সিংগুয়া নদীর অবৈধ দখল উচ্ছেদ, দূষণ প্রতিরোধ ও খননের দাবি রিভার বাংলার

কিশোরগঞ্জ: একসময়কার খরস্রোতা সিংগুয়া নদীর অবৈধ দখল উচ্ছেদ, দূষণ প্রতিরোধ ও খননের মাধ্যমে অবাধ পানি প্রবাহ নিশ্চিতের দাবিতে কিশোরগঞ্জে পরিবেশবাদী ও এলাকাবাসী কর্মসূচি পালন করেছেন।

আজ (২ ডিসেম্বর) বুধবার সকালে পুলেরঘাট বাজারে সিংগুয়া নদীরপাড় কিশোরগঞ্জ-ভৈরব হাইওয়ে সড়কে মানববন্ধন ও প্রতিবাদী সভার আয়োজন করে নদী বিষয়ক পত্রিকা রিভার বাংলা।

এতে নদী রক্ষার দাবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে জেলার নদী বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবাদী সংগঠনের লোকজন ছাড়াও সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ অংশ নিয়ে দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। এ সময় সিংগুয়া নদী রক্ষায় সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করে স্বাগত বক্তৃতা করেন কর্মসূচির উদ্যোক্তা লেখক ও রিভার বাংলার সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ।

সমাজকর্মী মো. রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে ও সংস্কৃতিকর্মী জিয়াউল হক বাতেন এর সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে অন্যদের বক্তব্য রাখেন সমাজসেবক-রাজনীতিক আ. রহমান রুমি, কবি গোলাপ আমিন, কটিয়াদী উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি জাকির হোসেন জুয়েল, পাকুন্দিয়ার পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি একরাম হোসেন মানিক, প্রভাষক শরীফুল ইসলাম, পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শরীফুল হাসান রুবেল, কুমরী বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শেখ নজরুল ইসলাম, দর্পণ সাংস্কৃতিক সংঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন খান, সমাজকর্মী মাহবুবুল আলম, শওকত আকবর, তারেক হাসনাত তারেক, মঞ্জুরুল ইসলাম, আফসার আফসারী, সুলতান আফজাল আইয়ূবী, মেহেদী হাসান নওশাত, আকিবুর রহমান প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন রিভার বাংলা’র প্রকাশক তানভীর আহমেদ তুষার।

বক্তারা সিংগুয়া নদী থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, দূষণ প্রতিরোধ ও খননের মাধ্যমে অবাধ পানি প্রবাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নদী পুনঃখননের জন্য সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

প্রসঙ্গত: জেলার পাকুন্দিয়া ও নিকলী উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নদী ছিল সিংগুয়া। এটি পাকুন্দিয়ার এগারসিন্দুরের খামাবিল থেকে উৎপন্ন হয়ে কটিয়াদী, গচিহাটা ও নিকলী হয়ে প্রমত্ত ঘোড়াউত্রা নদীতে মিলেছে। নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪ মাইল। কিন্তু দূষণ, দখল আর অবহেলায় স্মৃতিময় সিংগুয়া বর্তমানে মৃতপ্রায়।একসময় কিশোরগঞ্জের সদর, নিকলী, কটিয়াদী, ও পাকুন্দিয়া উপজেলার মানুষের অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও জীবনযাপনই ছিল সিংগুয়া নদীকে কেন্দ্র করে। বিস্তৃত হাওড়াঞ্চলের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল এই নদী। নৌকাযোগে তখন কালিয়াচাপড়া চিনিকলে আখ পরিবহণ হতো। এ কারণে ‘ত্রিমোহনা’ হিসেবে খ্যাত কালিয়াচাপড়া হয়ে উঠেছিল সত্তর-আশির দশকে পুরো জেলার গুরুত্বপূর্ণ বাজার। অথচ এখন সিংগুয়াকে দেখলে বড়জোর একটি বড় নালা মনে হয়। বর্তমানে দখল আর দূষণে নদীটি প্রায় অস্তিত্ব¡হীন হয়ে পড়েছে।


আরও পড়তে পারেন…

মৃতপ্রায় নদ- নদীগুলোর প্রাণ সঞ্চার হোক- ফয়সাল আহমেদ

হামিদ কায়সার এর গল্প- ডুব

মহাদেব ও ইছামতীর গল্প ।। সুজয় চক্রবর্তী

সংশ্লিষ্ট বিষয়