নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, নদী দখল রোধ, শিল্পকারখানা কর্তৃক সৃষ্ট বর্জ্যের দূষণ রোধ, পরিবেশ দূষণ রোধ, নদীর তীরে ও অভ্যন্তরে অবৈধ অবকাঠামো নির্মাণসহ নদী ভরাট রোধ, নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ রক্ষার কাজে সহায়তা দান, নদীকে নৌ চলাচলে উপযোগী করে নদীর বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং নদীকে দূষণ ও অবৈধ দখল ভরাটমুক্ত করে স্বাভাবিক রূপে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে প্রথমবারের মতো ‘বঙ্গবন্ধু নদী পদক’ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার ( ৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বঙ্গবন্ধু নদী পদক…
Category: ফিচার
অঞ্জনা নদীর তীরে
অঞ্জনা-নদী-তীরে চন্দনী গাঁয়ে পোড়ো মন্দিরখানা গঞ্জের বাঁয়ে জীর্ণ ফাটল-ধরা – এক কোণে তারি অন্ধ নিয়েছে বাসা কুঞ্জবিহারী। আত্মীয় কেহ নাই নিকট কি দূর, আছে এক লেজ কাটা ভক্ত কুকুর। [রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর] এটাই তো সত্যি। মানুষের তৈরি মন্দির পোড়ো মন্দিরে পরিণত হয়।পোড়ো মন্দির বিগ্রহের জন্য নয় তা অন্ধ নিকুঞ্জবিহারীর আশ্রয়। সঙ্গী লেজ কাটা ভক্ত। এতো গেলো মানুষের তৈরি ভাঙা-গড়ার চক্র। কিন্ত প্রকৃতির সৃষ্টি নদী কে মানুষ কি ভাবে নদী থেকে খাল -খাল থেকে -শহরের বর্জ্য বয়ে নিয়ে চলা নর্দমা তে পরিণত করতে পারে? তা দেখতে পেলাম কৃষ্ণনগরে। সমৃদ্ধশালী শহর কৃষ্ণনগর ।…
বালুরঘাটে এই প্রথম নদী ও পরিবেশ সাংবাদিক- লেখক তৈরির উদ্যোগ
দক্ষিণ দিনাজপুর, কলকাতা [ভারত] : সমগ্র পৃথিবীতে নদী ও পরিবেশ এর বিষয়টি নিয়ে এখন জোর চর্চা হচ্ছে। আর হবে নাই বা কেন? নদী আমাদের জীবন আর সুস্থ পরিবেশ আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার কেন্দ্রীয় চরিত্র। কিন্ত যেভাবে নদী ও পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে তাতে সচেতনতা বেশী করে প্রয়োজন। প্রয়োজন নতুন প্রজন্মকে আরও বেশী করে এই চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা। দরকার আরও বেশী নদী ও পরিবেশের লেখা উঠে আসা। সেই লক্ষ্যেই এই প্রথমবার বালুরঘাট ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের উদ্যোগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রেস ক্লাব সভাঘরে হয়ে গেল প্রথম নদী ও পরিবেশের কর্মশালা। নতুন প্রজন্মের মধ্যে…
দেশ পত্রিকার ‘মাতস্তব জলমহিমা’, বিপন্ন গঙ্গার দলিলচিত্র
দেশ পত্রিকার (এ বি পি প্রকাশনা) দোসরা এপ্রিল সংখ্যা বর্তমানের একটি অতি জরুরী বিষয়কে সামনে তুলে এনেছে।এর জন্য প্রথমেই দেশ পত্রিকার সম্পাদক সুমন সেনগুপ্তকে নদীমাতৃক সবুজ অভিনন্দন জানাই। গঙ্গা নদীকে কেন্দ্র করে যেন নদীর বিষয় টাই উঠে এসেছে।গঙ্গা তো শুধু নদী নয়।ভারতীয়দের জীবন ও সংস্কৃতি। ভারতবর্ষের অর্থনীতি। দেশের অগ্রগতির দ্যোতক। কিন্ত সেই নদীর বর্তমান হাল বেহাল। বিবিধ উপায়ে গঙ্গাকে মেরে ফেলা হচ্ছে। সেই জীবনরেখাকে বাঁচাতে নানান সময়ে বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, কিন্ত গঙ্গার হাল ফিরেছি কি? এখন তো আবার গঙ্গাকে রক্ষার নাগরিক দের দাবীর কথা শুনতেও পাচ্ছেনা…
কানাই খাড়ির পাড়ে জীবনকে চেনা
‘সারান্ডা’ সাতশো পাহাড়ের দেশ। সেই পাহাড়ের রূপ দেখে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, তিনি কাশ্মীর দেখতে চান না, কারণ লোকে বলে কাশ্মীরের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মানুষ অন্য সব রূপ ভুলে যায়। তিনি সারান্ডা’র পাহাড়-জঙ্গলের রূপ ভুলতে চাননি। তেমনি ভারতের প্রায় সব বড় নদী এবং অসংখ্য ছোট নদী দেখার সুযোগ আমার জীবনে এসেছে নদীর কোন না কোন অবস্থায়। সেই নদীর মধ্যে একটি ‘প্রিয় নদী’ বাছাই করার কোন ইচ্ছা আমার হয় না কখনো। সব নদী দেখার, নদীর একেক গতিতে দেখার একেক রকম আনন্দ। তাই একটি নদীর গুণ মুগ্ধতার বর্ণনা করার চেয়ে ভালো কোন একদিনের…
প্রকৃতির সহমরণঃ নদী ও গান
মানবসৃষ্ট বৈশ্বিক চাহিদা ও যান্ত্রিক সভ্যতার যুগে হারিয়ে যাচ্ছে নদী। স্হলপথ যোগাযোগ ও অপরিকল্পিত শহরায়ন নগরায়ন এর জন্য গতিপথ হারাচ্ছে নদী।প্রখর জনসংখ্যার ক্রমবৃদ্ধি ও অবাধ বুক্ষ নিধনের কারনে আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নাব্যতা হারাচ্ছে নদী।টলটল ঢেউ আর কলকল অতিথি পাখি, দেশি পাখিদের নেই অবাধ বিচরণ।মৃতপ্রায় নদীগুলোর সাথে সহমরণ ঘটছে সবকিছুর। এর মধ্য নদীমাতৃক বাংলাদের পল্লীগীতি জারি শাড়ী ভাটিয়ালি গানগুলোর অপমৃত্যু ঘটছে। নৌকা নিয়ে আর বরযাত্রী আসে না এখন।কে গাইবে বিয়ের গীত, নৌকার শাড়ি? এ যেন এক অদৃশ্য শত্রু নদী ও গানের। নাব্যতার অভাবে নৌপথ বন্ধ।জলের প্রবাহ নেই নদীতে।সুরের প্রবাহ…
নদী ও নারী: এ যে নিজের সাথে নিজের কথোপকথন
হুমায়ুন কবীর এর ‘নদী ও নারী’ উপন্যাসের কথা মনে আছে? যা নদীর চরের মানুষের জীবনালেখ্য।কিংবা কবি প্রতীপ চন্দ্র বসুর ভালোবাসা নদী? যেখানে তিনি বলছেন নদীকে দেখিনি।জলের কিনারে গিয়ে দেখেছি তোমার মুখ।তোমাকে পাবার জন্য এভাবেই বারবার নদীকে দেখেছি। মহাকবি কালিদাস আবার নদীকে রমণীসদৃশ ব্যাখ্যা করেছেন।এসব থেকে একটা বিষয় বোঝা যায় যে নদী ও নারীর একটা মিল আছে।আত্মীয়তা আছে।আপনতা আছে।প্রকৃতিগত ভাবেই তারা সম্পৃক্ত ।এই ভাবনাটি হঠাৎ করেই মাথায় এলো । নদী যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় প্রবাহিত হয়।নারীও তো তাই।এক সংসার থেকে অন্য সংসারে তার চলন।এবং সে চলন ক্রমাগত।এসব কথা মনে…
সোস্যাল মিডিয়ার দ্বারা নদী চেতনা বাড়ছে : মত নেটিজেনদের
সোস্যাল মিডিয়া কি নদী চেতনা বাড়ার ক্ষেত্রে সহায়ক? নদী বিষয়ক অনলাইন পত্রিকা রিভার বাংলা’র পক্ষে এমন সমীক্ষা চালানোর জন্য ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলাম। পোস্ট টি ছিল এমন “সোস্যাল মিডিয়ার দ্বারা কি নদী চেতনা বাড়ছে? নাকি সবটাই ভার্চুয়াল ! আপনি কি বলেন? নদীর লেখা কি ভাল লাগছে? জরুরী মনে হচ্ছে? কমেন্ট করুন”। আর তাতে মাত্র একজন শিক্ষিকা ও সামাজিক কাজে উদ্যোগী অঞ্জনা চক্রবর্তী জানিয়েছেন যে সোস্যাল মিডিয়ার দ্বারা নদী চেতনা শুধু কাগজে কলমে বাড়ছে। বাকী বাইশ জন মত দিয়েছেন এই মর্মে যে সোস্যাল মিডিয়ার দ্বারা সত্যিই নদী চেতনা বাড়ছে। নদীর লেখা জরুরী…
রূপকল্পক ও রূপকার : রাঢ়ের রঘুনন্দনা- গৌতম অধিকারী
আগে যান ভগীরথ শঙ্খ বাজাইয়া। পাছু পাছু যান গঙ্গা বেণী এলাইয়া।। মহাকবি কৃত্তিবাস তাঁর ‘শ্রীরামপাঁচালী’-তে ভগীরথের গঙ্গা আনয়নের বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। পৌরাণিক এই কাহিনিসূত্র যদি মানতে হয় তাহলে তো বলতেই হয় অন্তরীক্ষ-প্রবাহিনী সুরধুনী গঙ্গাও চূর্ণীর মতো মানুষের হাতে সৃষ্ট প্রবাহ। এই অভিমত পাশ্চাত্য অনেক নদী বিশেষজ্ঞেরও। মর্ত্যে গঙ্গা আনয়নের প্রধানতম পুরুষ সূর্যবংশীয় রাজা ভগীরথের মতো চূর্ণী-প্রবাহধারার আদি রূপকল্পক দেওয়ান রঘুনন্দন মিত্রকে ভাবা যেতেই পারে। ভগীরথের ও গঙ্গা-আনয়নবৃত্তান্তের মিথে বরং অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি করা যায়। কেননা, মিথের সঙ্গে মিথ্যার একটা যোগসূত্র তো থেকেই যায়। কিন্তু দেওয়ান রঘুনন্দন এক অনিবার্য বাস্তব। ইতিহাসের…
ধীবর’রা ভয়ংকর সংকটে, আমাদের বিপদও ঘরের দুয়ারে
বর্ষার সময় ছাড়া জল থাকে না আমাদের নদীতে।কি আশ্চর্য! অথচ এই আত্রেয়ী নদীতেই জল থাকতো কত! এই তো কিছুদিন আগে নদীর বুকে ক্রিকেট খেলে আত্রেয়ীর ভয়াবহতার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়েছিলাম। জল নেই। মাছ নেই আগের মতো। তাই বিভিন্ন ধরনের জাল থাকলেও তা ব্যবহার করা আর হয় না সবসময়। ফলে ধীবর সম্প্রদায়ের জীবনে নেমে এসেছে এক অদ্ভূত আঁধার। সে কথায় আসছি। তবে তার আগে দেখে নেওয়া যাক কোন্ কোন্ জাল দিয়ে আত্রেয়ীর বুকে মাছ ধরতো ধীবররা। আমাদের সমীক্ষায় যে যে জালের কথা উঠে এসেছে সেগুলি হলো- মশারি জাল বা বাদাই জাল-…
নদীকে ঘিরেই জমে উঠেছিল ব্রিটিশ ভারতের প্রথম রাজধানীর কাজ-কারবার
।। কুন্তক চট্টোপাধ্যায় ।। গঙ্গায় মালবাহী নৌকার ভিড় সামলাতে আর ডাকাতি রুখতে তৈরি হয়েছিল রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ। লোকমুখে তাঁরাই জলপুলিশ। বালি থেকে বজবজ, রক্ষা করেন নদীকে। আশিতে আসিও না’ সিনেমায় ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত সংলাপ ছিল, ‘‘আমি এখন জলপুলিশের আন্ডারে।’’ কলকাতা, গঙ্গা আর নদীপথে সুদীর্ঘ বাণিজ্যের ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি জড়িয়ে রয়েছে এই জলপুলিশ। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, জোব চার্নক কলকাতায় ঘাঁটি গাড়বার পর থেকেই নদীপথে বাণিজ্যের ঢল নামে। এই নদীকে ঘিরেই জমে উঠেছিল ব্রিটিশ ভারতের প্রথম রাজধানীর কাজ-কারবার। এখন যেখানে বাবুঘাট, মিলেনিয়াম পার্ক, সেই পুরো জায়গাটা জুড়েই এক সময় ছিল কলকাতা…
চূর্ণীকথা : একটি নদীপ্রবাহের উৎসের খোঁজে – গৌতম অধিকারী
রবীন্দ্রনাথের ‘কথা’ কাব্যের ‘দেবতার গ্রাস’ কবিতায় ‘গ্রামে গ্রামে সেই বার্তা’ রটে যাবার সূত্রে আমরা জেনেছিলাম, ‘মৈত্র মহাশয় যাবে সাগরসঙ্গমে/ তীর্থস্নান লাগি।’ মৈত্র মহাশয়ের এই ‘গ্রাম’ কিংবা সংবাদ রটে যাওয়া গ্রামগুলো যে চূর্ণী নদীতীরেরই সব সাধারণ পল্লি, সে বিষয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ থাকে না। বিশেষ করে এই কবিতাটিতেই যখন তিনি সাগর-তীর্থে শুভযাত্রাকালীন বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখেন, শুভক্ষণে দুর্গা স্মরি নৌকা দিল ছাড়ি/ দাঁড়িয়ে রহিল ঘাটে যত কূলনারী/ অশ্রুচোখে। হেমন্তের প্রভাত শিশিরে/ ছলছল করে গ্রাম চূর্ণীনদীতীরে। ‘দেবতার গ্রাস’ কবিতার সমাপনী কাহিনিটি বড়োই করুণ। সাগরতীর্থ থেকে ফেরার পথে বিধবা মোক্ষদার শিশুপুত্র রাখালকে বিসর্জন…