ফয়সাল আহমেদ সম্পাদিত নদী বিষয়ক বই- ‘প্রিয় নদীর গল্প’ প্রকাশিত

ফয়সাল

রিভার বাংলা সম্পাদক ও  লেখক, গবেষক ফয়সাল আহমেদ সম্পাদিত নদীবিষয়ক বই ‘প্রিয় নদীর গল্প’ প্রকাশিত হয়েছে। সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা ‘জাগতিক প্রকাশন’ বইটি প্রকাশ করেছে। অবিমৃশ্যকারীদের দুর্বুদ্ধিতে সাময়িক লোভ ও লাভের হিসেব বড় করে দেখতে গিয়ে স্বাভাবিক নদীগুলোর সঙ্গে যথেচ্ছচারের ত্রæটি করেনি সভ্য মানুষ! আরও মর্মান্তিক যে, উন্নয়নের নামে বিরামহীন আত্মঘাতী নদী-শাসন! অথচ নদ-নদীর ইতিহাসই বাঙলার ইতিহাস। নদ-নদীর তীরে তীরে মানব সভ্যতা অগ্রগতির চিহ্ন এঁকে রাখে; মানুষের বসতি, কৃষির পত্তন, প্রাম-নগর, বাজার-বন্দর, শিল্প-সাহিত্য, ধর্মকর্ম সবকিছুরই বিকাশ ঘটায়। দুর্বৃত্তদের বিপরীতে কল্যাণকামী মানুষের মননে রক্তক্ষরণ সচল রাখতে পারছে না নদীর নাব্যতা। আশাবাদী মানুষও…

হামিদ কায়সার এর গল্প- ডুব

ডুব

‘কী রে জয়নাল, হইল?’ জয়নাল বলে, ‘হয় নাই।’ আটটা থেকে নয়টার এই সময়ে লোকে লোকে নাও ভইরা গেলেও হয় না জয়নালের, আয়নালেরও হয় না। লোক আরও চাই। আরও আরও লোক। লোকের ভেতরে লোক। লোকের উপরে লোক। যতভাবে ঠাসা যায়। লোকেরও যেন এসবে বিকার নাই। নয়টা সাড়ে নয়টার মধ্যে পৌঁছাতেই হবে টাউনে। কেউ খুলবে দোকান, কেউ করবে অফিস। ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের পোলাপানও কিছু আসে। আর থাকে কিছু আলগা মানুষ। যাদের কোনো কাম-কাজ নাই। খাইব ফিরব ঘুরব। এ অফিসে সে বাসায় ঢুঁ মারব। তবে, এ সময়ে যারা আসে তাদের কারোরই হুঁশজ্ঞান থাকে…

মহানন্দার ডাকে ।। হামিদ কায়সার

মহানন্দা

গায়ের মধ্যে সইসষার তেল মাখতে দেখেই বুকের ভেতরটা দাড়াস করে কেঁপে উঠল আকলিমার। শোয়া থেকে লাফিয়ে উঠে ও ফয়জুরের সামনে দাঁড়াল, ‘তোমা যান কই?’ দুই ঠ্যাঙের আঙুলের গলিঘুপ্চি দিয়ে তেল পাচার করে, ফয়জুরের হাত ডান পা ডলতে ডলতে উপরের দিকে উঠে আসছিল। পাছার আগে পিছে মাখা শেষ করে ওর তৈলাক্ত হাত আবার নেমে যাচ্ছিল বাম নিতম্ব হয়ে নিচের দিকে। ওর চোখের সামনেই পায়ের পর্ব শেষ করে এবার হাতের তালুয় তেল মেখে বুকে-পিঠে তেলের ছোপ মারতে লাগল ফয়জুর। আকলিমাকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকতে দেখে তাড়া দিয়ে উঠল, ‘কী দেহো?…

আমার শৈশব নদী ।। হামিদ কায়সার

আমার

কোন্ নদীর সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল, কোন্ নদী ছিল আমার প্রথম প্রেমিকা? আমি খুঁজি, স্মৃতি হাতড়ে ফিরি, বিভ্রম তৈরি হয়, একবার যদি বুড়িগঙ্গার শেষ বিকেলের জল চলকে উঠে তো, আরেকবার চিরিক মেরে উঠে দুপুরের ঝলমলানো তুরাগ। বুড়িগঙ্গা আমার নানাবাড়ির আর তুরাগ দাদাবাড়ির। জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই এতোবার নানাবাড়ি আর দাদাবাড়ি করেছি যে, আমি আসলে প্রথম কাকে দেখেছিলাম, তুরাগ না বুড়িগঙ্গাকে, সাব্যস্ত করা সত্যি কঠিন হয়ে উঠে। শেষে দ্বারস্থ হই মায়ের, মা চোখ বন্ধ করে বলে দেন, বুড়িগঙ্গা! হ্যাঁ, বুড়িগঙ্গাই হবে। মায়ের এভাবে গভীর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলার কারণটা হলো, ঢাকা…