যে নদীর কাছে মনখারাপ জমা আছে- তুহিন শুভ্র মন্ডল

হলং

নদী ও পরিবেশ বন্ধু লেখকে তুহিন শুভ্র মন্ডলের জন্মদিনে রিভার বাংলার নদীমাতৃক শুভেচ্ছা


সেদিনটা মনে পড়ছে প্রিয় হলং নদী যেদিন তোমাকে ছেড়ে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম আর যদি না আসা হয় কোনওদিনও। আর যদি না হয় দেখা! আর একটু ভাল করে দেখে নিই তোমাকে। প্রতিদিনের তোমাকে। মন খারাপের সব গল্প জমা রেখে এসেছিলাম তোমার কাছে।

কেন রাখবোনা বলো? ছোটবেলা থেকে না দেখলেও, তোমার সাথে না মিশলেও অনুভবে মিশে গিয়েছিলে তুমি। পাঁচবছরেই হলং তুমি যেন পঞ্চাশের দীর্ঘ চিঠি দিয়েছিলে মনের ঠিকানায়। তাইতো তোমার গায়ে খেলা করা রোদের সংসার এই দেখো আজ পনের বছর বাদেও পরিষ্কার মনে রেখেছি। তখন যেমন খেলতো এখনও তোমার গায়ে তেমনই রোদ আর মাছেরা খেলা করে হলং? আর ঐ সেগুন পাতার ভেলায় চড়ে প্রজাপতিরা যে যেত ভেসে ভেসে তারা এখনও ভাসে তো! খুব জানতে ইচ্ছে করে।

হলং নদী

আজ পনের বছর হল তোমাকে ছেড়ে এসেছি। যেবার চলে এলাম তোমার বুকের উপর কাঠের পাটাতনের ব্রীজের উপর হেলান দিয়ে বলে এসেছিলাম ভাল থেকো। কেন বলবো না বলো ঐ পাঁচ বছরে তুমি যে মরমে প্রবেশ করেছিলে। তিরতির করে তোমার বয়ে যাওয়া জলের হালকা স্রোত আমার চেতনায় দোলা দেয় হলং, আমার প্রিয় নদী।

এখন তোমার সাথে দেখা হয় না আর। কিন্ত আমি ঠিক বুঝতে পারি তুমিও আমার কথা মনে রেখেছো। তাই তো তোমার মনখারাপ হলে আমার কাছে চিঠি আসে। আর তুমি ভাল থাকলে গাছ পাতা আর পাখিরা ধরে গান। জলদাপাড়া জঙ্গলের বুকের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রিয় হলং তুমি আজও আমার বুকের মধ্যে আছো।কেন জানো? তোমার কাছেই আমার সব মনখারাপের গল্প জমা আছে।আর নিশ্চয়ই বুঝতে পারো এখনও তোমার বুকের ভিতর আমার মনখারাপের চিঠির পাহাড় জমে উঠছে!

জানো, মন খারাপকে আমি মনে মনে ধন্যবাদ দিই। কেন জানো? ওরা মনে পড়ায় তোমাকে। আমার প্রিয় হলংকে। আমার ভালবাসার হলং নদীকে।

 

আরও পড়তে পারেন….
সত্যজিৎ রায়ের সিনেমায় নদী সংকেত দেয় 
বরাকের স্মৃতির ঊর্মি : মো. আজাদ বারী শিপু 

সংশ্লিষ্ট বিষয়