নদী সম্পর্কে এতটা উদাসীন কি করে হতে পারি আমরা?

নদীর কাছে এসো

আমরা নাকি নদীর সন্তান! নদী আমাদের মা। নদীমাতৃক তো বলাই হয়।এটাও বলা হয়, নদী আমাদের জীবন। আর সেটা সঠিকই বলা হয়। কেননা নদী বিভিন্ন ভাবেই আমাদের জীবন ও জীবিকার সাথে সম্পৃক্ত। তাই নদীর জন্য কিছু করা প্রয়োজন। একথা উপলব্ধি করে পরিবেশপ্রেমী সংস্থা দিশারী সংকল্প এবছর থেকেই “নদীর কাছে এসো” কার্যসূচী শুরু করেছে। কখনও আত্রেয়ী, কখনও টাংগন নদীর পারে নদীর জন্য ভাবনা নিয়ে জড়ো হয়েছিল কখনও ছাত্রীরা, কখনও নাট্যকর্মীরা ।

আর গতকাল [২৮ নভেম্বর] আত্রেয়ী নদীর পাড়ে হেমন্তের বিকেলে খোলা আকাশকে সঙ্গী করে সমবেত হয়েছিলেন কবি সাহিত্যিক প্রাবন্ধিকগণ।এছাড়াও ছিলেন পরিবেশ সচেতন নাগরিকরা। আত্রেয়ীর বুকে বিকেল যখন একটু একটু করে এগিয়ে চলেছে সন্ধ্যের অভ্যর্থনায় তখনই কেন এভাবে জড়ো হওয়া তার প্রেক্ষিত বর্ণনা করলেন দিশারী সংকল্পের সভাপতি ও কবি অমল বসু।

আটান্ন কিলোমিটার এই নদীর অতীত গৌরব এখন অস্তমিত। দূষণের ঠিকানা লেখা আত্রেয়ীর জলে প্রতিনিয়ত প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। তার দু’একটি জল থেকে তুলে নিল জলবন্ধুরা। [জলবন্ধু হল দিশারী সংকল্পের একটি ভাবনা।মূলত নদীর পারের ছাত্র- ছাত্রীরাই নদীকে রক্ষায় উদ্যোগী]।

কিন্ত সব তো তোলা গেল না। সেগুলো তো জলকে দূষিত করবে।তার কি হবে? নদীর জলে প্রতিমার সরঞ্জাম আর যান্ত্রিক সভ্যতার নিদর্শন ।নদীকে আসলে “great dustbin”-এ পরিণত করছি।কিন্ত আমরা উদাসীন । সেসব আর খেয়াল করছি কোথায়? কবি অশোক কুমার দাস কবিতা পাঠ করলেন ” নদী এক দু:স্বপ্ন “।কবি সুবীর চৌধুরী তার নদী কেন্দ্রিক নিজের কবিতা “নিজের মতো” পাঠ করলেন।

আরো পড়তে পারেন…

সংসদ নির্বাচন : বন-নদী-পাহাড় নিয়ে কী ভাবছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা?

ধীবর’রা ভয়ংকর সংকটে, আমাদের বিপদও ঘরের দুয়ারে

হারিয়ে যাওয়া মাছ কি নদীর মৃত্যুর আশংকাই সামনে আনে না?

 

এরপর প্রাক্তন শিক্ষক বৈদ্যনাথ সাহা, প্রাক্তন শিক্ষিকা সংযুক্তা গুহ নিয়োগি, প্রাবন্ধিক সন্তোষ সাহা, সাহিত্যিক দুর্গাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, গল্পকার নীহারেন্দু মজুমদার অতীত আত্রেয়ী, আত্রেয়ীকে কেন্দ্র করে ব্যবসা- বানিজ্য, আত্রেয়ীর গভীরতা, আত্রেয়ীর মাছ-বৈচিত্র কত কথা উঠে এল।

আর তারপরই উঠে এল হাহাকার।আর সেখান থেকেই জন্ম নিল শপথ।শপথ নদীর জন্য। নদী আমাদের। আমরাই একে রক্ষা করবো। সাংবাদিক বিশ্বদীপ নন্দী এপার বাংলা- ওপার বাংলার যৌথ উদ্যোগে নদীর পার ধরে হাঁটার কথা আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন।

গায়ক বিপ্লব সাহার আত্রেয়ীর কবিতার অনুভবে বলতে পারি যে নদী প্রতিনিয়ত আমাদের চেতনায় তার প্রতি এতটা উদাসীন কি করে থাকছি আমরা? আমরা কি নিজেদের অস্তিত্ব কেই বিপন্ন করছি না?

পরবর্তী সভা তেইশে ডিসেম্বর ।আরও জোট বাঁধবে শহর।শহরের নাগরিক ।সেই বীজই বপন করা হলো গতকাল।

সংশ্লিষ্ট বিষয়