সমগ্র দেশ জুড়েই চলছে প্রতিবাদ। আজ এই লড়াইয়ের একশো পয়ত্রিশ তম দিন।এবার গোটা দেশের সাথে বালুরঘাটও যোগ দিল এই নদী রক্ষার লড়াইতে।“বালুরঘাট দিচ্ছে ডাক/ প্রধানমন্ত্রী শুনতি পাক” এবং ” নদী রক্ষার অক্ষর/ এক লক্ষ স্বাক্ষর” মূলত এই দুটি স্লোগানকে সামনে রেখে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রেস ক্লাব ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে এক লক্ষ সই সংগ্রহে নামলো নদী ও পরিবেশ সংগঠন দিশারী সংকল্প । স্বামী আত্মবোধানন্দ। ছাব্বিশ বছরের একটা তরতাজা তরুণ। হরিদ্বার মাতৃসদনের আশ্রমিক।গঙ্গা নদী রক্ষায় সমর্পন করেছেন নিজের প্রাণ।অবিরল ও নির্মল গঙ্গার দাবীতে আজ নিয়ে একশো পয়ত্রিশ দিনের অনশন। অথচ প্রধানমন্ত্রীর…
Tag: তুহিন শুভ্র মন্ডল
নদী ও নারী: এ যে নিজের সাথে নিজের কথোপকথন
হুমায়ুন কবীর এর ‘নদী ও নারী’ উপন্যাসের কথা মনে আছে? যা নদীর চরের মানুষের জীবনালেখ্য।কিংবা কবি প্রতীপ চন্দ্র বসুর ভালোবাসা নদী? যেখানে তিনি বলছেন নদীকে দেখিনি।জলের কিনারে গিয়ে দেখেছি তোমার মুখ।তোমাকে পাবার জন্য এভাবেই বারবার নদীকে দেখেছি। মহাকবি কালিদাস আবার নদীকে রমণীসদৃশ ব্যাখ্যা করেছেন।এসব থেকে একটা বিষয় বোঝা যায় যে নদী ও নারীর একটা মিল আছে।আত্মীয়তা আছে।আপনতা আছে।প্রকৃতিগত ভাবেই তারা সম্পৃক্ত ।এই ভাবনাটি হঠাৎ করেই মাথায় এলো । নদী যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় প্রবাহিত হয়।নারীও তো তাই।এক সংসার থেকে অন্য সংসারে তার চলন।এবং সে চলন ক্রমাগত।এসব কথা মনে…
আত্রেয়ীর পাড়ে নিয়মিত “নদীর কাছে এসো”
দক্ষিণ দিনাজপুর (কলকাতা, ভারত) থেকে>> গতকাল আবার জড়ো হয়েছিলাম আমরা। আত্রেয়ী নদীর পাড়ে। এই নিয়ে ষষ্ঠ বার।বিষয়? নদীর কাছে এসো। গতবছর চৈত্র সংক্রান্তির দিনে প্রথাগতভাবে নদীর কাছে এসো শুরু করেছিলাম। তারপর মাঝে একবার বিজয়া দশমীর পর বুনিয়াদপুরের টাঙ্গন নদীর পাড়ে এই কর্মসূচি নিয়েছিলাম। তারপর প্রতিমাসে একবার করে আত্রেয়ী নদীর পাড়ে নিয়মিত বসছি আমরা। গত ২৩ ডিসেম্বর-২০১৮ বাংলাদেশের ঢাকা থেকেও অধ্যাপকরা যোগ দিয়েছিলেন এই কর্মসূচিতে। আর গতমাসে এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রতীকি নদী সাফাই করেছে যার পরিপ্রেক্ষিতে বালুরঘাট পৌরসভা আত্রেয়ী সদরঘাটে স্হায়ী সাফাই কর্মী নিয়োগ করেছে।এটা একটা নদীর কাছে এসো কর্মসূচির…
আত্মবোধানন্দ-গঙ্গা রক্ষার এক জ্বলন্ত প্রতিবাদ
কি আশ্চর্য!! একটি মানুষ একশো নয় দিন ধরে শান্তিপূর্ণ উপায়ে প্রতিবাদ করছে। রাষ্ট্রের কানে আওয়াজ পৌঁছাচ্ছে না। একটা ছাব্বিশ বছরের তরুন অনশন করছে গঙ্গা নদী রক্ষার জন্য। রাষ্ট্র উপেক্ষা করছে। এর থেকে বড়ো লজ্জা আর কি হতে পারে? তথাকথিত মিডিয়া এই অনশনের কথা প্রচার করছে না। এটাও একটা চরম হতাশার দিক। অবিরল গঙ্গার দাবীতে কিছুদিন আগে অধ্যাপক জি.ডি.আগরওয়াল মৃত্যুবরণ (নাকি হত্যা?) করলেন। একজন এক নাগারে অনশন করছেন “অবিরল ও নির্মল গঙ্গা”-র দাবীতে। কোন্ মিডিয়া দেখাচ্ছে জানতে চাই। কেন করতে হচ্ছে এই অনশন? গঙ্গা দূষিত, দখলীকৃত। গঙ্গা মৃত্যুপথযাত্রী।অথচ কেন্দ্রীয় সরকার উদাসীন।…
আত্রেয়ী দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ লঞ্চ চলবে, এমন স্বপ্ন তো দেখাই যায়
হ্যাঁ।ঠিক তাই। এমন স্বপ্ন তো দেখাই যায়। নদীপথে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে একদিন লঞ্চ চলবে। যাত্রীবাহী এবং পন্যবাহী-এমন আশা তো করতেই পারি আমরা। যেখানে এই ব্যবস্থা একসময় ছিল এবং তার মাধ্যমে ব্যবসা বানিজ্য হতো পুরোদস্তুর। যদিও সেটা লঞ্চের মাধ্যমে হতো না।হতো বজরার মাধ্যমে।সেই পন্যবাহী ব্যবস্থাপনা যদি ফিরে আসে তাহলে তার থেকে ভালো কিছুই তো হতে পারে না। তার সঙ্গেই যাত্রীবাহী লঞ্চ যদি চলাচল করে ভারত-বাংলাদেশ আত্রেয়ী নদী পথে তাহলে সেটা কম রোমাঞ্চকর হবে না। সম্প্রতি লঞ্চের মাধ্যমে ঢাকা সদরঘাট থেকে পটুয়াখালি জলপথে যাওয়াতে সেই সম্ভাবনার কথাই মনে এলো। আমাদেরও তো…
কাশিয়া খাঁড়ি খনন-একটা উদাহরণ : এবার প্রশাসনিক উদ্যোগ প্রয়োজন
নদীবিজ্ঞানে একথা বলা হয় যে নদীব্যবস্থাপনা করতে গেলে খাঁড়ির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।খাঁড়ি ভালো থাকলে নদী ভালো থাকবে। কিন্ত দক্ষিন দিনাজপুরের ক্ষেত্রে আমরা অনেক সময়ই লক্ষ্য করছি দু একটি ব্যতিক্রম ছাড়া খাঁড়ি ব্যবস্থাপনাতে খুব বেশী কাজ এগোয়নি। এ প্রসঙ্গে প্রথমেই কাশিয়া খাঁড়ির নাম উল্লেখ করতে চাই। দক্ষিণ দিনাজপুরের দুটি প্রধান নদী আত্রেয়ী ও পুনর্ভবা। দুটি নদীকে সংযুক্ত করতো কাশিয়া খাঁড়ি। কিন্ত এই খাঁড়ি টিকে কেন বারবার অধিবাসীদের নিজেদের খনন করার উদ্যোগ নিতে হচ্ছে? সম্প্রতি গতবছরের মতো এবারও রাধানগর, গোপিনগর, ভাতশালা, বাদমুল্লুক কিসমত, গঙ্গাসাগর গ্রামের অধিবাসীরা নিজেরাই খাঁড়িকে খনন করলো। কিন্ত কেন? কারণ…
“নদী দিয়ে আগামীদিনে সমস্ত স্তরের মানুষকে জাগাতে চাই”
তুহিন শুভ্র মন্ডল পেশায় একজন শিক্ষক। ২০০৪ সাল থেকে তিনি নদী ও পরিবেশ রক্ষার কাজে যুক্ত আছেন। নদী ও পরিবেশ বিষয়ে দেশ বিদেশের বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স-এ অংশগ্রহণ করেছেন। ২০১০-১১ সালে নদী ও পরিবেশ রক্ষায় পেয়েছেন আনন্দলোক (আনন্দ বাজার) সেলাম বেঙ্গল পুরস্কার। ২০১৫ সালে পেয়েছেন পথিক সম্মান। আত্রেয়ী বাঁচাও আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ২০১৬ সালে পেয়েছেন কলকাতার ঋক শীর্ষ সম্মান। ২০১৭ সালে নদী ও পরিবেশ রক্ষায় পেয়েছেন বেস্ট এচিভারস অ্যাওয়ার্ড। সম্প্রতি তিনি কুয়াকাটায় অনুষ্ঠিত চতুর্থ আন্তর্জাতিক জল সম্মেলনে অংশ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশে আসেন। এসময় তার সাথে কথা বলেন রিভার বাংলা সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ। আমরা জানতে পেরেছি…
আত্রেয়ী কিংবা আত্রাই নদী সুরক্ষা: সমগ্র দক্ষিন এশিয়ায় একটা উদাহরণ হবে কি?
সম্প্রতি বাংলাদেশের শান্ত সমাহিত সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটাতে অনুষ্ঠিত হলো চতুর্থ ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার কনফারেন্স। যার পাশেই রয়েছে পটুয়াখালি পাখিমারা বাজার। এখানেই রয়েছে এশিয়ার একমাত্র ওয়াটার মিউজিয়াম। সে এক অন্য রকম ভাবনা। জলকে কেন্দ্র করেই যে একটা মিউজিয়াম গড়ে তোলা যায় তা দেখে বিস্মিত হতে হয়। সে নিয়ে লিখবো অন্য একদিন। ফিরে আসি আন্তর্জাতিক জল সম্মেলনের কথায়। ভারতবর্ষের একমাত্র প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত থেকে আমাদের প্রাণের আত্রেয়ী নদীকে আরো একবার নতুনভাবে উপস্থাপিত করলাম। নতুন বিষয়টি কি? আসলে অ্যাকশন এইড আয়োজিত এই জল সম্মেলনের বিষয়বস্তু ছিল “রিভার-এ লিভিং বিয়িং”। নদী যে জীবন্ত সত্ত্বা তাকেই কেন্দ্রে…
কুয়াকাটায় শুরু চতুর্থ আন্তর্জাতিক জল সম্মেলন
কুয়াকাটা থেকে প্রতিনিধি : নদীর প্রাণ আছে, নদী একটি জীবন্ত সত্ত্বা- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন হোটেল গ্রেভার ইনে এই বিষয়কে মুল থিম করে শুরু হল চতুর্থ আন্তর্জাতিক জল সম্মেলন। আয়োজক অ্যাকশন এইড নামে আন্তর্জাতিক সংগঠন। উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড.মুজিবর রহমান হাওলাদার, মহ: মতিউল ইসলাম চৌধুরী, পটুয়াখালির ডেপুটি কমিশনার, বাংলাদেশের পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেকটর ফারাহা কবিরসহ বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের নদী বিজ্ঞানী, নদী অধিকার কর্মী, আন্ত:সীমান্ত নদী আলোচনা উদ্যোক্তা প্রমুখ। জল, নদী, জীববৈচিত্র্য, বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়কে…
নদী চেতনা বাড়াতে নদীপাড়ের মেলা আয়োজক কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া উচিত
একথা বলতে ভাল লাগছে যে বিভিন্ন ভাবেই মানুষের মধ্যে নদী চেতনা বাড়ার নমুনা বা লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। নদীর কথা উঠে আসছে অনবরত সংবাদমাধ্যমে। সমগ্র পৃথিবীতেই নদীর কথা বলতে শুরু করেছেন নদীকর্মীরা। প্রশাসন কখনও কখনও বাধ্য হচ্ছে নদীকে কেন্দ্র করে উদ্যোগ গ্রহণ করতে। আবার এটাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে প্রশাসন নিজেরাও চেতনা বৃদ্ধির নমুনা প্রদর্শন করছে। কারণ কিছু ক্ষেত্রে নিজেরাই নদী সুরক্ষার কাজ করছে। নদীকে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হচ্ছে। এখানেই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে চাই।তা হল নদীর পাড়গুলিতে বিখ্যাত সব মেলা হয়।এবং তা হয় বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষের বিভিন্ন…
পুনর্ভবা-ব্রাহ্মনী নদী বাঁচাতেই হবে, এটাই সময়ের দাবী
পুনর্ভবা নদী গঙ্গারামপুরের প্রধান নদী। এই নদী একটি আন্ত:সীমান্ত নদী যা ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর ও তপন ব্লকের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এই নদী বর্তমানে ভয়াবহ সমস্যায় আক্রান্ত। নদীতে জল নেই, নদীটি দূষণের শিকার। আগে যা মাছ পাওয়া যেত তার পরিমাণ অনেক কমেছে। নদীর উপর নির্ভরকারী মৎস্যজীবী ও কৃষিজীবী ভয়ংকর সঙ্কটে। পুনর্ভবার মতো আরেকটি নদীও গঙ্গারামপুরের মানুষের জীবন ও সংস্কৃতিতে একসময় প্রভাব বিস্তার করেছিল, তা হলো ব্রাহ্মণী। কিন্ত বর্তমানে নদীটি হারিয়ে যেতে বসেছে। নদীটি দখল হয়ে গিয়েছে। তাই এই দুই নদীকে ঘিরে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ তৈরি…
আত্রেয়ী নদী সাফাই : ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা
শীতের রবিবার ছুটির দিনে যখন আর পাঁচজন আয়েসে বা ব্যক্তিগত কাজে সময় কাটাচ্ছিলেন তখনই আত্রেয়ী নদীর পারে জড়ো হয়েছিলেন একদল প্রবীণ। কবিতা পাঠ করলেন, গান গাইলেন আর শেষে করলেন নদী সাফাই। অমল বসু ,মৃনাল চক্রবর্তী, চঞ্চল শিকদার কনক, রঞ্জন তালুকদার ভক্ত, গোপাল ভট্টাচার্য, দিলীপ মজুমদার, নারু দত্ত দীপক মুখার্জিরা নদীর সমস্যা দূরীকরণে মতামত দিলেন। সুবীর চৌধুরী পাঠ করলেন নিজের লেখা কবিতা ‘নিজের মতো’। অমল কৃষ্ণ গোস্বামী এবং সুচিত্রা গোস্বামী গাইলেন নদীর গান। প্রবীণদের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিলেন সুপ্রিয় মোহান্ত, বিনায়ক কৃষ্ণ মজুমদার রিক গুহ। শেষে আত্রেয়ী নদীর সদরঘাটের অংশে প্রতীকী নদী…