বলা হয় প্রকৃতির সাথে নারীর প্রকৃতিগতভাবেই মিল আছে। নদী তো প্রকৃতির অঙ্গ।এ নিয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে রিভার বাংলাতেই একটি প্রতিবেদন লিখেছিলাম। সেখানে বলবার চেষ্টা করেছিলাম নদীর সাথে নারীর সম্পৃক্ততা নিয়ে। আজ ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর অ্যাকশন অফ রিভার্স। আজ বলতে চাই নদীর সুরক্ষায় নারীর ভূমিকা প্রবল। আর এটাই এবারের এই নদী দিবসের থিম।
নদী রক্ষায় বরাবর দুটো কর্মধারাতে বিশ্বাস করেছি। একটা নদী সচেতনতা অভিযান।আরেকটা হলো অ্যাকশন। অর্থাৎ নদীর কথা বলতে প্রয়োজনে রাস্তাতে নামতে হবে। শুধু কথা নয়, কাজ করতে হবে। এই ধারায় বিশ্বাসী হয়ে দু’হাজার ছয় সাল থেকে শুরু করেছিলাম আমাদের নদী ও পরিবেশ রক্ষার যাত্রা।আর এই যাত্রায় নারীর অংশগ্রহণ আমরা বিভিন্ন ভাবেই পেয়েছি। অংশগ্রহণকারী নারীদের মধ্যে শিক্ষিকা, কবি, নৃত্যশিল্পী, গায়িকা, নাট্যকর্মী, ছাত্রী কে নেই।বিভিন্ন সময়েই তারা নদীর জন্য কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
মনিদীপা বিশ্বাস কীর্তনীয়া, অনন্যা সরকার, শতাব্দী ভট্টাচার্য মন্ডল, সোমদত্তা চক্রবর্তী, মৌলিশ্রী পাল, তনুশ্রী প্রামানিক, সাথী মন্ডল এমন কত নাম বলবো? আর আমার ছাত্রীরা।ওরাই তো নদী কর্মসূচির মুখ। এদের কথা বললাম কেন? কেননা আমি বিশ্বাস করি ওরা এসে নদী আন্দোলনকে জোরদার করেছে। সাহস দিয়েছে আর এগিয়ে যেতে বলেছে বারবার। নারীর জীবন আর নারীর জীবন সমার্থক। নদীর জন্য কোন বিশেষ দিন হয়না।তবু এই যে চোদ্দ মার্চ।এর আলাদা গুরুত্ব আছে।
আসন্ন লোকসভা ভোটে নদী ইস্যু হোক, চাইছেন নেটিজেনরা
নদী ও নারী: এ যে নিজের সাথে নিজের কথোপকথন
বলতে চাই নারীরা আসুক। আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে বলুক নদী আক্রান্ত। তাই আক্রান্ত আমাদের সন্তানেরা। আজকে দিবসের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সোচ্চার হোক নারী। লড়াই শুরু করুক বাড়ী থেকে। কেননা জল রক্ষার প্রাথমিক পাঠ নারীরাই দেয়। জলের প্রাথমিক ব্যবহারকারী তারাই। তাই তাদের আরো বৃহত্তর দায়িত্ব আছে। দায়িত্ব আছে আরো মানুষকে নদী চেতনায় জাগিয়ে দেওয়ার। এই কর্তব্যবোধ তাদের বুঝে নিতে হবে আজ।
নদী নিয়ে শুধু কবিতা গল্প গান নাটক নির্মাণের দিন আর নেই আজ। আজ মাঠে নেমে পড়ার দিন।নদীর বুকে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলে ওঠার দিন নদী ভালো নেই, তাই ভালো নেই আমরা। আমাদের ভবিষ্যত। তাই আমরাই গড়বো নতুন পথ।নদীর পথ। তবেই আজকের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকশন ফর ডে অফ রিভার্স-এর বাইশ তম উদ্যোগ সার্থক হবে। সার্থক হবে নদীর সুরক্ষায় নারীর ভূমিকার বিষয় নির্বাচন ।