এম জে এইচ বাতেন >> কিশোরগঞ্জ শহরের বুক দিয়ে প্রবাহিত নদী নরসুন্দা। এই সময়ে নদীতে প্রচুর কচুরিপনা জন্ম নিয়েছে। যে কারণে বর্ষাকালেও নদীতে পানি দেখা যাচ্ছে না। নষ্ট হচ্ছে নদীর সৌন্দর্য। এতে শহরবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নদী খনন করার পর নদীতে যে স্রোত আসছে। সেই স্রোত কচুরিপনাকে ভাসিয়ে নেওয়ার মত শক্তি নেই। সরেজমিন গিয়ে শহরের পুরান থানা ব্রীজের কাছে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, কচুরিপনার উপর ভর করে নদীতে কচুগাছ ও এলশা গাছের জন্ম হয়েছে। যা দেখলে মনে হয় নদীর মাঝখানে পানির উপর কচু গাছের বাগান। মাছ শিকারীরা ধর্ম জাল দিয়ে মাছ ধরার জন্য কচুরিপনা পরিস্কার করার কারণে মাঝে মধ্যে অল্প কিছু জায়গায় নদীর পানি দেখতে পাওয়া যায়।
এই কচুরিপনা বর্তমানে শহরের জন্য অভিশাপ। কচুরিপনা পঁচে মশার জন্ম হচ্ছে। নদী পাড়ের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। কচুরিপনার কারণে নদীতে মাছের সমস্যা হচ্ছে। সারাদেশে এখন বন্যার পানি থৈ থৈ করছে। নরসুন্দার পানিও বেড়ে কিছু কিছু জায়গায় নদী পাড়ের উপরে উঠে পরেছে। তারপরও কচুরিপনা নদীর বুককে এমনিভাবে দখল করে রেখেছে, যা নদীর স্রোত কচুরিপানার জটকে ভেঙ্গে ভাসিয়ে নিতে পারছে না।
কচুরিপনার কারণে বর্ষা মৌসুমে নদীতে যে পরিমান মাছ থাকার কথা ছিল তার চারভাগের এক ভাগ মাছ ও নদীতে নাই।নদীতে মাছ শিকারীদের মাছ ধরতে তেমন চোখেও পরে না। নদীতে কোনো নৌকা দেখা যায় না। নদী পাড়ে এসে যেখানে মানুষ নৌকায় চড়ে আনন্দ করবে, সেই নদীতে নৌকা চলার কোন পরিবেশই নেই। নরসুন্দাকে এখন মরা নদী মনে হয়। শহরের বড়বাজার মাছমলের পিছনে নদীতে ফেলা হচ্ছে ময়লা। কেউ মানছে না আইন।
কিশোরগঞ্জের প্রবীণ সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক মু আ লতিফ রিভার বাংলাকে বলেন, নরসুন্দা নদী আমাদের কিশোরগঞ্জবাসীর জন্য আশীর্বাদ আর এই নদীটি সুন্দর রাখার দায়িত্ব জনগণ ও নদীর সাথে জরিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। গত বছর প্রশাসন নদীটি পরিস্কার করার ফলে নদীটি অনেক সুন্দর ছিল ।এ বছর নদী পরিস্কার না করার ফলে কচুরিপনা নদীকে ভাগাড়ে পরিণিত করেছে। তিনি দাবী করেন, নদীটি যেন সব সময় আশীর্বাদ হয়ে থাকে।
স্বাস্থ্য ও মানবাধিকার কর্মী মো: রুহুল আমীন রিভার বাংলাকে জানান, “কচুরিপনার জন্য খরস্রোতা নরসুন্দা নাব্যতা হারিয়েছে। নদীতে স্রোত না থাকার কারণে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।মানুষের ফেলা বর্জ জমাট হয়ে নদী ভরাটে সহায়তা করছে। আর্বজনা, কচুরিপনা এক জায়গায় দীর্ঘদিন জমাট হয়ে, পঁচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি করছে। পরিবেশ দূষণ করছে। এতে নদীর সৌন্দর্য হারাচ্ছে।”
উল্লেখ্য নরসুন্দা নদী পুনঃখনন ও শোভাবর্ধন প্রকল্প ২০১৬ সালে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এ নিয়ে শুরু থেকেই নিম্নমানের কাজের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। শহরবাসীর দাবি প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমের আগেই কচুরিপনা পরিস্কার করে নদীর সৌন্দর্য্ রক্ষা করা হোক।