তরীকুল হাসান, পাকুন্দিয়া [কিশোরগঞ্জ] : কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় সরকারিভাবে ব্রহ্মপুত্র নদ খনন শুরু করেছে বিআইডব্লিউটিএ। নদ খননের বালু দিয়ে ফসলি জমি ভরাটের দাবি জানিয়েছেন কৃষকেরা।
ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে জমিজমা ও বাস্তুভিটা হারা দেড় শতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদনের মাধ্যমে এ দাবি জানিয়েছেন।
ব্রহ্মপুত্রের পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা জানায়, উপজেলার চরকাওনা-মুনিয়ারীকান্দা গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছে। তাদের শতাধিক একর ফসলি জমি ও বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
তারা এখন অসহায় ও নিঃস্ব। জমিজমা ও বসতভিটা হারিয়ে ওই দুই শতাধিক পরিবার এখন ব্রহ্মপুত্র পাড়ের একটি সরকারি সড়কের ওপর ছোটছোট ঘর নির্মাণ করে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাঁদের দাবি নদী ভাঙনের কবলে পড়ে তাদেরই কিছু ফসলি জমি দেবে নিচু হয়ে গেছে। ওই নিচু হয়ে যাওয়া জমিতে ব্রহ্মপুত্র নদ খননের বালু দিয়ে ভরাট করে দিলে সেখানে তাঁরা ঘর নির্মাণ করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে পারবেন। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাওয়া যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদের পাকুন্দিয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া অংশটুকুর খনন কাজ শুরু হয়েছে। চলতি অক্টোবর মাস থেকে খনন কাজ শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ। ব্রহ্মপুত্র নদের খননকালে ওই বালু নদের পাড়ে সরকারি খাস জমিতে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। রাজস্ব খাতের আয় বাড়ানোর জন্য পরবর্তীতে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে তা বিক্রি করা হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, গত বছর ব্রহ্মপুত্র খননের জরিপ টিম এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। এসময় তারা ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের কবলে পড়ে দেবে যাওয়া ও নিচু হয়ে যাওয়া জমিগুলো ফিতা দিয়ে মেপে পরিমাপ করেন। তখন তারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দেবে যাওয়া জমিগুলো বালু দিয়ে ভরাট করে দেওয়ার আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এই আশ্বাস পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন নিরাপদ বাসস্থান নির্মাণ এবং কৃষিকাজ করার আশায় নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। কিন্তু চলতি অক্টোবর মাসে ব্রহ্মপুত্র খননের কাজ শুরু হলেও ওই নিচু এলাকা ভরাট না করে অন্য এক জায়গায় বালু স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন নিরাশ হয়ে হতাশায় ভুগছেন।
ব্রহ্মপুত্র পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক চরকাওনা গ্রামের নজরুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে জেলা বোর্ডের একটি সড়কের ওপর ক্ষতিগ্রস্ত দুই শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। তারা ৫০বছর ধরে ওই সড়কের ওপর ছোটছোট ছাপড়া ঘর নির্মাণ করে পরিবার পরিজন নিয়ে খুবই কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্থানীয় প্রশাসন যদি তাদের ওই নিচু জমিগুলো বালু দিয়ে ভরাট করে দেয় তাহলে সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন ঘর নির্মাণ করে পরিবার পরিজন নিয়ে থাকতে পারতেন। বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.নাহিদ হাসান রিভার বাংলাকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের লিখিত আবেদনটি পেয়েছি। বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে। ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নদী রক্ষার দাবিতে জেগেছে জনতা, জেগেছে রাষ্ট্রনায়ক
প্রসঙ্গ ফেনী নদী : রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকনের ৬ দফা