কি আশ্চর্য!! একটি মানুষ একশো নয় দিন ধরে শান্তিপূর্ণ উপায়ে প্রতিবাদ করছে। রাষ্ট্রের কানে আওয়াজ পৌঁছাচ্ছে না। একটা ছাব্বিশ বছরের তরুন অনশন করছে গঙ্গা নদী রক্ষার জন্য। রাষ্ট্র উপেক্ষা করছে। এর থেকে বড়ো লজ্জা আর কি হতে পারে? তথাকথিত মিডিয়া এই অনশনের কথা প্রচার করছে না। এটাও একটা চরম হতাশার দিক। অবিরল গঙ্গার দাবীতে কিছুদিন আগে অধ্যাপক জি.ডি.আগরওয়াল মৃত্যুবরণ (নাকি হত্যা?) করলেন। একজন এক নাগারে অনশন করছেন “অবিরল ও নির্মল গঙ্গা”-র দাবীতে। কোন্ মিডিয়া দেখাচ্ছে জানতে চাই। কেন করতে হচ্ছে এই অনশন? গঙ্গা দূষিত, দখলীকৃত। গঙ্গা মৃত্যুপথযাত্রী।অথচ কেন্দ্রীয় সরকার উদাসীন।
একটি দেশের সরকার কতটা অমানবিক আর অবিবেচক হলে এভাবে চুপ থাকতে পারে। তার সাথে কথা বলার প্রয়োজনীয়তা তারা বোধ করছে না।ধিক্কার এমন সরকারকে। কি করে করতে পারে এমন দ্বিচারিতা একটি দেশের নির্বাচিত সরকার! আরও আশ্চর্যের যে বৃহত্তর মানুষ গর্জে উঠছে না।প্রতিবাদে গর্জে উঠছে না কোনও মেইনস্ট্রিম মিডিয়া। কোন রসায়ন এর পিছনে কাজ করছে? কোন এক্সক্লুসিভ স্টোরি না।কোন স্পেশাল কভারেজ না। নদীকর্মী ও পরিবেশকর্মীরা শুধুমাত্র চিৎকার করে চলছে।এটা কি?
একদিকে গঙ্গাকে মা বলা হচ্ছে, আর এভাবে অবহেলা করা হচ্ছে।এটা সভ্যতার সঙ্কট। যে সঙ্কটে ভারতবর্ষ আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা। গঙ্গা ভারতবর্ষের প্রাণ।কিছুদিন আগে তাকে জীবিত সত্ত্বা বলে ঘোষনা করা হয়েছে। তার জন্য পোশাকী কত পরিকল্পনা। অথচ কাজের কাজ কোথায়? কিছুদিন আগে জরুরী প্রশ্ন তুলেছেন জলপুরুষ রাজেন্দ্র সিং।তিনি জোরের সঙ্গে বলছেন যে, গঙ্গার হয়েছে হার্টের রোগ, করা হচ্ছে দাঁতের চিকিৎসা।এই একটি কথাই বোঝায় যে গঙ্গা রক্ষায় আমাদের সরকার কতটা দায়িত্ববান।আসলে প্রকল্পের টাকা ধরা হয় কিন্ত তাতে গঙ্গার অবিরলতা আসছে না।নির্মলতা দূর অস্ত।প্রাণ যাচ্ছে মানুষের।সরকারের ভ্রুক্ষেপ নেই তাতে। আত্মবোধানন্দ।গঙ্গা রক্ষার একটি জ্বলন্ত প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদের আগুনে যেভাবে ধীরে ধীরে জেগে উঠছে নদী ও পরিবেশ রক্ষার সেনানীরা তাতে একদিন গনতন্ত্রে অচলাবস্থা তৈরি হবে না তো! একদিন সব পুড়ে ছারখার হয়ে নতুন পথ নির্মান হবে হয়তো।তারই প্রস্তুতি চলছে ভারতবর্ষে। দেওয়াল লিখন পড়তে পারছে না যে দেশের সরকার, তারা অদূরদর্শী।তারা অন্ধ।কিন্ত অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে?