শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ সন্ধ্যা ছয়টায় ঢাকার আগারগাঁয়ে অনুষ্ঠিত হলো রিভার বাংলা সম্পাদক ও লেখক ফয়সাল আহমেদ এর সদ্য প্রকাশিত বই “মুক্তিযুদ্ধে নদী” নিয়ে আলাপ।
বইটির প্রকাশক প্রতিষ্ঠান রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার-আরডিআরসি’র শেরেবাংলা নগর আগারগাঁওস্থ কার্যালয়ে উক্ত আলাপের আয়োজন করা হয়।
আরডিআরসি’র চেয়ারম্যান ও নদী গবেষক মোহাম্মদ এজাজ এর সভাপতিত্বে ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক সত্যজিৎ রায় মজুমদার এর সঞ্চালনায় উক্ত আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন- কথাশিল্পী আহমদ বশীর, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ের গবেষক ও লেখক আলতাফ পারভেজ, নদী অধিকার মঞ্চের সদস্য সচিব শমশের আলী, গল্পকার সৈয়দ কামরুল হাসান, পরিবেশকর্মী ইবনুল সাঈদ রানা, সাংবাদিক ও লেখক জাকারিয়া মন্ডল, পরিবেশ ও নদীরক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন, লেখক ও সাংবাদিক গাজী মনছুর আজিজ, প্রকাশক রহিম রানা, আরডিআরসি’র জি আই এস এক্সপার্ট মো. সাইফুল ইসলাম রাজু , রিসার্চ এসিস্টেন্ট মাহবুবুর রহমান রবিন ও ‘মুক্তিযুদ্ধে নদী’ বইটির লেখক ফয়সাল আহমেদ প্রমুখ।
গবেষক ও লেখক আলতাফ পারভেজ বলেন- বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়ো রাজনৈতিক অর্জন হলো মুক্তিযুদ্ধ। আমরা যে, যে রাজনৈতিক আদর্শের থাকি না কেন ‘মুক্তিযুদ্ধ’ যে একটি বড়ো অর্জন এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। আর প্রাকৃতিকভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়ো সম্পদ নদী। সেটাও অস্বীকার করার উপায় নেই। তার মানে একটি বইয়ের শিরোনামে দুটো বিষয় চলে এসেছে। কিন্তু দুটো বিষয়ের এখনকার অবস্থাটা কী। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান যে অঙ্গিকার- সাম্য মৈত্রী স্বাধীনতা, বিষয়টা এখন আর আলাপে নেই। মুক্তিযুদ্ধের যে মুল বিষয় তা নিয়ে আর কিছু করনীয় নেই। আমি বইটি এখনও পড়িনি। আমি পড়বো এবং বইটি নিয়ে লিখবো। তবে আমি অনুমান করতে পারছি বইতে কী আছে। আমাদের যুদ্ধ পরিকল্পনায় নদী ছিল। পাকিস্তানি বাহিনী যে হেরেছে তার একটি বড়ো কারণ নদী। আমি মনে করি নদীকে সংরক্ষণ করা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার একটি বড়ো কাজ।
নদী অধিকার মঞ্চের সদস্য সচিব শমশের আলী বলেন- “মুক্তিযুদ্ধে নদী” একটি ভালো কাজ হয়েছে। এজন্য লেখককে ধন্যবাদ জানাই।
সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক জাকারিয়া মন্ডল বলেন- এখন যেহেতু নদী নাই, সংখ্যা কমে যাচ্ছে তখন আলোচনা হচ্ছে নদীকে দখল মুক্ত করো, দূষণ মুক্ত করো। এরমধ্যেই নদীর মূল আলোচনাই চাপা পড়ে গেছে। নদীর যে ইতিহাস-ঐতিহ্য, কালচার, মিথ সবই চাপা পড়ে গেছে। সেই জায়গা থেকে এই বই “মুক্তিযুদ্ধে নদী” একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে। যদিও আমি মনে করি মুক্তিযুদ্ধে নদীর ইতিহাস নিয়ে বই এত ছোট হওয়া উচিৎ নয়। কিন্তু সেটাও তো পূর্বে ছিল না।
বইটির প্রকাশক প্রতিষ্ঠান আরডিআরসি’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন- মুক্তিযুদ্ধে নদী নিয়ে আমি অনেক দিন ধরে কাজ করছি। এই কাজ করতে গিয়ে দেখলাম যে ফয়সাল ভাইও একই কাজ করছে। যেহেতু বিষয় এক, তখন আমরা যৌথভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। সে সূত্রেই “মুক্তিযুদ্ধে নদী” বইটি আমরা প্রকাশ করেছি।
লেখক ফয়সাল আহমেদ বলেন- নদী প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আমরা দখল-দূষণের বাইরে আলোচনা করি না। অথচ এর বাইরে নদীর আরও অনেক প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনার সুযোগ আছে। তেমনি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নদীর অবদান নিয়ে কথা বলা দরকার। অনুসন্ধান দরকার কোথায় কীভাবে নদী সহায়ক শক্তি হিসেবে একাত্তরে অবদান রেখেছে। এসব নিয়েই আমার বই “মুক্তিযুদ্ধে নদী”। আমি মূলত একাত্তরে নদীর অবদান নিয়ে আলোচনার জন্য চিন্তাটাকে উসকে দিতে চেয়েছি। এটি একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র। এখন চাইলেই আরও অনেকে এবিষয়ে কাজ করতে পারেন।