।। রিভার বাংলা ডট কম ।।
আমার স্বচক্ষে দেখা ও বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে প্রাচীনকালে নরসুন্দা নদ থেকে সৃষ্ঠ ফুলেশ্বরী একটি খরস্রোতা বৃহৎ নদী ছিল। কিশোরগঞ্জ সদরের নীলগঞ্জ হতে এটি নরসুন্দার শাখা নদী হিসেবে তাড়াইলের তালজাংগা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম হয়ে রাউতি ইউনিয়নে আসে।রাউতির কুরপাড় হয়ে চেংগুরিয়া, কৌলি, হরিগাতী, কারংকা,বানাইল,দাউদপুর, নওগাঁ হয়ে কেন্দুয়া উপজেলার গগডার পাশ দিয়ে সেকান্দরনগর গ্রাম বেধ করে বোরগাঁও দিয়ে তারাইলের সূতী নদীর সাথে মিলিত হয়।যা এখন পথে পথে বাকরুদ্ধ মৃতপ্রায়।
বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলাকবি ও বাংলা মঙ্গল কাব্যের প্রথম সংকলক( আত্মীয়সূত্রে প্রাপ্ত কবি নারায়ন দেবের) চন্দ্রাবতীর বাড়ীর পেছন দিয়ে বহমান ও স্মৃতি বিজড়িত নদী ফুলেশ্বরী।
নকশাঁ ম্যাপে এখনও নদীটি আছে।বাস্তবে দেখতে বড় খালের মতো।চন্দ্রাবতী ও জয়ানন্দ প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এই নদীতে আত্মাহুতি দেন।
আরো পড়ুন…
ইবি রিভারাইন পিপল’র আয়োজনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
নদীভাঙনে দিশেহারা চার জেলার মানুষ : জুনাইদ আল হাবিব
মৃতপ্রায় নদ- নদীগুলোর প্রাণ সঞ্চার হোক- ফয়সাল আহমেদ
১৭৭৮ সালের ভূমিকম্পে রাউতির পেছনে এটি বাকরুদ্ধ হয়।স্হানটিকে কুরপাড় বলে।
বিশাল একটি হ্রদের সুষ্টি হয়।কুরটি এখনো অনেক বড়।নদী ও নারীর মহাত্মতা এখানেই।
চন্দ্রাবতীর বিসর্জন আর ফুলেশ্বরীর যৌবন হারানো।এটি আমার বাড়ীর সামনে দিয়ে গেছে।এই নদীর তীরেই আমার বাড়ি।কবি চন্দ্রাবতীর পিতা দ্বীজ বংশী দাস এই নদীতে দস্যু কেনারামের কবলে পড়েছিল।যা নিয়ে লিখেন কেনারামের পালা।
আজ মৃতপ্রায় ফুলেশ্বরী নদী।এই নদীতে ১৯৭১ এর জুনে হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি শরণার্থী নৌকা যাচ্ছিল ভারতের উদ্দেশ্যে।নান্দাইল উপজেলার ছয়আনী গ্রামের বাসিন্দা ছিল তারা।পথে এই স্হানে এলাকার কতিপয় শান্তিকমিটির দালালদের ডাকাতির কবলে পড়ে।খবর শোনে আমার বাবা ও এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসে।পরে মদন হয়ে ভারতে তাদের পৌঁছে দেন আমার বাবা। এখানে একটি বধ্যভূমিও রয়েছে।
লোকেশনঃ নওগাঁ,দাউদপুর,বানাইল(নদীর পার্শ্ববর্তী গ্রাম) তারাইল, কিশোরগন্জ।
শিক্ষক ও নদী রক্ষা আন্দোলন কর্মী
তাড়াইল, কিশোরগঞ্জ।