আমি নরসুন্দা বলছি – মীরন রশীদ ব্রক্ষ্রপূত্রে জন্মেছিলাম শত জনম আগে ধনুর সাথে মিশেছিলাম প্রেমের অনূরাগে। আমার কোলে জন্মেছিলো ফুলেশ্বরী সূতী দু’কন্যাও মরছে আজ যেন অতীত স্মৃতি। আমার নামটি জানে কিন্তু বিজ্ঞ সভাসদ আমিতো সেই প্রিয় তোমার নরসুন্দা নদ। শতশত গ্রাম ও পাড়া দু’তীরেতেই আছে তীর দখলে মারছে আমায় কিছু অ’মানুষে। ভাটীর দিকে আজও আমি প্রানে বেঁচে আছি উজান গাঁয়ে মারছে ক্রমে কেমনে বলো বাঁচি? ফিরিয়ে দাও আমার বুকে অবারিত জল অহর্নিশি চাতক সম আঁখিযে ছলছল! অবহেলায় আর মেরোনা বাঁচাও দয়া করে জেনো তোমার জনম আমার তোমাদেরই তরে। বাঁচাও হে…
Category: নদী নিয়ে সাহিত্য
রাজেশ ধর এর গল্প- “চুপিকথা”
রাজেশ ধর ।। এখানে একটা নদী আছে, নাম চুপি। চুপিতে এখনো জোয়ারভাটা খেলে। জোয়ারভাটা তো নদীতে খেলবেই। কিন্তু মল্লিকদাদু…আমাকে দেখলেই ডাকে। তারপর বলে, “ কীরে মধুর নাতি, দাদু কেমন আছে? নদীতে যেতে পারে এখনো মাছটাছ ধরতে? ছোটবেলায় নদীতে, বিলে ডোঙা নিয়ে একসঙ্গে কত মাছ ধরেছি…” মল্লিকদাদু নদীর দিকে তাকিয়ে থাকে, আমিও তাকাই চুপির দিকে। হয়তো সকালের মেঘলা আকাশের রঙে চুপিকে তখন সবজে দেখাচ্ছে, ভাটির টানে কচুরিপানাগুলো ফিরে যাচ্ছে তাদের পুরোনো জায়গায় যেখান থেকে আবার জোয়ারের টানে তারা ফিরে আসবে। নয়তো বিকেলের লাল আলো নিভে যাওয়া ছাই ছাই আকাশ আর একটু হলেই নেমে আসবে চুপির বুকে। মল্লিকদাদু সকাল-বিকেল নদীর ঘাটে আসে। কলকাতার কোন বড় কলেজে নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল পড়াত মল্লিকদাদু। আমাকে প্রায়ই…
কবি গৌতম অধিকারী’র কবিতা- নদী, নারী ও দেশের কথা
নদী, নারী ও দেশের কথা ……………………………… মেঘজলে ধুয়ে নাও সমস্ত শরীর ঋতুস্নাত চাঁদ-আলো নগ্ন অবকাশ গড়ে দিক প্রতিমার, হোক চক্ষুদান, নান্দীপাঠে ভরে যাক অনার্য আকাশ। প্রেমের প্রহর জাগে কবন্ধ ডানায় পাখিরাও গান ভোলে ঠোঁটের নিবিড়, পাতার নিঃশ্বাসে জাগে মুগ্ধ শীৎকার শরীরী স্বাদের দেশে বাসন্তী আবীর। হে নারী, নদীর মতো হও বারবার পার্থিব উল্লাসে ভাঙি মায়াবীর বেশ, নগ্নিকা শরীর জুড়ে বারবার বলো নিজস্ব নারীর কথা মৌন বাংলাদেশ। কবি: গৌতম অধিকারী, কলকাতা, ভারত। অারো পড়ুন….. সাহিত্যের প্রাণপ্রবাহে নদী : মিল্টন বিশ্বাস কপোতাক্ষ নদ – মাইকেল মধুসূদন দত্ত গৌতম অধিকারীপেশা সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা। নেশা সাহিত্য…
কপোতাক্ষ নদ – মাইকেল মধুসূদন দত্ত
সতত, হে নদ তুমি পড় মোর মনে সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে। সতত যেমনি লোক নিশার স্বপনে শোনে মায়া যন্ত্র ধ্বনি তব কলকলে জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে। বহু দেশ দেখিয়াছি বহু নদ দলে কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মেটে কার জলে দুগ্ধস্রোতরূপি তুমি মাতৃভূমি স্তনে। আর কি হে হবে দেখা যত দিন যাবে প্রজারূপে রাজরূপ সাগরেরে দিতে বারি রূপ কর তুমি এ মিনতি গাবে বঙ্গজ জনের কানে সখে-সখারিতে। নাম তার এ প্রবাসে মজি প্রেমভাবে লইছে যে নাম তব বঙ্গের সঙ্গীতে। ‘সতত হে নদ তুমি পড় মোর মনে/…
সাহিত্যের প্রাণপ্রবাহে নদী : মিল্টন বিশ্বাস
‘মানবজীবন সে তো/ গঙ্গায় ভাসন্ত বাছাড়ির নাও।/ ফুটো থাকলেই টানতে থাকে তলানিতে/ আবার—/ মানবজীবন সে তো/ বর্ষার জোয়ার ভাটা/ জলেঙ্গার জল।/ দু দণ্ড জোয়ার তো চার দণ্ড ভাটা/ চার দণ্ড সুখ তো আট দণ্ড দুঃখ।/ তবে অবাক হবার কিছু নেই।’ মানবজীবন ও নদীর সাদৃশ্য এভাবে উত্থান-পতন, ভাঙা-গড়ার রূপকে চিরকাল চিত্রিত হয়েছে। আর এভাবেই বিশ্বের সব ভাষায় লিখিত সাহিত্যের রূপকল্পে নদীর বহুমাত্রিক চিত্র আত্মপ্রকাশ করেছে। আদি মহাকাব্য মহাভারত-রামায়ণ কিংবা হোমারের ইলিয়াড-ওডিসি’র কাহিনি ব্যাপ্ত হয়েছে স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল জুড়ে। আর মর্ত্যের নদী সেখানে বিশাল অংশ দখল করে আছে। ধ্রুপদী সাহিত্যে তা ভারতীয় কালিদাস কিংবা…