কবিতা: আত্মীয় ১. আমি ঠিক এসে যাবো। নদী, তুমি কিন্তু অপেক্ষা করো না জানই তো সময়ের স্বেচ্ছাচার আঁট করে আছে রাত্রিগুলো ঢুকে যাচ্ছে অঘুমের দীর্ঘ কোলাহলে দিনের ব্যস্ততা থেকে ঝরে পড়ে মূল্যশূন্য ধূলো এর মধ্যে জারি হয় রোদনের খিন্ন প্রজ্ঞাপন কিছু কান্না জমে গেছে। নদী, বলো, কার কাছে কাঁদি আমার চোখের জল তুমি ছাড়া আর কেউ বোঝ!? ২. জলের নিঃশ্বাস থেকে পাওয়া যায় ছন্দশুদ্ধ গান স্বভাবে বাউল বটে, যেতে যেতে বহুদূর যায় কান্নার বিচিত্র শ্রেণি। নৈশব্দ ও শব্দপ্রকরণে অক্লান্ত জাগিয়ে রাখে বিষাদের নানারং আলো নদীকে আত্মীয় মানি। ওর ভাষা সর্বজনভাষা…
Tag: নদী কবিতা
নদীখেকোদের প্রতি- আমিনুল ইসলাম সেলিম
নদীকে হত্যা করে কীভাবে তোমরা হও সভ্যতার পতাকাবাহক? কর্পোরেট হাসি নিয়ে যত্রতত্র কী করে দাঁড়াও মাথা তুলে? নিলাজ এতোটা নাকি? এতোটাই? মাটিচাপা দিচ্ছো যারা নদীবুকে, করে যাচ্ছো প্রাণ ওষ্ঠাগত তোমাদের নামেও ফুটছে ফুল, ঝুলছে তিলকশোভা নানান রকম এর নাম সভ্যতা? আচানক! কী যে আচানক! নদীকে হত্যা করে, রসহীন করে দিচ্ছো দেশ নদীকে বন্দি করে, অপরাধী করে দিচ্ছো মনুষ্যবিবেক নদীকে রক্তাক্ত করে, প্রাণহীন করে দিচ্ছো প্রিয় প্রকৃতিকে তোমরা কি ভুলে গেছো মেসোপোটেমিয় দিন, নদীর সভ্যতা? ভুলেছো কি সিন্ধু নদের পাড়ে জীবনের প্রাচীন ফসিল? ভুলেছো কি তেরো ‘শ নদীর দেশ? যে দেশের…
কবি ইন্দ্রনীল সুমন এর একগুচ্ছ কবিতা
বাঁওড় ………….. ইছামতী পাশ দিলে রোদেজলে ঝিলমিল বাঁওড়ের বুক শুনেছি নদীর না কি মৃত্যুদিন হয় শোকসভা, ফুলমালা ধূপগন্ধে স্মৃতি দু-মিনিট নীরবতা, মৃদু কাশি, ব্যস, ঠিক আছে! মানুষ পাশ দিলে, মন অমরায়, পবিত্র ঘণ্টাধ্বনি মৃদুতর সুর নিয়ত বাজতে থাকে, স্মৃতির জীবন দীর্ঘ হয়, দীর্ঘতর অবহেলা ঘরে, ধূলির বসন! নদী তার ছেড়ে যাওয়া জলচলে রাখে আপনার কীর্তিকথা, সুখ শোক হাসি, আনন্দ হতাশার চূর্ণকুন্তল… স্মৃতি বড় অসহায়, অমরতা নিয়ে, এ ডালে সে ডালে বসে, শাপগ্রস্ত ফিঙে! ……………………………………………………… মোহনিয়া ………………. স্বপ্নে এক নদী আসে কেন? ভৈরবী ভোরে? অহেতুক জলছুঁই খেলাধুলা শেষে ও মোর বালকদিন…
আফজল হোসেন আজম এর কবিতা “নদীকথা”
পূবেতে বন্দনা করি জগৎ বন্ধু ভানুশ্বর নিধিরবি উঠে তুমি বিশ্ব করো যে পসর। পশ্চিমে বন্দনা করি মক্কা ও মদিনায় দয়াল নবী শুয়ে আছে নয় কারো যে অজানা। দক্ষিনে বন্দনা করি বঙ্গোপ সাগর যে সাগরে বাইয়া খাইতো চান্দু সওদাগর। উত্তরে বন্দনা করি হিমালয় পর্বত যেথায় ঋষি মনি ঠাঁকুর সদায় থাকতো ব্রত। এইবারে নদ- নদীর কথা যাবো তোলে তারা সবি মানবস্বত্তা এ ভূ- মন্ডলে। সৃষ্টিকর্তার অপার লীলা নদ ও নদী বসুন্ধরা রুগ্ন হবে তাদের হারাই যদি। হিমালয়ের হিমবাহে আসিলো মা গংঙ্গা মায়েরকোলে শুয়ে আমরা আজ চতুরঙ্গা। পদ্মভূষণ করলো মোদের কণ্যা তারি যমুনা…
নদী গানের জন্ম দেয়, নদী কবিতার জন্ম দেয় : সুমনা খান
মনে ও মগজে প্রায়ই নদীর চলাচল টের পাই। সেই নদীর, যে নদীতে আমরা কাটিয়েছিলাম জীবনের হলুদ এক বিকেল। নাম জানি না সে নদীর, রূপ জানি! বাংলার প্রায় ২৪,১৪০ কিলোমিটার জুড়েই তো সেই রূপ, সুরের ধারা। আমার সেই বিকেল সুখই হয়ত নদীর কাছে চিরঋণী করে রাখে আমাকে। তাই নদীর কথা ভাবি। আমরা জলের মানুষ, আমাদের সকল কিছুই নদীকেন্দ্রিক। নদী গানের জন্ম দেয়, নদী কবিতার জন্ম দেয়। আনন্দ-বিরহের-ভালোবাসার সাক্ষী নদী। নদীর তীরেই গড়ে ওঠে যান্ত্রিক জীবন, শিল্প কারখানা, এসব শিল্প কারখানা আবার আমাদের অর্থের জোগান দেয়। বলা চলে, নদী বাঁচলে দেশ বাঁচে।…