।। রিভার বাংলা ডটকম।।
ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভায় চিতারুম নদীর অবস্থান। প্রায় এক দশক আগে বিশ্বব্যাংক চিতারুমকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নদী হিসেবে উল্লেখ করে।
বর্তমানে অবশ্য চিতারুমের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি, ভারতের গঙ্গা ও চীনের ইয়োলোকে এই তালিকায় রেখেছে বিশ্বব্যাংক।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিরাপদ সুপেয় পানির যে মানদণ্ড যুক্তরাষ্ট্র নির্ধারণ করেছে তার চেয়ে এক হাজারগুণ বেশি বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ পাওয়া গেছে চিতারুমের পানিতে।
জানা গেছে, রোজ প্রায় ২৮০ টন বর্জ্য ফেলা হয় এই নদীতে। এর ঘোলা পানির ভেতরে তাকালে কিছুই দেখা যায় না। পানিতে প্রায়ই ভাসতে দেখা যায় বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ, গৃহস্থালি আবর্জনা ও বিভিন্ন প্রাণীর বিষ্ঠা। চিতারুম নদীর দূষণ এমন মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছেছে যে, কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিসংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
অন্যদিকে, নদীটির দূষিত পানির ওপর প্রায় তিন কোটি মানুষের জীবন নির্ভরশীল। এসব মানুষ এ নদীর পানি সেচ ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করে থাকে। অনেকে এ পানি পানও করে।
এ নদীটি প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ। জাভা ও বালি দ্বীপে সরবরাহ করা বিদ্যুৎ উৎপাদনেও ব্যবহার করা হয় এর পানি।
নদীর ঘোলা পানির ভেতরে তাকালে কিছুই দেখা যায় না। পানিতে প্রায়ই ভাসতে দেখা যায় বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ, গৃহস্থালি আবর্জনা ও বিভিন্ন প্রাণীর বিষ্ঠা। এই নদীর ধারেই ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে থাকেন ৫৪ বছর বয়সী ইউসুফ। নদীর পানি মারাত্মক দূষিত হলেও জীবনধারণের জন্য এই পানিই ব্যবহার করতে হয় তাঁকে। এর ফলে দেখা দিয়েছে চর্মরোগ। আর দূষিত পানির কারণে নষ্ট হচ্ছে ইউসুফের জমিতে জন্মানো ধান।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে ইউসুফ সুপ্রিয়াদি বলেন, ‘বর্ষাকালে যখন বন্যা হয়, তখন চারদিকে ছড়িয়ে নদীর দূষিত পানি। এতে আমার ধান নষ্ট হচ্ছে। হাত-পা চুলকাচ্ছে। যদি এভাবেই চলতে থাকে, তবে আমি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব। আর যদি এর পানি ব্যবহার বন্ধ করে দিই, তবে কৃষিকাজ ছেড়ে দিতে হবে। এ ছাড়া অন্য কোনো কাজ আমার জানা নেই।’
চিতারুম নদীর দূষণ এমন মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছেছে যে কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যঝুঁকি-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। ইন্দোনেশিয়ার সরকারের এখন লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে চিতারুমের পানি সুপেয় করে তোলা।