জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে ১৭-১৮ নভেম্বর ঢাকায় সমাবেশ

জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে ১৭-১৮ নভেম্বর ঢাকায় সমাবেশ

নদী, পরিবেশ ও জলবায়ু সংক্রান্ত ২৭টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের যৌথ আয়োজনে আগামী ১৭-১৮ নভেম্বর ঢাকায় জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে দুই দিনব্যাপি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির উদ্যোগে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সাবেক তত্বাবধায়ক সরকাররের উপদেষ্টা, মানবাধিকার কর্মী ও সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক নিখিল ভদ্র। সম্মেলনে মুল-বক্তব্য উপস্থাপন করেন সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব শরীফ জামিল।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ব্রতীর নির্বাহী পরিচালক শারমিন মুরশীদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেইঞ্জ জারনালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাওছার রহমান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর চেয়রম্যান ইবনুল সাইদ রানা, রিভার বাংলার সম্পাদক ও লেখক ফয়সল আহমেদ, এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভস এর সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন চৌধুরী এবং গ্লোবাল ল’থিংকার্স সোসাইটির ডেপুটি ডাইরেক্টর মাহির দাইয়ান।

সুলতানা কামাল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনরোধ ও জীববৈচিত্র রক্ষায় আমাদের নিজেদেরও ব্যক্তি জায়গা থেকে দায়িত্ব নিতে হবে। এছাড়া, জ্বালানি ব্যাবহারের ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্ব ক্রমান্বয়ে জীবাশ্ম জালানি ব্যবহার কমানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও আমাদের উপর এমন সকল পরিকল্পনা চাপানো হচ্ছে যার মাধ্যমে আমরা বেশি বেশি জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলন, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা

সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, প্রত্যেক বছর জলবায়ু সম্মেলন থেকে আমরা প্রত্যাশা করি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য কাজ করা হবে। তা সত্বেও, দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ধনী দেশগুলোর চরম অবহেলার কারণে গত ২৭-টি সম্মেলন তেমন কোন ফলপ্রসূ উদ্যোগ কার্যকর করতে পারে নি। সম্মিলিত উদ্যোগ ও ক্ষতিগ্রস্থদের প্রতি সংহতি জানানোর এখনই সময়! আসন্ন কপ-২৮ সম্মেলনে অংশ নিতে দুবাইয়ে সম্মিলিত হতে যাওয়া বিশ্বনেতাদের কাছে আমাদের দাবিগুলো ও অধিকারগুলো জোরালোভাবে উপস্থাপন করতে এই সময়টাতেই আমরা উক্ত সমাবেশের আয়োজন করতে যাচ্ছি। আমরা শুধু বাংলাদেশ নয়, জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত সমগ্র পৃথিবী চাই। পরবর্তীতে তিনি দুই দিন ব্যাপি এই সমাবেশের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

ব্রতীর নির্বাহী পরিচালক শারমিন মুরশীদ বলেন, মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হলে, জলবায়ু ন্যায্যতার অধিকার নিশ্চিত করা একটি মৌলিক প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষের মানবাধিকার আজ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, সঞ্জীব দ্রং বলেন, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার মাত্র পাঁচ শতাংশ জনগোষ্ঠী হচ্ছে আদিবাসী। এতদসত্বেও, এই পৃথিবীর মোট জীববৈচিত্রের ৮০ শতাংশ রক্ষা করে আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা। উন্নত বিশ্বের অপরিণামদর্শী উন্নয়ন দর্শন আমাদের মতো দেশগুলোর বাস্তুসংস্থানকে চরমভাবে আহত করেছে। আমাদের দেশেও বর্তমানে এরকম উন্নয়ন প্রবণতা তৈরী হচ্ছে। এসকল বিষয়ে আলোচনার জন্যই আমাদের এই জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে দুই দিন ব্যাপি সমাবেশ আয়োজিত হবে।

“Advancing Peoples’ Action Towards Just and Equitable Transition in Bangladesh” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে দেশী ও বিদেশী অংশীজনদের পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানি জনিত জলবায়ু সংকটের হুমকিতে থাকা উপকূলীয় ও অন্যান্য এলাকা থেকে প্রায় ৭০০ জন প্রতিনিধি এই আয়োজনে সরাসরি অংশগ্রহণ করবে। ইউএনএফসিসি/কপ – ২৮ এর পূর্বমূহুর্তে অশগ্রহণকারীদের থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার বিষয়ে সবিস্তর আলোচনা ও প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করার জন্য কার্যকরী একটি মাধ্যম হিসেবে এই আয়োজন কাজ করবে।

সমাবেশের আয়োজকবৃন্দ: ব্রতী সমাজ কল্যাণ সংস্থা, গণসাক্ষরতা অভিযান (সি এ এম পি ই), সেন্টার ফর আত্মস্ফেরিক পলিউশন (সি এ পি এস), স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (সি পি আর ডি), কোস্ট ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল ল থিংকার্স সোসাইটি (জি এল টি এস), ইন্ডিজিনাস পিপলস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস (আই পি ডি এস), লোকাল এনভায়রনমেন্ট ডেভেলপমেন্ট এন্ড এগ্রিকালচার সোসাইটি (লিডার্স),ন্যাশনাল রিভার আলাইন্স, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন, ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ (ডাব্লিউ কে বি)।

জাতীয় সহ-আয়োজক: বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম, বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজিনাস নলেজ (বি এ আর সি আই কে), এনভায়রনমেন্ট রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ই আর ডি এ), রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আর ডি আর সি), রিভার বাংলা ও নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এনডিএফ)।

আন্তর্জাতিক সহ-আয়োজক: এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট ফর ডেপ্ত এন্ড ডেভেলপমেন্ট (এ পি এম ডি ডি), এশিয়ান এনার্জি নেটওয়ার্ক (এ ই এন), জাপান সেন্টার ফর এ সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট এন্ড সোসাইটি (জে এ সি এস ই এস), ৩৫০.ওআরজি সাউথ এশিয়া, ওয়েল চেঞ্জ ইন্টারন্যাশনাল (ও সি আই) (TBC), ইন্সিটিউট অফ এনার্জি ইকোনমিক্স এন্ড ফিনান্সিয়াল এনালাইসিস (আই ই ই এফ এ), এল ডি সি ওয়াচ, গ্লোবাল গ্যাস এন্ড অয়েল নেটওয়ার্ক, ইউ এন ডি পি বাংলাদেশ এবং ওয়াটারকিপার এলায়েন্স।

আরও পড়ুন.. অঞ্জনা বাঁচাও আন্দোলন

সংশ্লিষ্ট বিষয়