আন্তর্জাতিক নদী কৃত্য দিবসে তুহিন শুভ্র মন্ডল এর কবিতা- আত্রেয়ী, ও আমার আত্রেয়ী

আন্তর্জাতিক নদী কৃত্য দিবস

একটা নদী চেতনায় এসে মেশে

সে নদীর বুকে যখন সূর্য ওঠে,

সে যে কি অনিবার্য আলো!

সে নদীর বুকে যখন সূর্য অস্ত যায়, সে যে কি অপরূপ দৃশ্য!

সে আমার আত্রেয়ী, আমার প্রাণের আত্রেয়ী, আমার মনের আত্রেয়ী

প্রতি সকালে সে নদীর গায়েই তো হেলান দিয়ে বসে

প্রতি বিকালে, প্রতি সন্ধ্যায় ওর কাছে গিয়েই তো মনের কথা বলি

সেদিন সকালেও গিয়েছিলাম প্রিয় নদীর কাছে

কুয়াশার চাদরে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছিল সে।

ওরই মাঝে দেখলাম গুরুদয়ালকে। গুরুদয়াল হালদার

গত চল্লিশ বছর ধরে আত্রেয়ীর ওর মা।

ওকে লালন করে পালন করে পেটের ভাত দেয়

ওঁকে জিজ্ঞেস করলাম- কি গো, কি পেলে? কটা মাছ ধরলে?

গুরুদয়াল বললো- মাছ? পাই নাই বাবু

বললাম- পাও নি??

না বাবু, পাই নি।পাইনা তো এখন।

আগে রাইখরের ঝাঁক আসতো

সে এক জোয়ার

আগে কত পাছ পেতাম, কত ধরণের মাছ!!

এই বলে আবার ছপাং করে নৌকার উপর থেকে নদীর জলে জাল ফেললো গুরুদয়াল

কি গো! আমি চেঁচিয়ে উঠি

এবার কিছু পেলে?

গুরুদয়াল চিৎকার করে উঠলো

পাইছি পাইছি পাইছি বাবু

শুন্যতা হাহাকার

এবার বলে উঠলো ও

নদী টাক একটু জল দিতে পারো না তোমরা?

ওর বুকে বড় তেষ্টা পিপাসায় ওর বুকের ছাতি ফেটে যায় যে!

ওর বুকে বড় কষ্ট। বুঝতে পারোনা??

ও, মানুষ!

নদী যাদের জীবন ছিল, নদী যাদের ভাত দিত নদী ভাল নাই জন্য চলে গেল অন্য কোথা অন্য খানে

একটা কিছু করো মানুষ।

আমি বলে উঠলাম

চিন্তা কোরনা গুরুদয়াল

এ নিয়ে ভাবছে তোমার সন্তান

বালুরঘাটের মানুষ

এ জেলার। কলকাতা- দিল্লী- ঢাকাতে এ নিয়ে কথা হচ্ছে

বাইল্যাটারাল ডায়লগ

কাঁটাতার তাদের ভাগ করে দিলেও নদী তাদের আবার জুড়ে দিয়েছে

# যে আত্রেয়ী আমাদের জীবন

যে আত্রেয়ী আমাদের অহংকার

যে আত্রেয়ী আমাদের সংস্কৃতি

তাকে ভাল রাখবোই গুরুদয়াল

তাকে আমরা বাঁচাবো

সেই আত্রেয়ীতে আমরা জল আনবোই

সে আত্রেয়ীতে আমরা জল আনবোই

সে আত্রেয়ীতে আমরা জল

আনবোই…….

সংশ্লিষ্ট বিষয়