বিভূতিভূষণের ‘ইছামতী’ : মহাজীবনের মেটাফোর- সৈয়দ কামরুল হাসান

ইছামতি

১. ১৯৪৭ সালের ১৭ জুলাই ছোটভাই নুটুবিহারী বন্দোপাধ্যায়কে লেখা এক পত্রে  বিভূতিভূষণ ‘অভ্যূদয়’ নামে সাময়িকীতে তাঁর ‘ইছামতী’ উপন্যাস ধারাবাহিকভাবে প্রকাশের কথা জানিয়েছিলেন। নিজের গ্রাম বারাকপুর, তৎসন্নিহিত নদী এবং এর আশপাশ, ইংরেজ নীল চাষী, তাদের পরিত্যক্ত স্থাপনা ইত্যাদি নিয়ে একটি উপন্যাস লেখার আকাঙ্ক্ষা তিনি পোষণ করেছিলেন, যখন তিনি প্রথম উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’ লিখছিলেন তখন থেকেই । এ-ব্যাপারে ১৯২৮ সালে তাঁর ডায়রী ‘স্মৃতির রেখায়’ তিনি লিখে রেখেছিলেন তাঁর আগ্রহের কথা। তাঁর ভাষায়: “ঐ আমাদের গ্রামের ইছামতী নদী । আমি একটা ছবি বেশ মনে করতে পারি – ঐ রকম ধূ ধূ বালিয়াড়ী ,পাহাড়…

সাহিত্যের প্রাণপ্রবাহে নদী : মিল্টন বিশ্বাস

‘মানবজীবন সে তো/ গঙ্গায় ভাসন্ত বাছাড়ির নাও।/ ফুটো থাকলেই টানতে থাকে তলানিতে/ আবার—/ মানবজীবন সে তো/ বর্ষার জোয়ার ভাটা/ জলেঙ্গার জল।/ দু দণ্ড জোয়ার তো চার দণ্ড ভাটা/ চার দণ্ড সুখ তো আট দণ্ড দুঃখ।/ তবে অবাক হবার কিছু নেই।’ মানবজীবন ও নদীর সাদৃশ্য এভাবে উত্থান-পতন, ভাঙা-গড়ার রূপকে চিরকাল চিত্রিত হয়েছে। আর এভাবেই বিশ্বের সব ভাষায় লিখিত সাহিত্যের রূপকল্পে নদীর বহুমাত্রিক চিত্র আত্মপ্রকাশ করেছে। আদি মহাকাব্য মহাভারত-রামায়ণ কিংবা হোমারের ইলিয়াড-ওডিসি’র কাহিনি ব্যাপ্ত হয়েছে স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল জুড়ে। আর মর্ত্যের নদী সেখানে বিশাল অংশ দখল করে আছে। ধ্রুপদী সাহিত্যে তা ভারতীয় কালিদাস কিংবা…