রূপকল্পক ও রূপকার : রাঢ়ের রঘুনন্দনা- গৌতম অধিকারী

আগে যান ভগীরথ শঙ্খ বাজাইয়া। পাছু পাছু যান গঙ্গা বেণী এলাইয়া।। মহাকবি কৃত্তিবাস তাঁর ‘শ্রীরামপাঁচালী’-তে ভগীরথের গঙ্গা আনয়নের বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। পৌরাণিক এই কাহিনিসূত্র যদি মানতে হয় তাহলে তো বলতেই হয় অন্তরীক্ষ-প্রবাহিনী সুরধুনী গঙ্গাও চূর্ণীর মতো মানুষের হাতে সৃষ্ট প্রবাহ। এই অভিমত পাশ্চাত্য অনেক নদী বিশেষজ্ঞেরও। মর্ত‍্যে গঙ্গা আনয়নের প্রধানতম পুরুষ সূর্যবংশীয় রাজা ভগীরথের মতো চূর্ণী-প্রবাহধারার আদি রূপকল্পক দেওয়ান রঘুনন্দন মিত্রকে ভাবা যেতেই পারে। ভগীরথের ও গঙ্গা-আনয়নবৃত্তান্তের মিথে বরং অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি করা যায়। কেননা, মিথের সঙ্গে মিথ্যার একটা যোগসূত্র তো থেকেই যায়। কিন্তু দেওয়ান রঘুনন্দন এক অনিবার্য বাস্তব। ইতিহাসের…

চূর্ণীকথা : একটি নদীপ্রবাহের উৎসের খোঁজে – গৌতম অধিকারী

রবীন্দ্রনাথের ‘কথা’ কাব‍্যের ‘দেবতার গ্রাস’ কবিতায় ‘গ্রামে গ্রামে সেই বার্তা’ রটে যাবার সূত্রে আমরা জেনেছিলাম, ‘মৈত্র মহাশয় যাবে সাগরসঙ্গমে/ তীর্থস্নান লাগি।’ মৈত্র মহাশয়ের এই ‘গ্রাম’ কিংবা সংবাদ রটে যাওয়া গ্রামগুলো যে চূর্ণী নদীতীরেরই সব সাধারণ পল্লি, সে বিষয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ থাকে না। বিশেষ করে এই কবিতাটিতেই যখন তিনি সাগর-তীর্থে শুভযাত্রাকালীন বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখেন, শুভক্ষণে দুর্গা স্মরি নৌকা দিল ছাড়ি/ দাঁড়িয়ে রহিল ঘাটে যত কূলনারী/ অশ্রুচোখে। হেমন্তের প্রভাত শিশিরে/ ছলছল করে গ্রাম চূর্ণীনদীতীরে। ‘দেবতার গ্রাস’ কবিতার সমাপনী কাহিনিটি বড়োই করুণ। সাগরতীর্থ থেকে ফেরার পথে বিধবা মোক্ষদার শিশুপুত্র রাখালকে বিসর্জন…