আবহাওয়া দপ্তর কিছুদিন আগে বলেছে গৌড়বঙ্গে এবার স্বাভাবিকের থেকে পঞ্চাশ শতাংশ কম বৃষ্টি হবে। ক’ দিন যেতে না যেতেই প্রবল বৃষ্টির জেরে গৌড়বঙ্গের অন্যতম দক্ষিণ দিনাজপুরে প্রবল বৃষ্টিপাত লক্ষ্য করা যায়। যার জন্য বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। স্থানীয় আবহাওয়া বিভাগ আরও ক’দিন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বলে জানিয়েছে। ফলে চিন্তার ছাপ নদী পাড়ের মানুষদের। ইতিমধ্যেই আত্রেয়ী, পুনর্ভবা, টাঙ্গন নদীতে জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। তাহলে কি হবে? কিন্ত ঋতু অনুযায়ী এখন বর্ষাকাল। ফলে বৃষ্টি তো হবেই। কিন্ত স্থানীয় পরিবেশ কর্মীদের মতে, বৃষ্টির ধরণটা বদলে গিয়েছে। এখন দু- তিন দিনে সারা মাসের বৃষ্টি…
Author: তুহিন শুভ্র মন্ডল
পেশায় একজন শিক্ষক। ২০০৪ সাল থেকে তিনি নদী ও পরিবেশ রক্ষার কাজে যুক্ত আছেন। নদী ও পরিবেশ বিষয়ে দেশ বিদেশের বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স-এ অংশগ্রহণ করেছেন। ২০১০-১১ সালে নদী ও পরিবেশ রক্ষায় পেয়েছেন আনন্দলোক (আনন্দ বাজার) সেলাম বেঙ্গল পুরস্কার। ২০১৫ সালে পেয়েছেন পথিক সম্মান। আত্রেয়ী বাঁচাও আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ২০১৬ সালে পেয়েছেন কলকাতার ঋক শীর্ষ সম্মান। ২০১৭ সালে নদী ও পরিবেশ রক্ষায় পেয়েছেন বেস্ট এচিভারস অ্যাওয়ার্ড।
নদী ও খাঁড়িকে ঘিরে নতুন স্বপ্ন দেখছে জলের ধারের মানুষ
দক্ষিণ দিনাজপুর [ কলকাতা, ভারত ] থেকে>>> ডাঙ্গা খাঁড়ি একটা সম্ভাবনা। এক অনন্ত সম্ভাবনা। যা পরিপার্শ্বকে বদলে দিতে পারে। কিন্ত সম্ভাবনার উল্টো পিঠে থাকে সমস্যা। যা এতদিন ছিল ডাঙ্গা খাঁড়ি। মূর্তিমান এক সমস্যা। কিন্ত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের ভাবনা ও উদ্যোগে তা বর্তমানে নতুন এক সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছে। বুধবার তা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক নিখিল নির্মল, অতিরিক্ত জেলাশাসক কৃত্তিবাস নায়েক প্রমুখ। প্রথমেই বলে রাখা যাক যে ডাঙ্গা খাঁড়ির যোগ আছে জেলার প্রধান নদী আত্রেয়ীর সাথে। সংযোগ এতটাই যে ডাঙ্গা খাঁড়ি আত্রেয়ী খাঁড়ি নামেও পরিচিত। বালুরঘাটের মানুষ স্বপ্ন দেখেছে ও…
জল নেই কোথাও, শুকনো নদীখাতের হাহাকার পৌঁছেছে মাটির নীচেও
নদী জল ও পরিবেশের কথা বলতে শুরু করেছিলাম দু’হাজার পাঁচ সাল থেকে। তখন উত্তরবঙ্গে পরিবেশের কথা খুব জোরালো ভাবে শুরু হয়নি। পরিবেশপ্রেমী কিছু সংস্থা পরিবেশের কথা বলতে শুরু করেছে। আর আজ দু’হাজার উনিশ সালে শেষে সে কথা ভয়ংকর ভাবে বোঝা যাচ্ছে। কথা মিলে গেলে আনন্দ হওয়া স্বাভাবিক। কিন্ত এখানে তা হওয়ার কথা না। আত্রেয়ীতে এখন হয়তো জল আছে কিছুটা সেটা ব্যতিক্রম। কিন্ত অধিকাংশ নদী? পুনর্ভবা, টাঙ্গন, ইছামতি, শ্রীমতি, মহানন্দা ও অন্য নদীর অবস্থা ভয়ংকর। নদীতে জল থাকে না।ফলে নদীর জল কৃষিকাজে ব্যবহার করার অবস্থা এই মুহুর্তে প্রায় নেই। শুধু জেলা…
আত্রেয়ীর কথা সংসদে তুলবো: জেলা প্রেস ক্লাবে মূখোমুখি সাংসদ
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রেস ক্লাব। ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। বহু ইতিহাস ও ঐতিহ্য আছে এই ক্লাবটির সাথে। আজ বিয়াল্লিশ বছর ধরে সংবাদ পরিবেশনে নির্ভীকতা বজায় রাখাই জেলা প্রেস ক্লাবের বৈশিষ্ট্য । সেই ঐতিহ্যবাহী প্রেস ক্লাবের একটা প্রথা নির্বাচিত সাংসদকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন। সেই জন্য গতকাল রাতে প্রেস ক্লাবের নিজস্ব সভাঘরে সংবর্ধিত হন নব নির্বাচিত সাংসদ ড. সুকান্ত মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী শুভেন্দু সরকার। প্রেস ক্লাবের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি অনুপ রতন মোহান্ত, সম্পাদক শঙ্কর কুমার রায়, বর্ষীয়ান সাংবাদিক পীযূষ কান্তি দেব, রাহুল বাগচী; অন্য সাংবাদিক দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্রীকান্ত ঠাকুর, সুবীর…
সুবর্ণরেণু সুবর্ণরেখা- নদী তীরবর্তী পরিবারের নদী ছন্দিত উপন্যাস
এবছর আনন্দ পুরস্কারে সম্মানিত নলিনী বেরা’র “সুবর্ণরেণু সুবর্ণরেখা” নিয়ে নদী ও পরিবেশ চিন্তক তুহিন শুভ্র মন্ডল এর অনুভবি বিশ্লেষণ। “….. আমাদের গ্রামের উত্তরে নদী সুবর্ণরেখা, তার আগে ‘হুড়ি’, ছোটোখাটো পাহাড়। ওই পাহাড়ে দাঁড়ালেই ‘তল্লাট’ চোখে পড়ে। নদী, নদীজল, নদীবালি…” নদীর প্রসঙ্গ এই ভাবে শুরু করছেন নলিনী বেরা, প্রান্তিক জনপদের কাহিনীকে যিনি বুকে ধারণ করেছেন, উৎস থেকে মোহনায় পৌছানোর পর যখন সামনে দেখেন শান্তি পারাবার তখন যার মনে পড়ে যায় শেকড়ের কথা সেই নলিনী বেরা। নাকি ললিন?! উপন্যাসের ললিন আর নলিনী কি একই? সেই নলিনী যার জন্ম পশ্চিমবঙ্গ- ওড়িশা – বিহার সীমান্তের…
পুনর্ভবা’র ভাঙন: নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে স্কুল, আস্ত একটি গ্রাম
অবাক হচ্ছেন!! মনে করছেন পুনর্ভবা এমন করতে পারে? নদীটাই তো জলই থাকেনা।তাহলে? এবার নীচের ছবিটা দেখুন তো! কি মনে হচ্ছে?চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেন না? তবুও এটাই সত্যি। সাম্প্রতিক কালে যে নদীটা বারবার আলোচনায় উঠে এসেছে তা হলো পুনর্ভবা। একশো ষাট কিলোমিটার দৈর্ঘ্য, তিন থেকে আট কিলোমিটার প্রস্থ এবং গড়ে প্রায় দুই মিটার গভীরতার এই নদীটি গঙ্গারামপুর, তপন সহ চুয়ান্ন কিলোমিটার প্রবাহিত। মহাভারতে, সন্ধ্যাকর নন্দীর রামচরিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উল্লিখিত এই নদীটার বর্তমান অবস্থা খুবই শোচনীয়। বর্ষার দুই মাস ছাড়া যেমন জলই থাকে না এই নদীর। গত কয়েকদিন ধরে পুনর্ভবার সমীক্ষাতে…
নদীর জন্য নবনির্বাচিত সাংসদের কাছে আমরা যা চাই
সদ্য ঘোষিত লোকসভা ভোটের ফলাফলের মাধ্যমে ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় উৎসবের পরিসমাপ্তি হলো। বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে এবার ভোটের অন্যতম ইস্যু ছিল নদী। আরও নির্দিষ্ট করে বললে আত্রেয়ী নদী। বিশেষত তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি প্রার্থী নদীর ইস্যু প্রচারে এনেছেন। এবার বালুরঘাট কেন্দ্রে জয়লাভ করেছেন বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে এর আগের সাংসদ নদীর প্রশ্নে ইতিবাচক ছিলেন। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রাজ্য ও কেন্দ্রে তুলে ধরেছেন। জেলার নদী ও পরিবেশ কর্মীরা নবনির্বাচিত সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের কাছে জেলার নদীর বিষয় গুলি নিয়ে ইতিবাচক সাড়া চান। দাবী গুলি নিম্নরুপ: এক)…
কোপাই নদীর হেরিটেজ মর্যাদার জন্য আবেদন করবো
নদীর কথা বললেই কোন্ কবিতার লাইন সবার মনে আসে বলুন তো! রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আমাদের ছোট নদী। “আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাঁটুজল থাকে” দিয়ে লেখা শুরু করেছেন কবি। (যদিও আমাদের ছোটবেলায় পড়া আঁকে বাঁকের বদলে এখন বাঁকে বাঁকে পাওয়া যায়) বলুন তো কোন্ নদীকে দেখে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন? ঠিক ধরেছেন। কোপাই নদীকে নিয়েই। প্রাণের কোপাই নদীকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথের ‘কোপাই’ নামে একখানি কবিতাও আছে। এখন যখন ফিরে দেখা হচ্ছে সব নদীকে। তখন ফিরে তাকানো যাক কোপাই নদীর দিকে। কেমন আছে কোপাই? তার আগে রবীন্দ্রনাথের নাম দেওয়া এই কোপাই নদী…
বিশ্ব মা দিবস: আমরা কি নদীকে মা বলার যোগ্য ?
গতকাল গেল বিশ্ব মা দিবস। ভারতবর্ষ এবং বাংলাদেশে তো আমরা নদীকে মা বলে থাকি, মা বলে ডাকি। প্রায়শই বলা হয় নদীমাতৃক সভ্যতার প্রসঙ্গ। আর বলা হয় আমরা নদী মায়ের সন্তান। কিন্ত আদৌ কি আমরা নদীকে মা বলার যোগ্য সন্তান ? পুনর্ভবা, ব্রাহ্মণী, টাঙ্গন, ময়ূরাক্ষী, ইছামতি, গঙ্গা যে নদীর দিকেই তাকাই নদী আর নদী রাখিনি। ধূ ধূ মাঠ যেন। নদীর বুকে ক্রিকেট খেলা হচ্ছে।নদীর জলে প্লাস্টিক- আবর্জনা- বর্জ্যের পাহাড়। নদীতে জল রাখতে পারিনি আমরা। আমরা- যারা নাকি নদী মায়ের সন্তান !! আজ এত দিন পরে হঠাৎই কিছু মানুষের মনে হচ্ছে নদী…
নৌকা আর ভাসে কই নদীর জলে? সঙ্কটে নৌকা কারিগররা
সেদিন দেখা হল পরাণ মাঝির সাথে। রিকশা ঠেলে সওয়ারী নিয়ে যাচ্ছে নদী পাড়ে।হাঁক দিলামঃ কি গো! তুমি? উত্তর পেলামঃ এখন আর নৌকা ঠেলি না গো! ব্রীজ হয়ে গেসে। জলও তো নাই। বলতে বলতে বেরিয়ে গেল পরাণ মাঝি। সত্যিই তো আগের মতো তো আর নৌকা চলাচল করেনা।যাত্রী কিংবা পন্য- দুটোতেই নৌকার প্রাধান্য কিংবা কদর কমেছে। উন্নয়ন আর নগরায়নে এক শ্রেণীর মানুষ কাজ হারিয়েছে। রাতের বেলা সিভিক পুলিশের ডিউটি শেষ করে নদী পেরিয়ে পাগলিগঞ্জের ওপারে সোদপুর- বদিহারে যেতে তাই জয়দেব দের আর নৌকা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া মাঝিকে ডাকতে হয়না। ব্রীজ আর রাস্তা…
গঙ্গার জন্য কেন অনশন ভাঙলেন আত্মবোধানন্দ ?
গঙ্গা নদীর জন্য অনশন শুরু করেছিলেন অধ্যাপক গুরুদাস আগরওয়াল যিনি জ্ঞান স্বরুপ সানন্দ নামেও পরিচিত। তাঁর দেখানো পথে গঙ্গা নদীর অবিরলতা ও নির্মলতার দাবীতে গত বছরের চব্বিশে অক্টোবর থেকে হরিদ্বারের মাতৃসদনে অনশন শুরু করেছিলেন ছাব্বিশ বছরের তরুণ। মূলত গঙ্গা নদীর গতিপথ রোধ করে বাঁধ নির্মাণ, অবৈধ পাথর খাদান বন্ধ ও পরিচ্ছন্নতার দাবী ইত্যাদি ছিল অনশনের কারণ।একশো চুরানব্বই দিনের মাথায় সেই অনশন তুলে নিলেন আত্মবোধানন্দ । কিন্ত কেন? কারণ এর আগে একটি নির্দেশ দেওয়ার পর আবার ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গার ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব রঞ্জন মিশ্র লিখিত ভাবে জানিয়েছেন যে গঙ্গার…
এই জয় নদীর পক্ষে লড়াইয়ের জয়
খবরটা এল বিকেল আর সন্ধ্যের মাঝামাঝি সময়ে। সকাল থেকে কর্মব্যস্ততার মাঝে যে সময়ে নতুন খবরেরা আসে ঠিক সেই সময়। আত্মবোধানন্দের অনশনের সংকল্প বৃথা যায়নি। বৃথা যায়নি অধ্যাপক গুরুদাস আগরওয়াল তথা স্বামী সানন্দজির আত্মবলিদানও (নাকি পরিকল্পিত হত্যা?)। সমগ্র ভারতবর্ষ জুড়ে নদী ও পরিবেশ কর্মীরা আত্মবোধানন্দের অনশনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। মনে রাখতে হবে এই সময়টাই সেই সময় যখন বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে নদী পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে। হরিদ্বার মাতৃসদনের সন্যাসীদের যে সংকল্প শুরু হয়েছে এই জয় সেই সংকল্পের। কি সেই জয়? ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গার ডিরেক্টর জেনারেল চিঠি দিয়ে আজ হরিদ্বারের জেলাশাসকে গঙ্গার প্রবাহপথে,…