সদ্য ঘোষিত লোকসভা ভোটের ফলাফলের মাধ্যমে ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় উৎসবের পরিসমাপ্তি হলো। বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে এবার ভোটের অন্যতম ইস্যু ছিল নদী। আরও নির্দিষ্ট করে বললে আত্রেয়ী নদী। বিশেষত তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি প্রার্থী নদীর ইস্যু প্রচারে এনেছেন। এবার বালুরঘাট কেন্দ্রে জয়লাভ করেছেন বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদার। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে এর আগের সাংসদ নদীর প্রশ্নে ইতিবাচক ছিলেন। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রাজ্য ও কেন্দ্রে তুলে ধরেছেন। জেলার নদী ও পরিবেশ কর্মীরা নবনির্বাচিত সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের কাছে জেলার নদীর বিষয় গুলি নিয়ে ইতিবাচক সাড়া চান। দাবী গুলি নিম্নরুপ: এক)…
Category: মতামত
কোপাই নদীর হেরিটেজ মর্যাদার জন্য আবেদন করবো
নদীর কথা বললেই কোন্ কবিতার লাইন সবার মনে আসে বলুন তো! রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আমাদের ছোট নদী। “আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাঁটুজল থাকে” দিয়ে লেখা শুরু করেছেন কবি। (যদিও আমাদের ছোটবেলায় পড়া আঁকে বাঁকের বদলে এখন বাঁকে বাঁকে পাওয়া যায়) বলুন তো কোন্ নদীকে দেখে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন? ঠিক ধরেছেন। কোপাই নদীকে নিয়েই। প্রাণের কোপাই নদীকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথের ‘কোপাই’ নামে একখানি কবিতাও আছে। এখন যখন ফিরে দেখা হচ্ছে সব নদীকে। তখন ফিরে তাকানো যাক কোপাই নদীর দিকে। কেমন আছে কোপাই? তার আগে রবীন্দ্রনাথের নাম দেওয়া এই কোপাই নদী…
নৌকা আর ভাসে কই নদীর জলে? সঙ্কটে নৌকা কারিগররা
সেদিন দেখা হল পরাণ মাঝির সাথে। রিকশা ঠেলে সওয়ারী নিয়ে যাচ্ছে নদী পাড়ে।হাঁক দিলামঃ কি গো! তুমি? উত্তর পেলামঃ এখন আর নৌকা ঠেলি না গো! ব্রীজ হয়ে গেসে। জলও তো নাই। বলতে বলতে বেরিয়ে গেল পরাণ মাঝি। সত্যিই তো আগের মতো তো আর নৌকা চলাচল করেনা।যাত্রী কিংবা পন্য- দুটোতেই নৌকার প্রাধান্য কিংবা কদর কমেছে। উন্নয়ন আর নগরায়নে এক শ্রেণীর মানুষ কাজ হারিয়েছে। রাতের বেলা সিভিক পুলিশের ডিউটি শেষ করে নদী পেরিয়ে পাগলিগঞ্জের ওপারে সোদপুর- বদিহারে যেতে তাই জয়দেব দের আর নৌকা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া মাঝিকে ডাকতে হয়না। ব্রীজ আর রাস্তা…
বাঁচলে নদী বাঁচবে দেশ : ড. মীজানুর রহমান
অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান >> নদীমাতৃক বাংলাদেশ কথাটির অর্থ, বাংলাদেশ নামক দেশটির মা বা জননী হচ্ছে নদী। গঙ্গার পানির সঙ্গে আসা পলি জমে জমে সৃষ্টি হয়েছিল এই ব-দ্বীপ। এ হচ্ছে বাংলাদেশের ভূ-তাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য যা মানুষের নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের মতো কাছাকাছি ধারণা। আর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঠিকানাও কিন্তু নদী। পাকিস্তানি আধা-ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তির লক্ষ্যে মধুমতির তীরে জন্ম নেওয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যে বাংলাদেশের জন্য আমরা দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম করেছিলাম তার ঠিকানাও ছিল আমাদের তিনটি প্রধান নদীর নামে। ‘তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’; এটাই ছিল আমাদের রাজনৈতিক ঠিকানা। বাংলার সমাজ-রাজনীতি-অর্থনীতি-শিল্প-সংস্কৃতি সবকিছুতেই…
হালদায় তেল দূষণ, নদী কমিশন নড়ুন-চড়ুন – গওহার নঈম ওয়ারা
গওহার নঈম ওয়ারা >>> পৃথিবীতে হালদা একটাই আছে। মিষ্টি পানির মাছের এত বিরাট প্রজননক্ষেত্র আর নেই। অথচ এই নদীর ওপর অত্যাচার থেমে নেই। এবার পা পিছলে আলুর দম হওয়ার অবস্থা হয়েছে তেলভরা রেল ওয়াগনের। চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র পিকিং প্ল্যান্টের জন্য ফার্নেস অয়েল ভরা রেল ওয়াগন আবার লাইনচ্যুত হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল ভরদুপুরে সাতটি রেল ওয়াগনের মধ্যে তিনটি কালভার্ট ভেঙে মরাছড়া খালে পড়ে। প্রতিটি ওয়াগনে প্রায় ৩৫ হাজার লিটার ফার্নেস অয়েল থাকে। হাটহাজারী বিদ্যুৎকেন্দ্রে ফার্নেস অয়েল নিয়ে যাওয়ার সময় মরাছড়ার ওপর যে কালভার্ট রয়েছে, তার পাটাতন ও স্লিপার ভেঙে…
স্বপ্ন দেখি দুই দেশে একসাথে নদী- পরিবেশের পাঠশালা গড়ছি
হ্যাঁ, স্বপ্ন দেখছি ।আর সেই স্বপ্ন ঘুমিয়ে নয়।জেগে থেকে।ড.এ পি জে আব্দুল কালাম যা একবার বলেছিলেন তার বাংলা ভাবানুবাদ করলে দাঁড়ায় ” মানুষ ঘুমিয়ে যেটা দেখে সেটা স্বপ্ন নয়।যা মানুষকে ঘুমোতে দেয়না সেটাই স্বপ্ন ।” প্রকৃতি ও পরিবেশের উপাদানই তো নদী।তাই নদী ও পরিবেশের পাঠশালা গড়ার ভাবনাটা বেশ ভাবাচ্ছে।কিন্ত কেন?সে কথাতেই আসছি। ভারতবর্ষ আমার দেশ।নদীমাতৃক বলতে যা বোঝায় আমার দেশ তাই।আবার সম্প্রতি যে দেশটিকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে সেটাও তো আমার দেশ।না দেশভাগ না হলে যে একই দেশ থাকতো সেটা শুধু বলছি না আমার বাবার জন্ম সে দেশে।এককথায়…
নরসুন্দার নাব্যতা ফিরে পাওয়ার এখনই সময়
আমার ছেলেবেলার দেখা নরসুন্দা এখন আর দেখি না। এখন যা দেখি একে নদী বলা যায় না। আমার দেখা ৬০-৭০ দশকের নরসুন্দার অস্বিস্থ এখন বিলুপ্ত প্রায়। অথচ এখনও আমরা ওই নদী নিয়ে স্বপ্ন দেখি। কেন দেখি তার উত্তর আমারও জানা নেই। জীবন জীবনের উৎস খুঁজে, সে তার শৈশব, কৈশর আর যৌবনের জয়গান করতে ভালোবাসে। সেই স্বার্ণালি জীবনটারে মানুষ আবার ফিরে পেতে চায়। তাই তো মানুষ বারবার অতীতের কাছে ফিরে যায়। আমারও অতীত ছিলো, ছিলো কৈশর ও যৌবনের উচ্ছ্বাস। আমি নরসুন্দা পাড়ের মানুষ তাই আমার কৈশর আর যৌবনের সঙ্গে মিশে আছে খরস্রােতা…
ভালো থেকো নদী আমার আত্রেয়ী
রিভার বাংলা’র বৈশাখী আয়োজনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রধান নদী আত্রেয়ী নিয়ে লিখেছেন নদী আন্দোলনের সংগঠক তুহিন শুভ্র মন্ডল – সম্পাদক কবে থেকে নদীকে দেখতে শিখি মনে পড়ে না ঠিকঠাক।তবে হ্যাঁ, নদীকে দেখি অনেকদিন থেকেই। আমার বাড়ি বালুরঘাটে একেবারে খাঁড়ির ধারে।প্রতিদিন সকালে জানলা খুললেই দেখতে পাই তাকে। বলা যেতে পারে ঘুম থেকে উঠে জল দেখি আর জলকে দেখেই ঘুমোতে যাই।এই খাঁড়িই গিয়ে মিশেছে বাড়ির অদূরে দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রধান নদী আত্রেয়ীর সাথে। সেই আত্রেয়ী, যাকে পেরিয়ে মায়ের হাত ধরে পৌছাতাম দাদু-দিদার বাড়ি। মনে পড়ছে বর্ষার সময় নৌকা করে যেতাম। সোজা পথে না গিয়ে নৌকা ঘুরপথে…
নদী এখন ভূগোলের নয় ইতিহাসের বিষয়
তাহলে কি এখন থেকে তাই? মানে নদীর অধ্যায় আর ভূগোলে পড়ানো হবে না। এখন থেকে ইতিহাসে পড়তে হবে।কি এমন হলো যে এমনটা হলো? ভাবছেন তো! আসলে পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে খুব শীঘ্রই বোধহয় সেই দিন আসতে চলেছে যখন নদী আর থাকবেনা।নদী ছিল বলতে হবে।অতীত কাল। আর অতীত কালের বিষয় তো ইতিহাসেই পড়ানো হয়। আগামী প্রজন্ম কি নদী দেখতে পাবে? এই প্রশ্ন এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।একটি পরিসংখ্যান বলছে পশ্চিমবঙ্গের সতেরটি নদী হারিয়ে গিয়েছে।সাতাত্তরটি নদী হারিয়ে যাওয়ার পথে।তাই বিভিন্ন জায়গাতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাই এভাবেই বলি যে নদী নেই হয়ে গিয়েছে।হচ্ছে।তাই…
জিকে প্রকল্প বনাম নদী সুরক্ষা : আলতাফ হোসেন রাসেল
গত প্রায় এক দশকে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় কুষ্টিয়া অঞ্চলের নদনদীর করুণ অবস্থা নিয়ে অনেক প্রতিবেদন খেয়াল করেছি। প্রতিবেদনগুলোর শিরোনাম প্রায় একই রকম ছিল। যেমন হুমকির মুখে কুষ্টিয়ার আট নদী, কুষ্টিয়ার আট নদীতে দখলের মহোৎসব চলছে, কুষ্টিয়ার আট নদী বিলীন হওয়ার পথে অথবা কুষ্টিয়ার আট নদী এখন মরা খাল ইত্যাদি। এই নদীগুলোর বেশিরভাগই গঙ্গা-গড়াইয়ের শাখা নদী; যেমন- কালীগঙ্গা, ডাকুয়া, হিসনা, সাগরখালী, চন্দনা, মাথাভাঙ্গা, কুমার ইত্যাদি। বাংলাদেশের মোটামুটি সব অঞ্চলেই নদী দখল হয় এবং হচ্ছে। কিন্তু এ অঞ্চলের নদী দখল ও ভোগের চিত্রটা অনেক বেশি ভয়ঙ্কর ও ভিন্ন। এ অঞ্চলের অনেকেই…
থিয়েটারে উঠে আসুক মরা নদীর কান্না
বিশ্বের থিয়েটারের আলোচনায় প্রবেশ করবো না, সরাসরি বাঙলা থিয়েটারে আসি। লেবেদভের ভূমিকা বাংলা থিয়েটারে অনস্বীকার্য। তারপর থেকে বাংলা থিয়েটারে যত বিষয় এসেছে তার বৈচিত্র্যের কথা লিখলে তা লিখে শেষ করা আমার ক্ষেত্রে প্রায় অসম্ভব। আজ এই বিশ্ব নাট্য দিবসে আমার মনে হচ্ছে নদীর কথা। যার কথা বর্তমান থিয়েটারে উঠে আসা খুব জরুরী। তার সঙ্গে এই প্রশ্নটাও করতে চাই আজ যে থিয়েটারের বিষয় হিসাবে নদী কতটা উপযুক্ত? বা এইভাবেও বলতে পারি যে থিয়েটার কি নদীর বিষয় হতে পারে? এই কথা ভাবতেই আমার মনে পড়ে যাচ্ছে দেবেশ রায়ের তিস্তা পাড়ের বৃত্তান্তের কথা।…
দুই বাংলার যোগসূত্রে নদীপথ : বার্তাবাহী এম ভি মধুমতি
এই তো কদিন আগেই ছিল একটাই দেশ। কালের সময়ে বাহাত্তর বছর কতই বা! দুই বাংলা ছিল একই।একই ভাষা, একই সংস্কৃতি, একই চিন্তা-চেতনা। ঘটনাপ্রবাহের অনিবার্য পরিস্থিতি মাঝে এনেছে কাঁটাতার, কাঁটাতারের যন্ত্রনা। কিন্ত পাখিকে তো সীমান্তের চোখরাঙানির মাধ্যমে আটকে রাখা যায়নি। আর নদী? তার প্রবাহপথে কোথাও তো কাঁটাতার দেওয়া যায়না। নদী আসলে দুই বাংলার অখন্ডতার ছবি। নদীপথই সেই কথা বারবার মনে করিয়ে দেয় আমাদের।এবার সেই বার্তাই যেন আরো একবার সামনে আসবে এম ভি মধুমতির মাধ্যমে। হ্যাঁ, আগামী উনত্রিশ মার্চ দুই বাংলার সম্পর্কে একটি ঐতিহাসিক দিন।এর আগে ট্রেন এবং বাসে মৈত্রীর সম্পর্ককে দৃঢ়…