করোনাকালে অঘোষিত লকডাউনে দীর্ঘদিন নদীতে লঞ্চ-স্টিমার চলাচল বন্ধ থাকার কারণে বুড়িগঙ্গা নদীসহ দেশের প্রায় সকল নদ-নদীর পানির গুণগত মান বেড়েছে। পণ্যবাহী জাহাজ ছাড়া দীর্ঘ দুইমাস নদীতে চলেনি যাত্রীবাহী কোন ধরণের লঞ্চ-স্টিমার। ইঞ্জিনের ভট ভট বা ভোঁ ভোঁ শব্দ ছিলো না। একই সময়ে নদীর তীরের কলকারখানাও বন্ধ ছিল। পানিতে মিশতে পারেনি কল-কারখানার দূষিত বর্জ্য। তাই শান্ত নদীর বুকে এখন শুধু মৃদু ঢেউয়ের কলকল ধ্বনি। ঢাকার প্রধান নদী বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা নদীর পানি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশী স্বচ্ছ। এই রকম পরিস্কার পানির বুড়িগঙ্গা নদী বাঁচাতে কলকারখানার বর্জ্য শোধনাগার পরিবেশসম্মত করতে…
Category: মতামত
বানের পানি চোখের জল একাকার!
মো.ইউসুফ আলী ।। দেশে একদিকে করোনা আরেক দিকে বন্যা। আবার এসেছে ঈদ। সাধারন খেটে খাওয়া মানুষের কাজকর্ম স্থবির। কি করবে মানুষ! কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? কোথায় মিলবে ঠাঁই? এসব হিসেব মিলাতে দিশেহারা আজ দেশবাসী। করোনা আক্রান্তে কাপঁছে দেশ। প্রতিদিন হাসপাতাল গুলেতে বাড়ছে করোনা রোগির সংখ্যা। এ মহামারি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। অতিরিক্ত রোগিতে কাহিল ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী আজ পর্যন্ত সারাদেশে আক্রান্ত রোগীর সংখ্য একলক্ষ একাশি হাজার একশ উনত্রিশ জন। মৃত্যু হয়েছে অন্তত দুই হাজার তিনশ পাঁচ জনের। তবে সরকারি হিসেব এমনটা হলেও সারাদেশে বাসাবাড়িতে…
চাঁদপুরের নদী, প্রকৃতি ও ইলিশ ।। সৌম্য সালেক
‘নদীমাতৃক একটি ভূগোল ঘুরতে ঘুরতে আমি ঘুরে এলাম উড়তে উড়তে আমি উড়ে এলাম না কোনো রহস্য ছিল না না কোন চমক ছিল না কেবল একঘেয়ে এক ক্লান্তি দেখতে দেখতে আমি হয়ে উঠি যুগলতা আমি দেখতে দেখতে খসিয়েছিলাম শরীরের তাবৎ ক্লান্তি ওম শান্তি, ওম শান্তি’ –কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা আমরা নদীমাতৃক ভূ-ভাগের অধিবাসী। নদীর প্রভাবে আমরা নানাভাবে প্রতীকায়িত হয়েছি। নদীর বাঁধাহীন ছুটে চলার সাথে মিল রয়েছে মানব জীবনের প্রবাহমানতার। নদীর ইতিহাসও মানুষের ইতিহাসের মতোই প্রাচীন এবং বৈচিত্রপূর্ণ। বাংলাদেশের পুরো ভূগোলজুড়ে জালের মতো ছড়িয়ে বিছিয়ে রয়েছে অনেক নদী। শাখা-প্রশাখাসহ প্রায় ৮০০ নদ-নদীর…
আনন্দাশ্রু ফুলেশ্বরী
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে প্রাইমারি শেষ করে সবে হাইস্কুলের চৌকাঠে পা রাখছি। বন্ধুদের সাথে সকাল বিকাল নদীতে ডুবসাঁতার মলাই খেলা আর স্কুলে যাওয়া আসা। খেলাধুলা মন ও মগজ অষ্টপ্রহর। স্কুলের তোতাপাখির মুখস্ত বিদ্যা ছাড়া মেধা ও মনন বিকাশের বয়স হয়নি। খেলাধুলার ফাঁকে গ্রামে যেসব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হতো তা হলো পালাগান, মহরমের জারি, ছায়াবানি দস্তর আলীর প্রেমকাহিনীর পুঁথিপাঠের আসর, বাউল সন্ধ্যা এইসব। রহিম বাদশা ও রূপবানের পালাগান ও ঝুমুর যাত্রানাট্যে মাঝিদের গান ও অভিনয় আজো মনে দাগ কাটে। এসবের বাহিরে আপডেট সাংস্কৃতিক মাধ্যম ছিলো বিটিভিতে মাসে একটি বাংলা সিনেমা ও ভাড়ায় চালিত…
হালদা নদীকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা: যৌক্তিকতা ও বিশ্লেষণ
ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া ।। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ- কথাটি কেবল আক্ষরিক অর্থেই নয়, সামগ্রিক অর্থেই সত্য। বাংলাদেশের মানচিত্র নদীর কল্যাণেই সৃষ্ট। ঐতিহাসিক কাল থেকেই বাংলা ভূখণ্ডের মাটি ও মানুষের সঙ্গে নদ-নদী ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। সবুজ শ্যামল সৌন্দর্যের চাবিকাঠির একমাত্র বাহক ও নিয়ন্ত্রক। বাংলাদেশে সভ্যতার ক্রমবিকাশ, যোগাযোগ- অর্থনীতির মূল ভিত্তি রচিত হয়েছে নদীকে কেন্দ্র করে তেমনি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও মূল ভিত্তি নদী নির্ভর। সাহিত্য, গান, নাটক, চলচ্চিত্রে নানাভাবে উঠে এসেছে নদীর প্রসঙ্গ। অথচ আমরা নদীকে নিয়ে কতটুকু ভাবি বা জানি। যে দেশ নদীর কল্যাণে গড়ে উঠেছে সেদেশেই নদী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত…
তদন্তেই সীমাবদ্ধ সব নৌ-দুর্ঘটনা : আর কত প্রাণ দিলে এর অবসান ঘটবে!
মো. ইউসুফ আলী ।। আবারো লঞ্চ ডুবি। আবারো প্রাণহানী। এবারতো একেবারে তীরে এসে তরী ডুবলো। ময়ূর-২ এর ধাক্কায় অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে গেল মর্নিং বার্ড নামের ছোট একটি লঞ্চ। মুন্সিগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চটি একেবারে সদরঘাটের নিকটে এসেই ডুবলো। এতে শিশু ও নারীসহ অন্তত ৩৩ জনের প্রাণ গেলো। প্রতি বছরই এভাবে একের পর এক নৌ-দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। এ যেন কোন ভাবেই থামছে না। তাই দেশের সচেতন মানুষের কাছে এটা এখন প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে যে, নৌ-পথে আর কত প্রাণ দিলে এর অবসান ঘটবে। কারণ একের পর এক নৌ-দুর্ঘটনা যেমন ঘটেই…
এই সময়ে যেমন আছে আমার নদী : তুহিন শুভ্র মন্ডল
এই সময়।এই সময়টাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়? বিশেষ সময়? জরুরী সময়? ভয়ংকর সময়? মহামারি পেরিয়ে অতিমারির সময়? কিভাবে? সব ভাবেই বলা যেতে পারে।আর একভাবে বলা যেতে পারে যে এটা মানব সভ্যতার বড় সঙ্কটের সময়। কিন্ত প্রকৃতির কাছে? আমার নদীর কাছে? এ বড় সুখের সময়, আনন্দের সময়। এই সময়ে কেমন আছে আমার নদী? আমার মনে হয় ভাল আছে এবং খুব ভাল আছে। এবং যতটুকু অনুভব করেছি এ নদীকে সে এমন ভালই সবসময় থাকতে চায়। করোনা ভাইরাসের ভয়ংকর এই সময়ে মানুষের পদচারণা কম। যান্ত্রিক সভ্যতা আর উন্নয়নের ভুল ব্যাখ্যায় মেতে থাকা মানুষ…
মাঝির তুলনায় জেলেদের করোনা সংক্রমনের ভয় বেশি, কিন্তু কেন?
ভারতের দক্ষিণদিনাজপুর থেকে : আচ্ছা বলুন তো যারা জেলে অর্থাৎ মৎস্যজীবী করোনা পরিস্থিতির ফলে তাদের অবস্থা কি? কি আবার? যথা পূর্বং তথা পরং।অর্থাৎ সোজা ভাবে বললে একই। করোনা পরিস্থিতির আগেও যা, পরেও তা। আর মাঝি দের অবস্থা? তাদেরও তো একই। কেন? সেই কথাতেই আসছি। তবে হ্যাঁ, মৎস্যজীবী বা জেলেদের করোনায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা তুলনায় বেশি। সে কথাও বলবো। খুব সহজ ভাবে বলা যেতে পারে গত এক মাস থেকে করোনা ভাইরাসের ভয়াল দিক আমাদের সামনে এসেছে।এই এক মাসে নদীর অবস্থা কি ভাল হয়েছে? উত্তর হচ্ছে না।বর্ষা মরশুম আসতে এখনও অনেক দেরি।এই…
ব্রীজই মেরে ফেলেছে সিংগুয়া নদীকে
বাংলাদেশকে নদীমাতৃক দেশ বলা হলেও বর্তমানে দেশের অনেক নদী মৃত প্রায়। ইতিমধ্যে অনেক নদী তার নাব্যতা হারিয়েছে। প্রাকৃতিকভাবেই নদ-নদীগুলো তাদের নিজস্ব গতিতে চলে। নদীতে বাঁধ, অবৈধ দখল, মাটিভরাটসহ বিভিন্ন আবর্জনা ফেলে মানুষ নদীর গতিপথে বাঁধার সৃষ্টি করছে। অপরিকল্পিত নকশায় নদীতে নীচু করে ব্রীজ নির্মাণ করায় নদী তার নাব্যতা হারাচ্ছে, নদীর গতিপথে বাধাঁ সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে যে কোন সময় প্রাকৃতিক দূর্যোগ তৈরি হতে পারে। সিংগুয়া নদীটি পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুরের খামাবিল হতে উৎপন্ন হয়ে গচিহাটা ও নিকলী হয়ে ঘোড়াউতরায় মিলিত হয়েছে। নদীটির দৈর্ঘ্য (প্রায় ২২.৪ কি.মি) কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া , কটিয়াদী,…
ইছামতি বা আত্রেয়ী নয়, সব নদীই আমাদের মনোযোগ দাবি করে
Please Stop River Pollution! কিছুদিন আগেই রিভার বাংলাতে ইছামতি নদীর সংস্কার চাই বলে লিখেছিলাম। আর আত্রেয়ীসহ উত্তরবঙ্গ, পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতবর্ষের বিভিন্ন নদী- যখনই যাকে কাছ থেকে দেখেছি বা কাজ করেছি তার উপর সেই নদীর কথা, সঙ্কটের কথা, সমাধানের কথা- লিখেছি রিভার বাংলায়। নিউজটি পড়তে ক্লিক করুণ- জীবন- জীবিকার জন্য ইছামতি নদীর সংস্কার জরুরী এই যেমন ক’ দিন আগেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম পঞ্চায়েত একটি আন্ত: সীমান্ত নদী ইছামতি সংস্কারে উদ্যোগ নিল। বা দক্ষিণ দিনাজপুরের জীবনরেখা আত্রেয়ী নদীতে বসন্ত উৎসবে নদী ও পরিবেশ কর্মীরা নদীদূষণ বন্ধ করার সচেতনতার বার্তা দিলেন তার পরিপ্রেক্ষিতে…
প্রসঙ্গ: ভারতের সাম্প্রতিক নদী আন্দোলন ও আমার কিছু কথা
বন্দো মাতা সুরধনী পুরাণে মহিমা শুনি পতিত পাবনী পুরাতনী বিষ্ণুপদ উপাধান দ্রবময়ী তব নাম সুরাসুর নরের জননী।। -কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী ভারত উপমহাদেশের শুধু ভৌগলিক রূপরেখা তৈরি নয় সভ্যতা, ইতিহাস এবং সংস্কৃতির সাক্ষী ও ধারক-বাহক আমাদের গঙ্গা নদী। অসংখ্য জীব-বৈচিত্র্যর প্রাণশক্তি যুগিয়ে চলেছে গঙ্গা নদী। ‘স্বর্গের নদী’ নামে খ্যাত ‘গঙ্গা-যমুনী-তহজীব’ এই নদীকে ঘিরে গড়ে উঠেছে ভারতীয় সভ্যতা। ভারত, তিব্বত (চীন), নেপাল, ভূটান, বাংলাদেশ জুড়ে ১০৮৬০০০ বর্গ কিমি জুড়ে গঙ্গা অববাহিকা। ভারতের ২৬ শতাংশ ভূমিখন্ডে ৮৬১৪৫২ বর্গ কিমি গঙ্গা ও তার উপনদী ভারতের মূল জল বহনের আধার। উত্তরে…
নদীর জন্য একদিন নয়, প্রতিদিন
শুধু সরস্বতী পুজোর জন্য একদিনের নয়, বা দুর্গাপুজো- কালিপুজো- ছটপুজোর সময় নয়, নদীর দিকে নজর থাকা উচিত প্রতিদিনের।একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা দরকার। এবং সেটা পুজোর আগে থেকে। এবং শুধু একটি নদীর একটি ঘাট নয়। সব নদীর, কোন কোন নদীর ঘাট পুজোর জন্য ব্যবহৃত হয়, বিসর্জন দেওয়া হয় সেগুলো ঘিরে একটা বিশেষ পরিকল্পনা নিতে হবে। এবং সেটি অন্তত দু মাস আগে। কারা কোন নদীর ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেবে তার একটা পূর্ণাঙ্গ তালিকা আগে থেকেই থাকা দরকার। সমস্যা শুধু ক্লাব- পুজো কমিটির পুজোর জন্য নয় বাড়ি বাড়ি প্রচুর পুজো হয়। সেগুলোও বিসর্জন দেওয়া…