজু , রিসার্চ এসিস্টেন্ট মাহবুবুর রহমান রবিন, তুরাগ নদী সুরক্ষা কমিটির সদস্য সচিব মামুন অর রশীদ শুভ প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় জেলে ও বেদে সম্পদোয়ের প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। উন্মুক্ত এই সভায় উপস্থিত সকলেই তাদের পেশাগত ও সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেন। তারা বক্তব্যে জানান- বাধ্য হয়ে তাদের অনেককে আদি পেশা পরিবর্তন করতে হচ্ছে। বেদে নারীরা পেশা পরিবর্তন করে কসমেটিক জাতীয় পণ্যের ব্যবসা করছে। বছরের বেশিরভাগ সময় তুরাগ নদীতে পানি না থাকায় জেলেদের বেকার থাকতে হয়। এ সময় তাদের ও পরিবারের সদস্যদের খাদ্য, চিকিৎসাসহ নানাবিদ সঙ্কটের মুখোমুখি হতে হয়। এই অবস্থা থেকে তারা পরিত্রাণ চায়। এই সময় কেউ কেউ শ্মশান ঘাটে সুপেয় পানির সমস্যার কথা তুলে ধরে এর আশু সমাধান চান।
জেলে মো. আল আমিন বলেন- এই তুরাগের পানি আমরা এক সময় খেয়েছি। আর এখন খাওয়া তো দূরের কথা এই পানির গন্ধও নিতে পারি না। আগের মতো মাছও ধরা যায় না। নদীতে মাছের উৎপাদন কমে গেছে অনেক। বছরের পাঁচ মাসেরও বেশি সময় আমরা বেকার থাকি। তখন লোনের টাকা, মাসিক- সাপ্তাহিক কিস্তি পরিশোধ করতে অনেক কষ্ট হয়। আমাদের জীবন কুচুরিপানার মতো।
এ সময় উপস্থিত জেলেরা বলেন- আমরা যারা জেলে কার্ড পেয়েছি তারা সরকার থেকে কোনো সুবিধা পাই না। আবার আমাদের মধ্যে অনেকেই এই কার্ডও পাই নাই।
তাদের বক্তব্য শুনে আরডিআরসি’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন- এই যে বছরের পাঁচ মাসেরও বেশি সময় আপনারা বেকার থাকেন, এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান দরকার। মানুষ বেঁচে থাকার জন্য তার পেশার স্বাধীনতা দরকার, যেমন শিক্ষা, চিকিৎসা আপনাদের অধিকার। এ বিষয়ে আমরা কাজ করবো।বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দিয়ে আপনাদের পাশে থাকার চেষ্টা করবো। আপনাদের সামগ্রিক উন্নয়নই আমাদের উদ্দেশ্য। অতি দ্রুত শ্মশান ঘাটে গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করে খাবার পানির ব্যবস্থা করবো।
তুরাগ নদীর দূষণ নিয়ে মোহাম্মদ এজাজ বলেন- ভুলভাবে সীমানা পিলার প্রতিস্থাপনের মধ্য দিয়ে তুরাগকে আরেক দফা হত্যা করা হয়েছে। এতে অবৈধ অনেক দখলদার বৈধতা পেয়েছে।