ছোট যমুনার অর্তনাদ ।।  মোস্তাফা-আল-মেহমুদ রাসেল

যমুনার

আমি বাংলাদেশের এক ছোট্ট নদী, নাম আমার ছোট যমুনা। আমার অনেক দুঃখ-কষ্ট। এক সময় আমার অনেক সুখ ছিল। আজ আমি সেসব কিছু কথা তোমাদের বলবো। আমি বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলায় ইছামতি নদী পার্বতীপুর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নে ছোট যমুনা নামধারণ করে নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নে আত্রাই নদীতে পতিত হয়েছি। আমি চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর, ফুলবাড়ি, বিরামপুর. হাকিমপুর, পাঁচবিবি, জয়পুরহাট সদর, ধামইরহাট, পত্নীতলা, বদলগাছি এবং নওগাঁ সদর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছি। সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা দেশ হিসেবে বাংলাদেশের খ্যাতির পেছনে আমার অবদান কম নয়। আমার কারণেই তৈরি হয়েছে অববাহিকা। গড়ে উঠেছে জনবসতি,…

আমার প্রিয় নদী : রাজর্ষি চৌধুরী

রাজর্ষি

জীবন-নদী চলছে আঁকেবাঁকে, প্রতিটি বাঁকেই যেন কোনো গল্প লুকিয়ে থাকে। নদী-গল্প শোনাবো তোমায় আজ জীবন স্রোতের সর্পিলাকার পথে- হ্যাঁ ঠিকই আজকের বিষয় আমার প্রিয় নদী। আসলে এই প্ৰিয় শব্দটির মধ্যে অদ্ভুত একটা আন্তরিকতা লুকিয়ে থাকে তাই বিষয় যখন প্রিয় নদী সেক্ষেত্রে যার স্রোতের আঁচলে-শাসনের দৃঢ়তায় ছোট থেকে বড় হয়েছি সেই নদীর থেকে প্রিয় আর কেই বা হতে পারে? ঠিক ধরেছেন আমি আমার শহর গঙ্গারামপুর এর ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী পূর্ণভবার কথাই বলছি। আমার জন্ম এই জেলাতেই, নদীর প্রতিটা বাঁক, গভীরতা, প্রতিটা রূপ আমার জানা।বাড়ি থেকে নদীর দূরত্ব খুব জোর…

ভারতের সঙ্গে পানি নিয়ে সংঘাত নেপাল-ভুটানের : যা বললেন মেধা পাটকর

সংঘাত

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি সূত্রে জানা যায়, অভিন্ন নদীগুলোর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচের কাজে পানির ব্যবহার নিয়ে এবার দুই প্রতিবেশী দেশ নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছে ভারত। নেপাল-ভারত সীমান্তে গন্ডক নদীর ওপর যে ব্যারাজ আছে, তার রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ভাারতকে বাধা দিয়েছে নেপাল। লিপুলেখ, কালাপানি ও লিম্পুয়াধারার মতো সীমান্তের বিতর্কিত এলাকাগুলোকে নেপাল নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করার জেরে দিল্লি ও কাঠমান্ডুর মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই – এখন তাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে গন্ডক ব্যারাজ নিয়ে দুদেশের বিরোধ। এর পাশাপাশি, আসামের বাকসা জেলার হাজার হাজার চাষী অভিযোগ করছেন, মিত্র…

নদীকথা ।। বিনীতা সরকার

নদীকথা

নদী মানে একটি নিখাদ ভালবাসার ছোঁয়া। নদীর সতত প্রবাহিত জলধারা আমাদের জীবনে আশীর্বাদের মতো। নদী মানে জীবন। এই নদীর সঙ্গেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে গ্রামীণ, শহুরে সব মানুষেরই জীবন কাহিনী। নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে প্রাচীন বাংলার অনেক শহর। এই নদীর তীরে গড়ে উঠেছে অনেক নগর, অনেক জনপদ। তাই নদীকে বাদ দিয়ে জীবন ভাবা যায় না। ফারাক্কার পাশ দিয়ে বহতা গঙ্গা নদী পশ্চিমবঙ্গকে দু’টি ভাগে ভাগ করেছে। উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ। উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় জেলা জলপাইগুড়ি। জেলার উত্তর অংশে হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চল। উত্তরের উঁচু অংশের জমির ঢাল দক্ষিনে নেমে এসেছে। এর…

আমার নদী…তুই ডাকলেই সাড়া দেয় যারা ।। সুস্মিতা চক্রবর্তী

আমার নদী

প্রথম নদী চিনিয়েছিল আমায় সহজপাঠ। সে নদী ছিল আমারই দোসর যেন। কুল, করমচা, বাঁশঝাড়ে দৌড়ে বেড়ানো শিশুকালের মতোই সে চেনা চৌহদ্দির ছোট নদী। তাকে চেনে গাঁয়ের হাট, পাড়ার ঘাট। আমারই মত, তার দুনিয়াখানাও বুঝি দিব্যি এঁটে যায় একখানা পুতুলের বাক্সের মাপে। তার হাঁটুজলের পৃথিবীটিতে সে এঁকে দিতে দিতে চলে আঁকিবুঁকি খুশি। তারপর সহজপাঠ ফুরিয়ে আসে একদিন। আমার  মফস্বলের বড় হতে থাকা দিনগুলোয় নদী ছিল না কোন। কালেভদ্রে যাওয়া হত খানিক দূরের দক্ষিণেশ্বরে। সেখানে যে জলধারা আমার কাছে সে ছিল নিতান্তই ভূগোলের দাপুটে নদী। তার বুকে ভেসে যায় পুজোর মানত, পুণ্য…

ঘুসকি, একটি সম্ভাবনার নাম ।। কৌশিক বিশ্বাস

ঘুসকি

অন্তঃদেশীয় জলাভূমির ক্ষেত্রে অবিভক্ত দিনাজপুর এক গুরুত্বপূর্ণ নাম। বর্তমান দিনাজপুরে হারিয়ে গেছে অনেক নদী। আজ আমরা আত্মবিস্মৃত আমাদের হারিয়ে যাওয়া নদীর ইতিহাস নিয়ে। এরকম অনেক নদী পরিণত হয়েছে খাঁড়িতে। ঠিক এমনই একটি নদী ঘুসকি। ইংরেজ সমীক্ষক মন্টেগোমারি মার্টিন ১৮০৮ সাল নাগাদ তাঁর সমীক্ষাপত্রে এই ঘুসকি নদীর উল্লেখ করেছেন। এই ঘুসকি নদীই বর্তমান সময়ে ঘুপসি খাঁড়ি নামে বহুল প্রচলিত। ঘুসকি নদীর গতিপথ আমাদের আশ্চর্য করে। এই নদীর প্রাচীন ইতিহাস নি:সন্দেহে এক গৌরবময় অধ্যায়ের সামনে আমাদের দাঁড় করিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ফুলবাড়ি দিয়ে গোপালবাটি, অমৃতখন্ড, চিঙ্গিশপুরে এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত…

স্মৃতির লোহালিয়ায় আজও ভাসে মন ।। মো.ইউসুফ আলী

স্মৃতির

নদী বিধৌত জেলা পটুয়াখালীতে আমার জন্ম হলেও আমাদের বাড়ির আশেপাশে কোনো নদী নেই। তবুও মনের দিক থেকে নদী ছিলো আমার অসম্ভব পছন্দের। শৈশব-কৈশোরে নদীকে ঘিরে অনেক স্বপ্নও ছিলো আমার। কিন্তু শৈশব-কৈশোরের সব স্বপ্নকী সবার পুরণ হয় ? সে যা-ই হোক অন্যদের কথা না-ইবা টানলাম। আমার সে সব স্বপ্ন আজও অধরাই পরে রইলো। তবে খাল-বিল, নদী কিংবা জল ও মাছের প্রতি অসম্ভব রকমের টান আজও আমার রয়েছে। কিন্তু কি আর করার শহরে বসবাস। আচ্ছা সেই শৈশবেই আবার ফিরে যাওয়া যাক। ঘুরে আসি কতক্ষণ সেই ছেলেবেলার কথকতা নিয়ে। যা বলছিলাম যে আমাদের…

সে, আমি ও আত্রেয়ী ।। সুদর্শন ব্রহ্মচারী

আত্রেয়ী

নদীটা চুপসে গেছে। রতন হালদার মন খারাপ করে বাউলার ভেক ধরেছে। জাল বুনতে বুনতে সে গুনগুন করে। হাঁসগুলো দল বেঁধে যেতে যেতে হঠাৎ ছড়িয়ে পড়ে। দু’এক জোড়া উল্টো দিকে মাঝনদিতে ছুটে যায়।নীল রঙের মাছরাঙা উড়ে এসে ছোঁ মেরেই পালায়।পানকৌড়ি ডূব মেরে সাঁতরে ছুটে পালায়।নিরিবিলিতে হংসমিথুন দেখতে দেখতে বাউলা রতন গান ধরে, “জ্বলে পুড়ে মরল রাধা যৌবন জ্বালায় যখন ডাকল বাঁশি তখন রাধা যাবে যমুনায়…।” প্রেমপূজারী বাউলা একা একা দেহতত্বের পাঠ নেয়।জল চিকচিক করে। নৌকায় বাঁধা বাঁশের মাথায় সাদা সাদা মাছরাঙা চড়ুই পাখির মতো প্রেম করে উড়ে যায়। বাঁশির সুরে নদী…

নদী একটাই ।। রাজেশ ধর

রাজেশ

‘নদী’…কলকল, কলকল… ঢেউতোলা এই শব্দটা প্রথম কবে শুনেছিলাম ? কবে প্রথম ‘নদী’র ডাকে  বুকের রক্ত ছলকে উঠেছিল? প্রথমবার কবে জেনেছিলাম নদী আসলে জলের ধারা…সে জল শীতল, মিষ্টি আবার কখনও নোনা পানি!  সেদিন কি জেগেছিলাম? নাকি ছিলাম ঘুমিয়ে…স্বপ্নের মধ্যে? দুই কুল…দুপারকে বেঁধে রাখতে রাখতে এক নিমেষেই নদী… সব গিলে খেয়ে নিতে পারে!  নির্বিচারে মুছে যেতে পারে– ডাঙা, ফসল, গাছপালা,… সাতমহলা কীর্তির অহংকার। নদী নাকি সে নিয়তি? তারই বা জ্ঞান হল কবে? জানি না…বলতে পারব না। দুই.  জন্ম থেকে প্রায় বছর তিরিশ পর্যন্ত এক বিশাল ঘিঞ্জি শহরে বাস আমার। সে শহরের পশ্চিম…

মরা নদীর গল্প ।। অনিন্দ্য আাসিফ

আাসিফ

সাপে তার ভয় ছিল না কখনও। এখনও নাই। লেজ ধরে মাথার উপর চড়কির মতো ঘুরিয়ে প্রথমে হঠাৎ শূন্যে ছুঁড়ে মারা, তারপর অদৃশ্য করে দেওয়া ছিল তার বাম হাতের খেলা। সামুদ্রিক জেলেদের মতো। জালে-পড়া বিষাক্ত সাপ খেলাচ্ছলে ছুঁড়ে ফেলে তারা। কখনও কখনও জানেই না, কী ভয়ানক খেলা অনায়াসে খেলে ফেলল। কিন্তু এটা সাপ না। শুকনো কচুরিপানায় যে শব্দ, সেটা ইঁদুর হতে পারে। উৎকট একটা গন্ধে এবার মনে হয়, এটা আসলে একটা চিকা। বয়স তার দৃষ্টি আর শ্রবণশক্তির কিছুটা হরণ করেছে, কিন্তু অনুপাতে কমই। তার সামনে – অদূরে কাঁচা কচুরিপানা আর নদীর…

কালনির স্নিগ্ধতায় আমার ছেলেবেলা ।। আলম মাহবুব

কালনির

কালনি! এই কালনি নামের সাথে মিশে আছে হাজার বছরের ইতিকথা। আমি বলছিলাম কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর বেষ্টিত অষ্টগ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনার শাখা কালনি নদীর কথা। আবহমান গ্রামবাংলার নদীর আত্মপ্রকাশে চিরচেনা এই ভাটির জনপদের কালনি নদীর তীরেই গড়ে উঠেছে বহু জনপদ, আছে অনেক রত্নগল্প। যা আজ কিছুটা তুলে ধরতে চেষ্টা করছি। কিশোরগঞ্জের সীমান্ত ঘেঁষে থাকা এই নদীটি কোন একসময় খরস্রোতা নব যৌবনায় ভরপুর ছিলো। বিস্তীর্ণ হাওরের বুকের প্রশস্ত সবুজে কৃষকের ক্লান্তি, হতাশার একমাত্র অবলম্বন এই কালনি। যার উৎপত্তি কিশোরগঞ্জ জেলা ও বি- বাড়িয়া জেলার সীমান্ত নির্ধারণকারী মেঘনার শেষ ভাগ হতে…

নদীর নাম মুজনাই ।। শৌভিক রায়

মুজনাই

নদী মানেই প্রবাহ। আর প্রবাহ মানে জীবন। তাই নদী বাদে জীবনকথা সম্পূর্ণ হতে পারে না। আবার, জীবনসঙ্গীত গায় কিন্তু তথাকথিত ব্রাত্যজনেরা। আবহমানকাল ধরে তারাই সচল রেখেছে জীবনের জয়যাত্রা। ঠিক একইভাবে, নামীদামী বৃহৎ নদ-নদীর পাশাপাশি, ছোট্ট ছোট্ট নদীরা ধরে রেখেছে সভ্যতার মূল চালিকাশক্তিকে। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরদিকে,  জানা-অজানা অজস্র নদীর রুদ্ধকথা সেই শক্তিকেই বিবৃত করছে। ভুটান পাহাড়ের দক্ষিণ বনাঞ্চলে আট হাজার উচ্চতায় জন্ম নেওয়া ‘রঙ্গোরি’ নামের নদীটিও ঠিক এমনই। তবে উৎসমুখের নামে নয়, তার অধিক পরিচিতি ‘মুজনাই’ নামে এবং এই উৎস নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। কেননা উৎস থেকে যে প্রবাহ দেখা যায় তার খাত…