নদীকে কী করে ভালবেসে ফেললাম আমি? কবে থেকে? নিজেকে প্রশ্ন করেছি অনেকবার। নদীর কাছে গিয়েও নিজেকে প্রশ্ন করেছি। আবার কখনও একলা আছি। টুপ করে একটা নদীর ছবি ভেসে উঠলো। কেন? হয়তো একটা শেকড় খুঁজতে চেয়েছি। জানি না। এখন প্রায়শই একটা ছবি দেখতে পাই। আমার বাবা রাজশাহীর (অধুনা নওগাঁ জেলা) আত্রাইয়ের পারে দাঁড়িয়ে আছে নৌকায় পার হয়ে বাড়িতে আসবে বলে। আমি সত্যিই দেখতে পাই। বাবা শুধু বলেছিল খুব ছোট্টবেলায় এক আনা দিয়ে বাবা আত্রাই নদী পার হতো। সাহেবগঞ্জ। ছোটবেলায় সব কিছু হঠাৎ ছেড়ে চলে আসা। এটুকুই বাবা বলতে পেরেছিল। বুকের ভিতর…
Tag: যমুনা
নদীর কথা ‘নদীয়ার নদী’-র মতো – সুপ্রতিম কর্মকার
নদীতো নানাভাবে জীবনের কথাই বলে। জীবনের সাথে নদীর জুড়ে থাকার এক টুকরো উদাহরণ নদিয়া জেলা। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় মাঝামাঝি তার অবস্থান। নদিয়া নাম কেন হল? অনেক পণ্ডিতেরা বলেন নদী থেকেই নদিয়া নাম। এক সময় জেলাটাকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল একটা লোক ছড়া। ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর, নদয়ে(নদিয়াতে) এল বান’। নদ-নদীতে ভর্তি ছিল নদিয়া জেলা। এক পা এগোলেই একটা করে নদী পড়তো। নদী যেহেতু আমার যাপন সংসার, তাই প্রথমে শুরু করেছিলাম অঞ্জনা নদীকে খোঁজার কাজ। রবীন্দ্রনাথের নামের সাথে যুক্ত হয়ে থাকা এক নদী। শুরু রবীন্দ্রনাথ কেন!নজরুল, মাইকেল মধুসূদন সকলেই অঞ্জনার রূপে মোহিত হয়েছিল।…
ব্রহ্মপুত্র নদ না নদী?
ব্রহ্মপুত্র নদ না নদী? পার্থক্যওয়ালারা দাবি করেন, ‘নদীর শাখা আছে, নদের শাখা থাকে না।’ আরও বলেন, যে জলস্রোত কোনো পর্বত, হ্রদ, প্রস্রবণ ইত্যাদি হতে উৎপত্তি লাভ করে ও বিভিন্ন জনপদের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রে বা নদী বা হ্রদে পতিত হয়, তাকে নদী বলে। যেমন- ভারতের গঙ্গা, যমুনা, গোদাবরী, কাবেরী ; বাংলাদেশের মেঘনা ইত্যাদি। তারা আরও বলেন, ‘যখন কোনো নদী হতে কোনো শাখা নদীর সৃষ্টি হয় না, তখন তাকে বলা হয় নদ। যেমন- ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অজয়, বাংলাদেশের কপোতাক্ষ ; ভারত – বাংলাদেশের ব্রহ্মপুত্র ; মিশরের নীল ইত্যাদি নদ।’ একটু খুঁজ…
শুভ জন্মদিন নদীবন্ধু মনির হোসেন
সুমন মজুমদার ।। আজ নদীবন্ধু মুহাম্মদ মনির হোসেন এর জন্মদিন। ১৯৮৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর কুমিল্লায় এক সাধারণ পরিবারে জন্ম নেন তিনি। নদী যদি হয় এই বাংলা বদ্বীপের প্রাণ, তাহলে কোথাও না কোথাও তার প্রাণের মানুষ আছে নিশ্চই। যিনি নদী ও তার দুই পাশের জনপদকে ভালোবেসেছেন স্বজনের ভালোবাসায়। নদীর সুখ-দুঃখ, আনন্দ, বেদনার নানা গাঁথা যিনি তুলে ধরেছেন জনসমক্ষে। দূষণ দখলের এই দুঃসময়েও বলেছেন নদীর পূনরুজ্জীবনের কথা। এমনই এক নদী প্রেমি মানুষ মনির হোসেন। নদীর পরিবেশ, প্রতিবেশ ও তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিরলস কাজ করে যিনি পরিচিতদের কাছ থেকে খেতাব পেয়েছেন নদীযোদ্ধা হিসেবেও।…
জীবন-নদী যাত্রা ।। তাপস দাস
ঘরে ফেরার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বেড়িয়ে পরা। তবে একটু ঘুর পথে। এবারের সাথী বন্ধুবর জন্তত ঘোষ দা। দীর্ঘদিনের সাথী সামাজিক সমস্ত কাজের কমরেড, জীবিকায় সহকর্মী। ওর বেড়ে ওঠা দক্ষিণ দিনাজপুরে। অবিভক্ত দিনাজপুরের গৌরব ওর অন্তরের ভিত। সেই ভিতের উপর তৈরি আদ্যপান্ত বাঙালি। বাইক যাত্রায় এমন সাথী পথের ক্লান্তি দূর করে এগিয়ে চলার উৎসাহ যোগায়। জানি প্রতিবারের মতন এই যাত্রার অগোছালো নোটই শেষ হবে পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা তৈরি হবে না। তাই, রিভার বাংলা সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ ভাইয়ের আহ্বানে রিভার বাংলা ডট কম এর পাঠকদের সামনে রইলো জীবন-নদী যাত্রার এই দিনপঞ্জী। ১৩ নভেম্বর…
আমার দাড়াইন ।। সুমনকুমার দাশ
ছোট্ট মফস্বল শহর ঘুঙ্গিয়ারগাঁওয়ের পাশ দিয়ে বহে গেছে যে নদ-তা দাড়াইন। আমাদের শৈশব-কৈশোরের খেলার সঙ্গী। যতক্ষণ চোখ লাল না হতো, ততক্ষণ দাড়াইনের তরল বুকে চলত দাপাদাপি। ফাল্গুন-চৈত্রের নিস্তরঙ্গ রূপ আর জৈষ্ঠ্যের যুবক দাড়াইনের কত ফারাক! আষাঢ়-শ্রাবণে ফুলে-ফেঁপে দাড়াইন মিশে যেত হাওরের বুকে। মাঝ নদীতে গেরাফি-ফেলা নৌকার মতোই পুরো জনপদের গ্রামগুলো যেন ভাসত হাওরজুড়ে! শুষ্ক আর বর্ষা-দুই সময়ে দুই রূপ দাড়াইনের। সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার শ্রীহাইল হোসেনপুর গ্রাম থেকে পাশ্ববর্তী দিরাই উপজেলার ধলবাজারের কাছাকাছি পর্যন্ত সাপের মতো এঁকেবেঁকে গেছে দাড়াইন নদ। বর্ষায় পানিতে থইথই করলেও শুষ্ক মৌসুমে কোথাও কোথাও হাঁটুসমান পানি থাকে।…
বানের পানি চোখের জল একাকার!
মো.ইউসুফ আলী ।। দেশে একদিকে করোনা আরেক দিকে বন্যা। আবার এসেছে ঈদ। সাধারন খেটে খাওয়া মানুষের কাজকর্ম স্থবির। কি করবে মানুষ! কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? কোথায় মিলবে ঠাঁই? এসব হিসেব মিলাতে দিশেহারা আজ দেশবাসী। করোনা আক্রান্তে কাপঁছে দেশ। প্রতিদিন হাসপাতাল গুলেতে বাড়ছে করোনা রোগির সংখ্যা। এ মহামারি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। অতিরিক্ত রোগিতে কাহিল ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী আজ পর্যন্ত সারাদেশে আক্রান্ত রোগীর সংখ্য একলক্ষ একাশি হাজার একশ উনত্রিশ জন। মৃত্যু হয়েছে অন্তত দুই হাজার তিনশ পাঁচ জনের। তবে সরকারি হিসেব এমনটা হলেও সারাদেশে বাসাবাড়িতে…
যে জলে জীবন জ্বলে ।। রেজাউল করিম
ছেলেবেলা থেকেই নদী ও প্রকৃতির সাথে আমার জীবন জড়িয়ে আছে আষ্টেপৃষ্ঠে। নদী ও প্রকৃতির শান্ত-সৌম্য-স্নিগ্ধ রূপ মাধুর্য দেখে যেমন মুগ্ধ ও বিমোহিত হয়েছি তেমনি এর রুদ্র রূপ, ঝঞ্জা-বিক্ষুব্দ ভয়ংকর নিষ্ঠুরতা দেখে হয়েছি অস্থির, কখনোবা বেদনায় নীল। প্রবল ঢেউ ও ঝরো হাওয়ায় কখনো বা বিপন্নবোধ করেছি মেঘনা, পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার মাঝনদীতে। উত্তাল ঝড়ো হাওয়ায় ডুবে মরার হাত থেকেও দু’একবার প্রাণে বেঁচে ফিরেছি! আমার বেড়ে ওঠা খাল-বিল-নদী-নালা বিধৌত গ্রামীণ জনপদে। আশৈশব বিচরণ করেছি অনাবিল ও স্নিগ্ধ প্রকৃতির মাঝে। নানা ধরনের দেশীয় নৌকা, লঞ্চ, স্পীডবোট, স্টীমারসহ নানান ধরনের জলযানে চড়ে নদীপথে ভ্রমণ করেছি…
হালদা নদীকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা: যৌক্তিকতা ও বিশ্লেষণ
ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া ।। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ- কথাটি কেবল আক্ষরিক অর্থেই নয়, সামগ্রিক অর্থেই সত্য। বাংলাদেশের মানচিত্র নদীর কল্যাণেই সৃষ্ট। ঐতিহাসিক কাল থেকেই বাংলা ভূখণ্ডের মাটি ও মানুষের সঙ্গে নদ-নদী ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। সবুজ শ্যামল সৌন্দর্যের চাবিকাঠির একমাত্র বাহক ও নিয়ন্ত্রক। বাংলাদেশে সভ্যতার ক্রমবিকাশ, যোগাযোগ- অর্থনীতির মূল ভিত্তি রচিত হয়েছে নদীকে কেন্দ্র করে তেমনি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও মূল ভিত্তি নদী নির্ভর। সাহিত্য, গান, নাটক, চলচ্চিত্রে নানাভাবে উঠে এসেছে নদীর প্রসঙ্গ। অথচ আমরা নদীকে নিয়ে কতটুকু ভাবি বা জানি। যে দেশ নদীর কল্যাণে গড়ে উঠেছে সেদেশেই নদী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত…
নদী একটাই ।। রাজেশ ধর
‘নদী’…কলকল, কলকল… ঢেউতোলা এই শব্দটা প্রথম কবে শুনেছিলাম ? কবে প্রথম ‘নদী’র ডাকে বুকের রক্ত ছলকে উঠেছিল? প্রথমবার কবে জেনেছিলাম নদী আসলে জলের ধারা…সে জল শীতল, মিষ্টি আবার কখনও নোনা পানি! সেদিন কি জেগেছিলাম? নাকি ছিলাম ঘুমিয়ে…স্বপ্নের মধ্যে? দুই কুল…দুপারকে বেঁধে রাখতে রাখতে এক নিমেষেই নদী… সব গিলে খেয়ে নিতে পারে! নির্বিচারে মুছে যেতে পারে– ডাঙা, ফসল, গাছপালা,… সাতমহলা কীর্তির অহংকার। নদী নাকি সে নিয়তি? তারই বা জ্ঞান হল কবে? জানি না…বলতে পারব না। দুই. জন্ম থেকে প্রায় বছর তিরিশ পর্যন্ত এক বিশাল ঘিঞ্জি শহরে বাস আমার। সে শহরের পশ্চিম…
“নদী সেতু হয়ে আছে আমাদের বন্ধুত্বে”
তাঁদের বন্ধুতা অনেকদিনের। নদীই বেঁধে দিয়েছে বন্ধুতার এই পথ। নদীই দুই বন্ধুর সেতু। ভারতের সাংবাদিকও পরিবেশকর্মী তুহিন শুভ্র মন্ডল এবং নদী বিশেষজ্ঞ সুপ্রতিম কর্মকার। নদীকে কেন্দ্রে রেখে তাদের এই আড্ডায় প্রথম থেকে শেষপর্যন্ত জুড়ে থাকলো নদীই। উঠে এল স্থানীয় ও দেশীয় নদী, নদীর সমস্যা, সমাধানের পথ। কলকাতায় অনুষ্ঠিত এই আড্ডার সবটুকু রিভার বাংলার পাঠকদের জন্য উপস্থাপন করা হলো।- সম্পাদক, রিভার বাংলা। তুহিন শুভ্র মন্ডল: সুপ্রতীম, তোমাকে নদীমাতৃক সবুজ শুভেচ্ছা।নদীই আমাদের বন্ধুত্বের সেতু। কি বলো? সুপ্রতিম কর্মকার: তুহিন দা, তুমি আমার একজন নদী বন্ধু। তাই তোমাকেও জানাই একনদী শুভেচ্ছা। তুমি দেখো,…
তিনি ছিলেন নদীর সন্তান
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আজ তাঁর জন্মদিন। আজ আরও একবার অনুভব করলাম প্রবল ভাবে যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন আক্ষরিক অর্থেই নদীর সন্তান। তাই লেখার তাগিদ অনুভব করলাম।যদিও এটা খন্ডাংশ বলাই শ্রেয়। নদীর সন্তান না হলে কেউ এভাবে নদীকে তাঁর চিন্তা- চেতনা-ভাবনা- লেখায় জড়িয়ে নিতে পারেন?! অথচ কি আশ্চর্য! তাঁর জীবনের প্রথম ভাগে নদীর সাথে তার সংযোগ আমরা সেই অর্থে পাইনা। নদী প্রবাহিত হয় সর্পিল গতিতে, আঁকাবাঁকা পথে। আমাদের জীবনের পথও কি তেমন নয়? বিচিত্র সব ইতিহাস যেন লুকিয়ে আছে নদীর সব বাঁকে বাঁকে। একটু যদি দৃষ্টি প্রসারিত করি তাহলে দেখবো যে দুই…