মন কথন : ‘শহর’ শব্দটাকে ভাঙ্গতে গেলেই হাজারো অনুভূতিরা যেন হুড়োহুড়ি করে আমার পিছু নেয়। আমার প্রাণের শহর যেখানে সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছেতে মায়ের জরায়ুর গহীন অন্ধকারে, একদিন আমার প্রথম হৃদপিণ্ড কেঁপে উঠেছিল। নরসুন্দা তারই একটি নদীর নাম। জীবনের ফেলে আসা চলতি পথে হাজারও বার যার সাথে শৈশবে, কৈশোরে আর যৌবনে আমার প্রায়েই দেখা হয়েছে । ইতিহাসবিদদের মতে, এই নরসুন্দা নদীকে ঘিরেই আমাদের কিশোরগঞ্জ…
Search Results for: আলিফ আলম
নদীর আঁচল ।। আলিফ আলম
‘নদ- নদী’ শব্দ দুটি অনেকটা পুরুষ আর নারী বাচকতা শব্দের সঙ্গে অবলীলায় মিলে যায়। তাদের গতি-প্রকৃতিও বেশ খানিকটা নর-নারীর মতই। মানুষের মতই তাদের রয়েছে শৈশব, যৌবন, মাঝবয়স আর বৃদ্ধকাল। উৎস থেকে উৎপত্তি হয়ে প্রাকৃতিক সৃষ্ট এই জলধারা একদিন সাগর, মহাসাগর কিংবা হ্রদে মিশে যায়। এই মিশে যাওয়া ব্যাপারটা তাদের সহজাত। কানাডার কুইবেক প্রভিন্সের মন্ট্রিয়াল শহরের গা ঘেঁষে যে নদী বয়ে গেছে তার নাম ‘সেন্ট লরেন্স’ Saint Lawrence River । আগে এর নাম ‘Magtogoek’ ছিল পরে যা পরিবর্তন করা হয়েছে। নদীটির দৈর্ঘ্য- ১১৯৭ কিমি. এবং যার উৎপত্তির স্থল অন্টারিও হ্রদ। কুইবেকের …
কিশোরগঞ্জের নরসুন্দা নদীতে যাত্রীবাহী নৌযান চালুর দাবি জানিয়েছে রিভার বাংলা
কিশোরগঞ্জে নরসুন্দা নদীতে যাত্রীবাহী নৌযান চালু, নদীর দখল-দূষণ বন্ধ ও নদী খননে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে নদী বিষয়ক পত্রিকা রিভার বাংলা। শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকালে জেলা শহরের হোটেল শেরাটন হল রুমে ‘নরসুন্দায় প্রাণ ফেরাতে আমাদের করণীয়’শীর্ষক আলোচনা সভায় আলোচকগণ এসব দাবি জানান। জেলা পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক মু আ লতিফ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সমাজকর্মী ড. দৌলতুন্নাহার খানম, কবি ও সঙ্গীত শিল্পী কফিল আহমেদ, অধ্যাপক কাজী করিম উল্লাহ নাদিম। অনুষ্ঠানে কী নোট পেপার উপস্থাপন করেন রিভার বাংলা সম্পাদক লেখক ও গবেষক ফয়সাল…
ফয়সাল আহমেদ সম্পাদিত নদী বিষয়ক বই- ‘প্রিয় নদীর গল্প’ প্রকাশিত
রিভার বাংলা সম্পাদক ও লেখক, গবেষক ফয়সাল আহমেদ সম্পাদিত নদীবিষয়ক বই ‘প্রিয় নদীর গল্প’ প্রকাশিত হয়েছে। সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা ‘জাগতিক প্রকাশন’ বইটি প্রকাশ করেছে। অবিমৃশ্যকারীদের দুর্বুদ্ধিতে সাময়িক লোভ ও লাভের হিসেব বড় করে দেখতে গিয়ে স্বাভাবিক নদীগুলোর সঙ্গে যথেচ্ছচারের ত্রæটি করেনি সভ্য মানুষ! আরও মর্মান্তিক যে, উন্নয়নের নামে বিরামহীন আত্মঘাতী নদী-শাসন! অথচ নদ-নদীর ইতিহাসই বাঙলার ইতিহাস। নদ-নদীর তীরে তীরে মানব সভ্যতা অগ্রগতির চিহ্ন এঁকে রাখে; মানুষের বসতি, কৃষির পত্তন, প্রাম-নগর, বাজার-বন্দর, শিল্প-সাহিত্য, ধর্মকর্ম সবকিছুরই বিকাশ ঘটায়। দুর্বৃত্তদের বিপরীতে কল্যাণকামী মানুষের মননে রক্তক্ষরণ সচল রাখতে পারছে না নদীর নাব্যতা। আশাবাদী মানুষও…
টাঙ্গন : আমার প্রিয় নদী ।। ড. অমর কুমার পাল
টাঙ্গনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কের মতো। টাঙ্গন আমাকে শিখিয়েছে মানব জগতের সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত জীবজগৎকে ভালোবাসতে। টাঙ্গন আমার অন্তরের ক্ষুদ্রতাকে দুইহাতে সন্তর্পনে আলগোছে সরিয়েছে। মনের দৈন্যতা, সংকীর্ণতা, হীনমন্যতা ঝেড়ে ফেলে জীবনযুদ্ধে কীভাবে অনমনীয় মনোভাব নিয়ে মোহনার দিকে এগিয়ে যেতে হয় তার পাঠ আমি টাঙ্গনের কোলে বসে নিয়েছি। টাঙ্গন নামক অখ্যাত নদীটি তার সমস্ত সত্তা দিয়ে চেষ্টা করে যায় আজও রাইখোরের জোগান দিয়ে আমাদের রসনাকে আর মৎসজীবীদের আর্থিক দিককে তৃপ্ত করতে। দারিদ্র্যতা তার আলুথালু বেশ ও বারিহীন রুক্ষকেশ দেখে একনজরেই ঠাহর করা গেলেও তা নিয়ে তার নেই কোনও…
যে নদীকে কেবল ভাসিয়ে দেওয়া গেল ।। সুপ্রতিম কর্মকার
লেখা শব্দগুলো ভেসে বেড়াচ্ছে। নৌকার খোলের মত করে। জলের ওপর বা পানির ওপর। ঠিক এখনো জানি না, জলের ওপর পানি! না পানির ওপর জল! শুধু এটাই জানি, ওই দুটো গ্যাসীয় পদার্থ একে অন্যের সঙ্গে মিলে মিশে তৈরি করে একটা তরল পদার্থ। জীবন বাঁচাতে ঐ রঙহীন তরলের মতন আর বিকল্প তরলের জন্ম হল না, এই বিশ্ব চরাচরে। আর সেই না হওয়ার কারণেই জলের মতন সহজ আর জলের মত দামীও কেউ হল না। জীবনকে প্রজাপতির মত রঙ্গিন দেখতেই পছন্দ করে সবাই। কিন্তু জল তার কোন রঙ নেই। কোন গন্ধ নেই। কোন স্বাদ…
সে এক মায়াবী নদী ।। সৈয়দ কামরুল হাসান
ফুলের গন্ধটা তীব্র হয়ে নাকে লাগে। হু হু করে যখন বাতাস বইতে শুরু করল ঠিক তখন ঘুম ভেঙ্গে যায় আমার। কিন্তু এই নৌকায় ফুলের গন্ধটা কোত্থেকে আসবে বুঝতে পারিনা প্রথমে। পরে কারণটা ধরতে পারি ধীরে সুস্থে। আসলে আমি মায়ের কোলে শুয়ে ছিলাম। মায়ের কোলে শুয়ে আশৈশব পেয়েছি এই ফুলের ঘ্রাণ। বড় হয়ে যখন কারণটা বুঝতে পেরেছি, ততদিনে মা আমাদের মায়া ত্যাগ করে পরপাড়ে পাড়ি জমিয়েছেন। মায়ের পছন্দ ছিল জবাকুসুম তেল, বরাবর বাবা তাই বাড়ি এনে দিয়েছেন, মা সেই তেল মাখতেন চুলে। কিন্তু, কারণ সনাক্ত হবার আগেই সেই যে অবুঝ শিশুর…
প্রাণের দোসর কালীগঙ্গা ।। সন্তোষ কুমার শীল
জীবনের দৈনন্দিনতাটুকু আড়াল হলেই কল্পনায় শুনতে পাই দশদিক কাঁপিয়ে স্টীমারের ভোঁ বেজে উঠছে। অসংখ্য যাত্রীর ওঠানামায় কলমুখর হয়ে উঠেছে কালীগঙ্গার তীর। দারুণ নস্টালজিয়া ভর করে। ছুটে যাই নদীর তীরে। দেখি বিশ্বকবি একটা চেয়ার টেনে জানালার ধারে বসে আনমনে লিখে চলছেন। দখিনা বাতাসে তাঁর আলখেল্লা উড়ছে, শুভ্র দাড়ি-চুল বিপর্যস্ত। কোনদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই তাঁর, ধ্যান-মৌন ঋষি সৃষ্টিশীলতায় মগ্ন। তাঁকে ঘিরে রয়েছে একটা উজ্জ্বল জ্যোতি। হ্যাঁ, সেদিনের খরস্রােতা কালীগঙ্গার বুকের ওপর দিয়ে তুমুল আলোড়ন তুলে চলত কোলকাতা থেকে বরিশালগামী স্টীমার “সরোজিনী”। রবীন্দ্রনাথের মেজদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর বিলেতি কোম্পানীর সাথে পাল্লা দিয়ে এই জাহাজের ব্যবসায়…