চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর দূষণ ও দখল রোধে গোলটেবিল আলোচনা

রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার ও  বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে ২১ জানুয়ারি, শনিবার চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর দূষণ ও দখল রোধে গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সকাল ১১ টায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল আলোচনায়  সভাপতিত্ব করেন রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ।

কর্ণফুলী নদীর দূষণ ও দখল রোধে নাগরিক অংশীদারিত্ব এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে শনিবার এই গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, স্থানীয় কাউন্সিলর, মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষকসহ নানা শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকে কর্ণফুলী নদীর দখল দূষণের বাস্তবতা তুলে ধরে দুটি গবেষণা উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক ড. মো আবুল হাসান ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের একটি  প্রকল্পের সদ্য সাবেক পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও আরডিআরসি ফেলো মুনির হোসেন চৌধুরী।

এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের চেয়াম্যান অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র মো. গিয়াসউদ্দিন, কাউন্সিলর কাজী মো নুরুল আমিন মামুন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নগর পরিকল্পনাবিদ সাইয়িদ ফুয়াদুল খলিল আল ফাহমি, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশিকুল ইসলাম, নদী গবেষক ও মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী, পরিবেশ সংগঠক হাসান মারুফ রুমী, সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ রানা, নাগরিক অধিকার কর্মী আমিনুর রসুল, বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. মোনির হোসেন, নদী আধিকার মঞ্চের সদস্য সচিব শমশের আলী, রিভার বাংলার সম্পাদক ও লেখক ফয়সাল আহমেদ, পরিবেশ ও নদী রক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন, কর্ণফুলী সাম্পান মাঝি ফেডারেশনের সভাপতি পেয়ার আলী, কর্ণফুলী সুরক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শেখ দিদারুল ইসলাম প্রমুখ।

ছবিতে বাম থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া, আরডিআরসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ, বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. মোনির হোসেন, নদী আধিকার মঞ্চের সদস্য সচিব শমশের আলী, পরিবেশ ও নদী রক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন। ছবি: রিভার বাংলা

সভায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই নদী হলো সোনার ডিম পাড়া হাঁস। সবাই শুধু ডিমটাই খেতে চায়। হাঁসের যত্ন আর কেউ নেয় না। কর্ণফুলী নদী নিয়ে নানান আলোচনা-সমালোচনা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়ে ওঠে না। কারণ চট্টগ্রামের একমাত্র প্রধান সমস্যা সমন্বয়হীনতা।

মোহাম্মদ এজাজ

 

 

 

বৈঠকে আরডিআরসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ সম্প্রতি নদী রক্ষা কমিশনের একটি প্রকল্পের জরিপে উঠে আসা ২৪শত  দখলদারের নাম প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন

 

 

 

 

 

 

একই অভিযোগ করেন বৈঠকে উপস্থিত অন্যান্য আলোচকরাও। বৈঠকে আরডিআরসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ সম্প্রতি নদী রক্ষা কমিশনের একটি প্রকল্পের জরিপে উঠে আসা ২৪শত  দখলদারের নাম প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। একই দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের মো. মনির হোসেন।

এখানে উল্লেখ্য- ‘৪৮ নদী সমীক্ষা’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের আওতায় এই দখলদারদের তালিকা করা হয়। ২০১৮ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৩৩ কোটি টাকা, যার মধ্যে ২৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও সেনাবাহিনী কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ৩৭টি খালে পরিচালিত জলাবদ্ধতা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে জানিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র মো. গিয়াসউদ্দিন বলেন- যেহেতু সিডিএ বা সেনাবাহিনী নির্বাহী আদেশে কাজ করে ফলে সমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই।

বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন কর্ণফুলী সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি কামাল পারভেজ।

অনুষ্ঠানটির সহ আয়োজক ছিল ‘হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরি’ ও পরিবেশ ও নদী রক্ষা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল কর্ণফুলী সুরক্ষা পরিষদ।

আরও পড়ুন…

অনুষ্ঠিত হলো “মুক্তিযুদ্ধে নদী” নিয়ে আলাপ

ফয়সাল আহমেদ এর বই ‘মুক্তিযুদ্ধে নদী’ নিয়ে আলাপ শুক্রবার

সংশ্লিষ্ট বিষয়