কর্ণফুলীকে বাঁচাতে স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে বড় ধরনের উচ্ছেদ অভিযান। নদীর পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দ্বিতীয় দিনের অভিযান শুরু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ( ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ) সকালে পুলিশ, র্যাব, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় এ অভিযান পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা ও র্যাব-৭ এর সহকারী পুলিশ সুপার কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজের নেতৃত্বে দুই শতাধিক পুলিশ ও র্যাব সদস্য উচ্ছেদ অভিযানে ম্যাজিস্ট্রেটকে সহযোগিতা করছেন।
গত সোমবার উচ্ছেদ অভিযানের প্রথম দিনেই ছোট-বড় এমন শতাধিক স্থাপনা ভেঙে ফেলেছে তারা। সরকারি ছয়টি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে দুই শতাধিক র্যা ব, পুলিশ ও আনসার সদস্য নিয়ে জেলা প্রশাসনের দুই ম্যাজিস্ট্রেট শুরু করেছেন উচ্ছেদ অভিযান। এদিকে উচ্ছেদ অভিযানের প্রথম দিনেই তা বন্ধ করতে বিভিন্ন দিক থেকে হুমকি পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন।
হাইকোর্টের নির্দেশে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে দুই হাজার ১৮১টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। তালিকা ধরে এখন এসব স্থাপনা উচ্ছেদে নেমেছে তারা।
অভিযানে থাকা আরেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুর রহমান বলেন, প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করে পরের ধাপে আরও দুটি পয়েন্টে উচ্ছেদ অভিযান চলবে। সেগুলো হলো- বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে পতেঙ্গা এবং সদরঘাট থেকে চাকতাই।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সোমবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাটে লাইটার জেটি এলাকায় অবস্থান নেয় উচ্ছেদকারী দল। বুলডোজার, পে-লোডার, অগ্নিনির্বাপক গাড়িসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম আগেই প্রস্তুত রাখা হয়। প্রথম দফায় লাইটারেজ জেটি এলাকায় ‘সদরঘাট সাম্পান চালক সমবায় সমিতি‘ নামে একটি সংগঠনের অবৈধ কার্যালয়, যাত্রী ছাউনি, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) একটি লোহার স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বাঁশের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি কয়েকটি ছাপড়াঘরও ভাঙা হয়। এরপর অভিযান শুরু হয় পাশের কর্ণফুলী ঘাট এলাকায়। সেখানে নদীপাড় দখল করে গড়ে ওঠা কয়েকটি টিনের ছাপড়াঘর ভেঙে দেওয়া হয়। এ সময় অনেককে নিজ উদ্যোগে আসবাবপত্র সরাতে দেখা যায়।
দুপুর ১টার দিকে শুরু হয় আলোচিত শিল্পপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুর রশীদের মালিকানাধীন কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের অবৈধ স্থাপনা ভাঙার কাজ। প্রতিষ্ঠানটির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) নজরুল ইসলাম জানান, ১৯৯৪ সালে জেলা প্রশাসন থেকে শূন্য দশমিক ৫৪ একর খাসজমি ইজারা নিয়ে তারা একটি কোল্ড স্টোরেজ গড়ে তোলেন। আর নদীর তীরবর্তী ৮৪ ফুট ৯ ইঞ্চি পাড়ের জায়গা ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে সেখানে ২০১০ সালে গড়ে তোলা হয় ছোট জেটি। সূত্র: সমকাল।