বাংলা ছোটগল্পে নদী : মানব জীবনের কথকতা ।। রাজু বিশ্বাস

নদীমাতৃক এই বাংলা। বাংলাদেশ  ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে যে বৃহৎ বাংলা– তাকে মায়ের মত আদর স্নেহ ভালবাসা আর শাসন দিয়ে ঘিরে রেখেছে অসংখ্য নদ-নদী। নদীর তীরেই মানুষ সভ্যতার প্রথম সোপান রচনা করে। আমাদের বাণিজ্য যাত্রার ইতিহাস নদীকে কেন্দ্র করেই প্রসারিত হয়েছে। বাংলা মঙ্গলকাব্যের বিস্তৃত পটভূমিকায় নদীর একটা আলাদা তাৎপর্য আছে। সেই চর্যাপদের সময় থেকেই সাহিত্যে নদনদীর কথা এসেছে গভীরভাবে। মনসা মঙ্গলের বেহুলা এই বাংলার নদী পথেই ভেলায় মৃত লখিন্দরের শবদেহ নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল অমরাবতির দরজায়। আধুনিক বাংলা ছোটগল্পে নদী একটা বিস্তৃত জায়গা জুড়ে রয়েছে। সাহিত্য কখনো দেশ কাল নিরপেক্ষ হতে…

ফুলেশ্বরীর খোঁজে

ফুলেশ্বরীর

নদীটির নাম ফুলেশ্বরী।এর বিস্তৃতি কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার কিছু অংশ জুড়ে। একসময়ের খরস্রোতা এই নদীটির উৎপত্তি হয় জালিয়া হাওর থেকে। কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলা ও নেত্রকোনা জেলার কিছু অংশে ফুলেশ্বরীর তেজস্বী স্রোতধারা প্রবাহিত ছিল। তৎকালীন বৃহত্তম ময়মনসিংহ জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নদী ছিল এই ফুলেশ্বরী। রুপ, শক্তি, যৌবন হারিয়ে ফুলেশ্বরী এখন কিশোরগঞ্জ-নেত্রকোনা জেলার মৃত নদীর তালিকায় স্থান পেয়েছে। নদীটি মানচিত্র থেকে মুছতে মুছতে নদী তীরের মানুষই তাদের আদরের ফুলেশ্বরীকে ভুলতে বসেছে। নদীটির অবস্থান এখন কোথায়, আছে না নেই, তা নিশ্চিত করে অনেকেই বলতে পারে না। ফুলেশ্বরীতে একসময় জল ছিল, মাছ ছিল,…

আমার নদী মধুমতী ।। রুখসানা কাজল

মধুমতী

প্রায় চল্লিশ বছর আগের ঘটনা। রাগে দুঃখে অপমানে অভিমানে জন্মশহর থেকে শিকড় তুলে নিয়েছিল আমাদের পরিবার। কী যে মায়াবী সুন্দর ছিল শহরটি। শহরের গা ছুঁয়ে বয়ে যেত সাদা জলের এক নদী। যারা বয়স্ক তারা বলতেন, মরা মধুমতী। শান্ত শ্রীময়ী ধীর ছন্দের মধুমতী দুকূলে অজস্র শণবনের ঝোপঝাড় নিয়ে আমাদের জীবনের সাথে মিশে ছিল। ভোরে, সকাল, দুপুর বিকেল সন্ধ্যা এমনকি রাতেও বাপী,মা, দিভাই, আপুলিদের সাথে নদীপাড়ে ঘুরতে গিয়ে কতবার দেখেছি এ নদীকে। কুয়াশার দোপাট্টা পরে ধীরে ধীরে বয়ে যাচ্ছে ভোরের নদী। তার সাদা বুকে জলতরঙ্গের অনুচ্চ সুরের গুনগুনানি। নদীপাড়ের ঘাসেরা হাত পা…

সব নদী গাছ ।। হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

কবিতা সব নদী গাছ ।। হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সবুজ দুপুরের পাশ দিয়ে যত নদী বয়ে গেছে কোনো পান্থশালা থেকে তাদের ডাক আসে নি বাসস্ট্যান্ড থেকে চেনা পথের বন্ধু হাতনাড়া দিয়ে ঝড়ের পথে কথা বলে নি যত উপনদী শাখানদী সব এক একটা গাছ বাড়ির পাশ দিয়ে এলেও এখন হাতের নাগালের বাইরে শাসকের ভোঁতা বইয়ে নদীর সংজ্ঞায় আগামীর সারা মন আর্দ্র হয়ে উঠতে দেখে পাঠ থেকে নদীনাম উঠে গেছে সব ভুলে গেল প্রতি পথে জল দিয়ে মুখ দেখেছিল সে জলের ভুল নামতায় মাটি তো মরুভূমি নদীপথে ছাড়া বৃষ্টির গান কোথায়? এখনও কেউ কেউ…