আমলাচাতর গ্রামের ভুজুং মাঝি ও অজয় নদীর পাথর ।। দিবাকর দাস

আমলাচাতর

সে অনেক বছর আগের কথা, ভুজুং তখন জোয়ান। তার বাড়ি ছিল আমলাডিহি গ্রামে (বর্তমান নাম আমলাদহি)। এখন যেখানে চিত্তরঞ্জন রেল শহরের চব্বিশ নম্বর (নামের) স্কুলটা আছে তার পাশে। তার বাড়ির দাওয়ায় একটা কাঁঠাল গাছ ছিল। পূর্ব দিকে অনেকটা নিচু জায়গা। বর্ষাকালে সেখানেই মাছ ধরত তারা ছোটো বেলায়। এখন সে টাঙ্গির এক কোপে শ্যাওড়া গাছ কাটে। একদিন গাঁয়ে নেমে এল শোকের ছায়া। তাদের ভিটে ছেড়ে চলে যেতে হবে। সেখানে নাকি শহুরে বাবুদের জন্য থাকার বাড়ি হবে। ভুজুং বুঝতে পারে না, তাদের কেন বাড়ি ছেড়ে যেতে হবে। এত ট্যাঁড় জমি। বানাক না…

রাইন আমার প্রিয় নদী : যেমন আত্রেয়ী আর আন্ধারমানিক ।। তুহিন শুভ্র মন্ডল

রাইন

যে নদীর পারে আমার জন্ম, সেই আত্রেয়ী তো আমার প্রিয় হবেই। আমার মন-প্রাণ তাতে জুড়ে থাকবেই নদীর জলে সাথে মাছের মতো। কিন্ত যে নদী আমি দেখিনি কোনও দিন সে নদী? সে নদীও তো প্রিয় হতে পারে। যেমন রাইন। তাকে যে মনশ্চক্ষে দেখেছি অনেকবার। শিরা উপশিরায় প্রবাহিত তার জলের ছন্দ। আর আন্ধারমানিক? তাকে দেখেছি একটা বৃষ্টি ঝিরঝির মায়াবী সকালে। সূর্যের আলো যার জলে হয়তো আমারই পূর্বপুরুষের ছবি এঁকে রেখেছিল। তাই তার কথা এত মনে হয়। ঢাকার সদরঘাটে বুড়িগঙ্গা থেকে এম ভি, সুন্দরবন লঞ্চে নদী সমূহের জলে ভাসতে ভাসতে,  জলের হাওয়ায় মন…

এই মৃত নদী আমার তিস্তা না ।। শুভময় পাল

মৃত নদী

‘ছলাৎ ছল ছলাৎ ছল ছলাৎ ছল ঘাটের কাছে গল্প করে নদীর জল’ না, আমার তিস্তা এমন নদী না; গল্প সে করে, তবে সে গল্প নামনাজানা পাহাড়ি ঝরনার, সে গল্প প্রায় ভুলে যাওয়া আদিম জনজাতির। সে গল্প দুরন্ত, চঞ্চল, উচ্ছল। আমার তিস্তা অভিমানী, বেপরোয়া। শীতের বেলায় প্রায় মরা সোঁতা, বর্ষাকালে উপচে পড়া তাথৈথৈ। আমার বাড়ি তিস্তার পারে ছিল বললে খুব ভুল বলা হবে না। জলপাইগুড়ির হাকিমপাড়া, সরু একটেরে গলিতে প্রায় শেষে এক ভাড়া বাড়ি। বাঁশের ছেঁচার বেড়া, লঙ্কা জবার গাছ, এগোলে তপনদের খাটাল আর বিষ্ণুদা’দের বাড়ি। নীল অপরাজিতা ফুটে থরে থরে।…